সংবিধান সংস্কারে মার্কিনী, যোগ্য বাংলাদেশি একজনও নেই?

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশের একাত্তরের সংবিধান সংস্কারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও লেখক ড. আলী রীয়াজ। তার এই ভূমিকায় নিয়োগ এবং সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ঘিরে জনমনে ব্যাপক উদ্বেগ ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

ড. আলী রীয়াজ আমেরিকার ইলিনয় স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর। তিনি আটলান্টিক কাউন্সিলের অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো এবং আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের সভাপতিও। তবে তার মার্কিন নাগরিকত্ব এবং সংবিধান সংস্কারের মতো একটি অতিজনসংবেদনশীল ইস্যুতে নেতৃত্ব গ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। একইসঙ্গে তিনি সরকারঘোষিত ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’-এর সহ-সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন।

জনমনে সন্দেহ দানা বেঁধেছে, বিশেষ করে যখন ঐক্যমত্য কমিশন পাহাড়ে সক্রিয় একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী—ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর সঙ্গে বৈঠকে বসে। সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম এবং সশস্ত্র সহিংসতার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পরিচিত।

সোমবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি লেফটেন্যান্ট কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, “যেসব গোষ্ঠীর কথা বলা হচ্ছে, তারা একটি আত্মস্বীকৃত টেরোরিস্ট গ্রুপ যারা সংঘাতপূর্ণ কর্মকাণ্ডে জড়িত। তাদের শান্তি প্রক্রিয়ায় আনার বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিতে সমীচীন নয়।”

যদিও সেনাবাহিনীর সঙ্গে কমিশনের কোনো সরাসরি সংঘাত হয়নি বলে জানানো হয়েছে, তবুও জাতীয় নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বিষয়টি আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া এসেছে এমন এক সময়, যখন করিডোর ব্যবস্থাপনা, চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রণ এবং টেসলার স্টারলিংক প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে।

বিতর্কিত ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ড. আলী রীয়াজসহ কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা—সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। ইউপিডিএফের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন মাইকেল চাকমা, সাথে ছিলেন অমল ত্রিপুরা, জিকো ত্রিপুরা এবং সুনয়ন চাকমা। সরকারিভাবে বৈঠকের তথ্য প্রকাশ না করা হলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, “যারা অস্ত্রের রাজনীতি করে এবং গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, তাদের রাষ্ট্রীয় প্রক্রিয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে স্থান দেওয়া বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়াতে পারে।”

বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ড. আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন কমিশনের কার্যক্রম স্পষ্টতা ও জবাবদিহিতার অভাবে ভুগছে, যা একদিকে যেমন জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলছে, অন্যদিকে তেমনি সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়ার গ্রহণযোগ্যতা ও স্বচ্ছতা নিয়েও জনমনে সন্দেহ তৈরি করছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০