ড: আজিজুল আম্বিয়া
বাংলাদেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আট মাসে সংঘটিত ঘটনাবলী সুশীল সমাজের মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, নাগরিক সমাজের কর্মী এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতি সমালোচনা জানিয়েছে।সুশীল সমাজের ভূমিকা হিসেবে বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিরা সরকারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ, প্রতিবেদন প্রকাশ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা সরকারের প্রতি ন্যায়বিচার, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন এবং মানবাধিকার রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে।উল্লেখযোগ্যভাবে, জাতীয় নাগরিক কমিটি (JNC) এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতি সমালোচনা জানিয়ে গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য দাবি তুলেছে। তারা “জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র” প্রণয়নের মাধ্যমে জনগণের আকাঙ্ক্ষা এবং নিহতদের স্মৃতিকে সম্মানিত করার প্রস্তাব দিয়েছে।Wikipedia তবে, কিছু সংগঠন সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছে, যা সুশীল সমাজের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে। এমনকি কিছু সংগঠনের সদস্যদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগও উঠেছে, যা সরকারের প্রতি আস্থা সংকটে পরিণত হয়েছে।সর্বোপরি, সুশীল সমাজের ভূমিকা সরকারের কার্যক্রমের প্রতি সমালোচনা, গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য দাবি এবং মানবাধিকার রক্ষার আহ্বানে সীমাবদ্ধ। তাদের কর্মকাণ্ড সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করতে পারে, তবে সরকারের প্রতিক্রিয়া এবং ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ সুশীল সমাজের ভূমিকার সফলতা নির্ধারণ করবে।নিচে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে দেশি ও বিদেশি গণমাধ্যমে সম্প্রতি প্রকাশিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন নিচে তুলে ধরা হলোঃ জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (OHCHR) ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনী পরিকল্পিতভাবে সহিংসতা চালিয়েছে। এই সময়ে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হয়েছেন, যা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। বিবিসি, আল জাজিরা, রয়টার্স, ফ্রান্স২৪ সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এই প্রতিবেদন নিয়ে খবর প্রকাশ করে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ২০২৪ সালের আগস্টে এক মানববন্ধনে জানায় যে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকার-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে। এই সময়ে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ও সাধারণ নাগরিক নিহত হন, এবং প্রায় ২ লাখ ১৩ হাজারের বেশি লোকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। টিআইবি এই ঘটনাগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে। দৈনিক ইনকিলাব । ২০২৪ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ফেডারেশন (FIDH) জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৫তম অধিবেশনে একটি মৌখিক বিবৃতিতে বাংলাদেশে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন, এবং এলজিবিটিআইকিউ সম্প্রদায়ের অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। তারা সরকারের দায়মুক্তি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানায়। দৈনিক ইনকিলাব । ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে চট্টগ্রামে ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে সংঘর্ষে একজন আইনজীবী নিহত হন এবং ২৫ জন আহত হন। এই ঘটনা দেশের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার একটি উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এছাড়া, সংখ্যালঘু উপাসনালয়ে হামলা, মন্দির ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে। Home ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে ৪৬ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হন, যার মধ্যে ১৭ জন আহত, ৯ জন অপমানিত এবং ৫ জন গ্রেপ্তার হন। ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। Home বাংলাদেশে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর সারা দেশে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এই সময় বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটে। নিচে এই সময়ের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনার বিবরণ দেওয়া হলো: ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ধানমন্ডির ৫ নম্বরে শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত বাসভবন সুধা সদনে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়।গুলশানে শেখ রেহানার বাড়িতেও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।পুলিশ সদর দপ্তর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবন এবং বিভিন্ন থানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। Prothomalo+4Prothomalo+4bd-journal.com+4bd-journal.com+1Prothomalo+1bd-journal.com+2দৈনিক ইনকিলাব+2Prothomalo+2 ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বাড়িতে হামলা করা হয়। নাটোরের সিংড়ায় জুনাইদ আহমেদ পলকের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।সিলেটের শাপলাবাগে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরীর বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।খাগড়াছড়িতে সাবেক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার বাসভবনেও হামলার ঘটনা ঘটে।Jagonews24+2Prothomalo+2bd-journal.com+2 ধানমন্ডির ৩/এ-তে আওয়ামী লীগের সভাপতির কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়।বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি ভাঙচুর করা হয়। Prothomalo+3bd-journal.com+3Prothomalo+3 যাত্রাবাড়ী, বংশাল, বাড্ডা ও উত্তরা থানায় পুলিশের গুলিতে ৫০ জন নিহত হন। উত্তরায় পুলিশের গুলিতে আরও ১০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।

আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। দৈনিক ইনকিলাবJagonews24 বাংলাদেশে ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী সহিংসতার সময় পুলিশের বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং হত্যার ঘটনা দেশি ও বিদেশি গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনার বিবরণ তুলে ধরা হলোঃ ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সহিংসতার মধ্যে অন্তত ৪৪ জন পুলিশ সদস্য নিহত হন। এই আন্দোলনের ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ঘটে।২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দিন, সারা দেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এই দিনে ২৫ জন পুলিশ সদস্য নিহত হন। এই সহিংসতা রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিফলন ছিল। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে যে, ২০২৪ সালের গ্রীষ্মে বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন দমন করতে গিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হন। এই ঘটনাগুলোকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হতে পারে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঢাকায় পুলিশ নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায়, যা অন্তত ২০ জনের প্রাণহানি ঘটায়। এই ভিডিওগুলো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দ্বারা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। The Guardian বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত নারী ও কন্যাশিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার চিত্র উদ্বেগজনক। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ধর্ষণ, গ্যাং রেপ, হত্যা ও আত্মহত্যার মতো ঘটনা। নিচে এ সংক্রান্ত কিছু পরিসংখ্যান ও তথ্য তুলে ধরা হলো: ধর্ষণের ঘটনা: ২০২৪ সালের প্রথম ১০ মাসে অন্তত ৩৯৭ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। এর মধ্যে ১১৫টি ছিল গ্যাং রেপ। কন্যাশিশুদের ধর্ষণ: জানুয়ারি থেকে আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত ২২৪ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়। The Financial Express মোট ধর্ষণ: এই সময়ে মোট ৫০৫টি ধর্ষণের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৬১ জন ভুক্তভোগী ছিলেন ১৮ বছরের নিচে। ধর্ষণের পর হত্যা: ৩৪ জন নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়।
আত্মহত্যা: ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের কারণে ১৩৩ জন কন্যাশিশু আত্মহত্যা করে। স্বামী কর্তৃক সহিংসতা: বাংলাদেশে ৭০% নারী কোনো না কোনো সময়ে স্বামী কর্তৃক শারীরিক, যৌন, মানসিক বা অর্থনৈতিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। UNFPA-Bangladesh সাম্প্রতিক সহিংসতা: ২০২৪ সালে ৪১% নারী পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন, যা ২০১৫ সালের তুলনায় ১৪ শতাংশ পয়েন্ট কম। UNFPA-Bangladesh
মাগুরা শিশু ধর্ষণ মামলা (২০২৫): মার্চ ২০২৫ সালে মাগুরা জেলায় ৮ বছর বয়সী এক কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যায়। এই ঘটনা দেশব্যাপী ক্ষোভ ও প্রতিবাদের সৃষ্টি করে। Wikipedia বাংলাদেশে ২০২৪-২০২৫ সালে চাঁদাবাজির ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং স্থানীয় প্রভাবশালীরা এই অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনার বিবরণ দেওয়া হলো: সাবেক সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী: ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। Prothomalo পাহাড়তলী থানার ওসি (তদন্ত) ও আরও ৭ জন: চাঁদাবাজির অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। samakal.com
ধানমন্ডি, ঢাকা: ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে গাড়ি থেকে চাঁদা আদায়ের সময় এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। Prothomalo+2TBS News+2samakal.com+2 নরসিংদী: চাঁদা না পেয়ে শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। Prothomalo সাভার: চাঁদা না দেওয়ায় গুলি ছুড়ে দুটি ট্রলার ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। Prothomalo ত্রিপুরা, বান্দরবান ও রাঙামাটি: এই তিন পার্বত্য জেলায় বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। চাঁদা না দিলে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। YouTube
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, বাড়ি ভাঙচুর, হত্যা ও নির্যাতনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনার বিবরণ তুলে ধরা হলো: ধানমন্ডি ৩২ নম্বর: ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে। Social News XYZ খুলনা ও অন্যান্য জেলা: দেশের প্রায় দুই ডজন জেলায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ও বঙ্গবন্ধুর মুরাল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ittefaq.com.bd ২৯ জন নেতাকর্মীর মৃত্যু: শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সহিংসতায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারের ২৯ জন সদস্য নিহত হন। Business Finance News India কুমিল্লা ও নাটোরে সহিংসতা: কুমিল্লায় এক প্রাক্তন কাউন্সিলরের বাড়িতে আগুন দিয়ে ৬ জনকে হত্যা করা হয়। নাটোরে এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাড়িতে অগ্নিসংযোগে ৪ জন নিহত হন। ৪০ জন গ্রেপ্তার: আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ittefaq.com.bd+1Log in or sign up to view+1 বাংলাদেশে ২০২৪-২০২৫ সালে কিশোর অপরাধ ও হত্যার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মাদকাসক্তি, দারিদ্র্য, পারিবারিক অবহেলা, শিক্ষার অভাব, সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, প্রযুক্তির অপব্যবহার এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা এসব অপরাধ বৃদ্ধির পেছনে প্রধান কারণ।