আরাকান আর্মিকে অস্ত্র দিতে ইউনূস গংয়ের তোড়জোড়, তুরস্কের অস্ত্র কারখানায় আশিক চৌধুরী

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা শিল্পে ‘আত্মনির্ভরতা’ অর্জনের নামে তুরস্ক সফর করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. আশিক চৌধুরী। সরকারি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে তিনি তুরস্কের রাষ্ট্রীয় অস্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এমকেইর-এর বিভিন্ন অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। সফরে কামানের গোলা, বিস্ফোরক ও হালকা অস্ত্র উৎপাদনের ধাপসমূহ ঘুরে দেখানো হয়।

সরকারি এই সফর যৌথ উৎপাদন, প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং স্থানীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠিত হলেও, সূত্রগুলো দাবি করছে সফরের পেছনে রয়েছে ভিন্ন উদ্দেশ্য—যা একটি বিপজ্জনক আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের দিকে ইঙ্গিত করছে।

একটি ছবিতে দেখা যায়, আশিক চৌধুরী তুরস্কে অস্ত্র হাতে পোজ দিচ্ছেন, অথচ এই সরকারি সফরে তার সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো উচ্চপদস্থ সামরিক প্রতিনিধি ছিলেন না। এটি কৌতূহল ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে— সরকারি প্রতিরক্ষা উদ্যোগে কেন সামরিক বাহিনীকে পাশ কাটিয়ে চলা হলো?

বিশ্ব রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের মতে, এই সফর কেবল একটি বিনিয়োগ উদ্যোগ নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের একটি বৃহৎ ভূ-কৌশলগত অপারেশনের অংশ, যার কেন্দ্রে রয়েছেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অভিযোগ রয়েছে, ইউনূস একটি ‘প্রক্সি সরকার’-এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্টের অর্থায়নে তুরস্ক থেকে অস্ত্র এনে তা মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির কাছে সরবরাহ করতে চাইছে।

সূত্র জানায়, এই প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে জড়িত অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। এদের মধ্যে কয়েকজন সম্প্রতি তুরস্কে গোপন সামরিক বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বলেও নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।

তথাকথিত ‘মানবিক করিডোর’ প্রতিষ্ঠার নামে এই গোষ্ঠী আসলে রাখাইন রাজ্যে অস্ত্র পাচারের পথ তৈরি করছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই করিডোরের আড়ালে তৈরি করা হচ্ছে একটি সরবরাহ চেইন, যার মাধ্যমে আরাকান আর্মিকে অস্ত্র ও ড্রোন সরবরাহ করা হবে— তাতে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা করছে যুক্তরাষ্ট্র, আর কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে তুরস্ক।

ষড়যন্ত্রে পিছিয়ে নেই জামায়াতও: তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থার টাকায় জামায়াতের মগবাজার অফিস সাজানো হয়েছে। আমেরিকার ইশারায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েমও অস্ত্র কারখানা পরিদর্শন করেছেন।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, পাহাড় অশান্ত করতে জামায়াতকে সাথে নিয়ে এই গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এর অগ্রভাগে রয়েছে শিবিরের ক্যাডাররা। শিবিরের ক্যাডাররা কেমন অস্ত্র পাবে সেটি দেখে এসেছেন সাদিক কায়েম।

সূত্র বলছে, সম্প্রতি পাকিস্তান থেকে আসা একটি কার্গোতে তুরস্কে উৎপাদিত অস্ত্র ছিল, যার চূড়ান্ত গন্তব্য ছিল মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে অবগত ছিলেন ড. ইউনূস ও তার আস্থাভাজন উপদেষ্টারা। বিশেষ করে মাহফুজ আলমের তুরস্ক সফর, এবং সেখানকার সামরিক বৈঠকগুলো এই পরিকল্পনার বাস্তবতা স্পষ্ট করছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই করিডোর বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান জানানো হয়েছে। সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান একাধিক বৈঠকে বলেন, রাখাইনে করিডোর বাস্তবায়ন সেনাবাহিনীর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাখাইনের কিয়াউকফিউ গভীর সমুদ্রবন্দর চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি চীনের কুনমিং থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত সংযোগ তৈরি করে, যা মালাক্কা প্রণালীর বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র এই প্রকল্পে বাধা দিতেই রাখাইন রাজ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি এবং আরাকান আর্মিকে ব্যবহার করছে। একই সঙ্গে ব্যবহার করছে ইউনূস নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীকে।

সুশীল সমাজের অনেকে আশঙ্কা করছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র, যার মাধ্যমে তারা বঙ্গোপসাগরের নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখতে পারবে। এই প্রেক্ষাপটে আরাকান আর্মিকে শক্তিশালী করা, করিডোর স্থাপন, বন্দরের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ—সবই একটি বৃহৎ ভূ-রাজনৈতিক পরিকল্পনার অংশ।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০