সংঘাতের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সম্প্রীতি বাংলাদেশ

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
বিজ্ঞপ্তি- 

সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত আলোচনাসভায় বিশিষ্টজনরা বলেছেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সারা দেশে যে সহিংসতায় প্রাণহানি ঘটেছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করা হয়েছে, এটা আমরা চাই না। আর সহিংসতা নয়, দেশে শান্তি চাই। তাই সন্ত্রাস-সহিংসতা ও সংঘাতের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

শনিবার (৩ আগস্ট) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সন্ত্রাস-সংঘাত-সহিংসতা নয়, চাই শান্তি-সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওই মতবিনিময়সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক নাট্যজন পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।

সংগঠনের সদস্যসচিব মামুন আল মাহতাবের সঞ্চালনায় আলোচনাসভায় বক্তৃতা করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, ঢাকার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারের প্রধান ভান্তে বুদ্ধানন্দ মহাথেরো, খ্রিষ্টীয় ধর্মযাজক রেভারেন্ড মার্টিন অধিকারী, শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. ইউসুফ রাজ, বঙ্গবন্ধু গবেষক মেজর (অব.) আফিজুর রহমান প্রমুখ। 

সভায় সাংবাদিক আলী হাবিব ও ফরহাদ মাহমুদের লেখা মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘এই যে এত সহিংসতা, সংঘাত, নৈরাজ্য, মৃত্যু- এর দায় কে নেবে? দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কি দায় নেই? রাজনীতি কেন এত দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেবে? এতে লোকসানটা কার?

কোটা সংস্কার আন্দোলনের বাতাবরণে নতুন প্রজন্মকে রাজনীতিবিমুখ করে তোলা হচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় প্রবন্ধে। বলা হয়, কোটা আন্দোলনের মধ্যে অপরাজনীতি ঢুকিয়ে দেশের একটি প্রজন্মকে রাজনীতির প্রতি তো বটেই, রাজনীতিকদের প্রতিও বীতশ্রদ্ধ করে তোলা হয়েছে।

ফলে আগামী প্রজন্ম রাজনীতিবিমুখ হবে। মেধাবী একটি প্রজন্ম রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। রাজনীতিতে সামাজিক দুষ্কৃতিরা নিজেদের স্থায়ী আসন করে নেবে। রাজনীতি চলে যাবে নষ্টদের দখলে।
বুদ্ধিবৃত্তির বদলে পেশিশক্তি স্থায়ী হবে। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জে. (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, ‘আমরা যা দেখলাম, তা দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। নতুন প্রজন্ম, তাদের পূর্বপুরুষদের যে ভূমিকাই থাকুক না কেন? তাদের তো দেশটাকে ভালোবাসার কথা ছিল। কোনোভাবেই প্রত্যাশা করি না, নতুন প্রজন্ম বলবে, তুমি কে, আমি কে রাজাকার, রাজাকার। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে যে সহিংসতা হয়েছে, প্রাণহানি ঘটেছে, আমার কোনোভাবেই কামনা করি না।

রাষ্ট্রীয় সম্পদ কোনো দল বা ব্যক্তির নয়। তাহলে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করে কিভাবে? অনেক শ্রদ্ধাভাজন কিভাবে বললেন, হেলিকপ্টার থেকে চারতলা বাসায় গুলি করা হয়েছে। যেটি কোনোভাবে সম্ভব নয়। এভাবে আসলে দেশ-বিদেশে আন্দোলনকে উসকে দেওয়া হচ্ছে। কোনো অবস্থাতেই ভায়োলেন্স করা যাবে না, তাহলে সত্যের মৃত্যু ঘটবে। কোনো ধর্মেই অশান্তির কথা বলা হয়নি। অশান্তি ও সংঘাত করে দেশটাকে কোথায় নিয়ে যেতে চায় তারা। এভাবে একটি রাষ্ট্র চলতে পারে না। তাহলে রাষ্ট্রীয় কাঠামো থাকার কি দরকার আছে? দেশের সম্পদ রক্ষা করে আন্দোলন করেন।’ 

অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার বলেন, ‘আমি সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি একজন শিক্ষার্থীও যেন কারাগারে না থাকে। যারা সহিংসতায় নিহত হয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দিতে হবে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ যে ধ্বংস করেছে, এই প্রতিষ্ঠানেই কিন্তু আমাদের ছাত্রছাত্রীরা চাকরি করত। এ ছাড়া রয়েছে বিভিন্ন ধরনের গুজব। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আহ্বান, শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠান।’

সাংবাদিক বাসুদেব ধর বলেন, ‘আজকে আমাদের মিলিত হয়ে আবার মুক্তিযুদ্ধের পরীক্ষা দিতে হয়েছে। এখন এমনি একটি পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, জামায়াত কিছু কিছু মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে গেছে। এই তাণ্ডবের মাধ্যমে বুঝতে পারছেন, তরুণ প্রজন্ম জানে না, মুক্তিযুদ্ধের সময় কী হয়েছিল। আমরা এই বাংলাদেশ চাইনি।’

ভান্তে বুদ্ধানন্দ মহাথেরো বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপ্রিয়। কিন্তু সেই বাংলাদেশে একটি শ্রেণি বিশেষ উদ্দেশ্যে অশান্তি করছে। তাদের শান্তির পথে ফেরাতে হবে। মানুষ যেন সত্যের পথে থাকে। দেশে শান্তি ফিরে আসুক, এমনটাই প্রত্যাশা করি।’

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০