alokitobangladesh+1Prothomalo+1 রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার হরিণবাড়িয়া গ্রামে বালু উত্তোলন নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে ১৭ বছর বয়সী কিশোর নিরব শেখকে হত্যা করা হয়। Sun News 24×7 নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় ১৭ বছর বয়সী কিশোর নয়ন শিকদার নিহত হয়। alokitobangladesh+1Kalchitra+1 কিশোর গ্যাং ও অপরাধ: ঢাকায় ৫২টি সক্রিয় কিশোর গ্যাং গ্রুপ রয়েছে, যার সদস্য সংখ্যা প্রায় ৭০০ জন। এই গ্যাংগুলো এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, মাদক চোরাচালান, অপহরণ, যৌন হয়রানি, চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি থেকে শুরু করে গুম-খুনের মতো ঘৃণ্য অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। alokitobangladesh
কারণ ও প্রতিকার: কিশোর অপরাধের প্রধান কারণ হিসেবে দারিদ্র্য, স্বাস্থ্য সুরক্ষার অভাব, পারিবারিক সমস্যা, নিম্নমানের জীবনযাপনের পদ্ধতি, অপর্যাপ্ত শিক্ষাব্যবস্থা এবং প্রযুক্তির অপব্যবহার চিহ্নিত করা হয়েছে। Prothomalo+1alokitobangladesh+1 এই সমস্যা সমাধানে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ, রাষ্ট্র ও সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের সক্রিয় ভূমিকা, কিশোরদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, এবং পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধের উন্নয়ন প্রয়োজন।alokitobangladesh ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও রাজনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, যা দলটির রাজনীতিতে পুনঃপ্রবেশের সম্ভাবনাকে জটিল করে তুলেছে। ২০২৫ সালের মার্চে, বাংলাদেশের পুলিশ শেখ হাসিনাসহ ৭২ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে, যেখানে তাদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাতের জন্য গোপন ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়। এই মামলায় শেখ হাসিনাকে “সিভিল ওয়ার” বা গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে সরকারকে উৎখাতের পরিকল্পনার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। India Today এছাড়া, বাংলাদেশ সরকারের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এই পদক্ষেপগুলো আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে চলমান আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। kashmirreader.com তবে, ড. ইউনুস সরকারের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানানো হয়েছে। সরকারের মুখপাত্র বলেছেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই, তবে তাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকলে তাদের বিচার হবে।” এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এসব পদক্ষেপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে অভিযোগ করেছেন। তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (ICC) ড. ইউনুস ও তার সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। The Economic Times সর্বোপরি, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ ও রাজনৈতিক চাপের কারণে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পুনঃপ্রবেশের পথ কঠিন হয়ে উঠেছে। তবে, সরকার দলটির নিষেধাজ্ঞার কোনো পরিকল্পনা না থাকলেও, আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ভূমিকা নির্ভর করবে তাদের বিরুদ্ধে চলমান আইনি প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে সংঘটিত ঘটনাবলী সুশীল সমাজের মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, নাগরিক সমাজের কর্মী এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতি সমালোচনা জানিয়েছে।সুশীল সমাজের ভূমিকা হিসেবে বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিরা সরকারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ, প্রতিবেদন প্রকাশ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা সরকারের প্রতি ন্যায়বিচার, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন এবং মানবাধিকার রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে।উল্লেখযোগ্যভাবে, জাতীয় নাগরিক কমিটি (JNC) এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতি সমালোচনা জানিয়ে গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য দাবি তুলেছে। তারা “জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র” প্রণয়নের মাধ্যমে জনগণের আকাঙ্ক্ষা এবং নিহতদের স্মৃতিকে সম্মানিত করার প্রস্তাব দিয়েছে।তবে, কিছু সংগঠন সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছে, যা সুশীল সমাজের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে। এমনকি কিছু সংগঠনের সদস্যদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগও উঠেছে, যা সরকারের প্রতি আস্থা সংকটে পরিণত হয়েছে।সর্বোপরি, সুশীল সমাজের ভূমিকা সরকারের কার্যক্রমের প্রতি সমালোচনা, গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য দাবি এবং মানবাধিকার রক্ষার আহ্বানে সীমাবদ্ধ। তাদের কর্মকাণ্ড সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করতে পারে, তবে সরকারের প্রতিক্রিয়া এবং ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ সুশীল সমাজের ভূমিকার সফলতা নির্ধারণ করবে।লেখকঃ ড.আজিজুল আম্বিয়া , কলাম লেখক ও গবেষক । email: azizu;l.ambya@yahoo.co.uk