আওয়ামী লীগ করা যাবে না !

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আফসানা কিশোর লোচন-


আমাদের প্রজন্ম এক অদ্ভূত কম্বিনেশনের অধিকারী-আমরা জিয়ার শাসন দেখেছি কিন্তু মনে নেই,  বয়স অতি অল্প থাকাতে;তার শাসন নিয়ে শুনেছি।স্কুলে উঠে জিয়ার হাতে অকারণে ফাঁসী প্রাপ্ত এয়ারফোর্সের অফিসারদের সন্তানদের দুর্দশা দেখেছি।

আমরা দেখেছি এরশাদের অজগরীয় আমল।১৯৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন দেখে আমরা বড় হয়েছি।স্কুলের ব্যাগ নিয়ে সকালে বের হয়ে জেনেছি সেদিন কার্ফিউ।

হাওয়া ভবনের দুনির্বার আগ্রাসন যেমন আমাদের চোখে লেগে আছে তেমনি আছে জনতারমঞ্চের রোমাঞ্চকর আন্দোলন দেখার অভিজ্ঞতা।নব্বই,ছিয়ানব্বই,২০০৭-০৮ কি আমরা দেখিনি!
দেখেছি ২০০১ এর তান্ডব।

ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস করার সময় বাইরে তাকিয়ে দেখেছি ককটেল বিস্ফোরণে কারও নাড়িভুড়ি বের হয়ে গিয়েছে।তারপর আবার বোর্ডের দিকে ফিরে ক্লাস শুরু করেছি। শামসুন্নাহার হল কান্ডে বৃষ্টিতে ভিজেছি,ছাত্রদলের ছেলেরা কিরিচ হাতে দৌড়ানি দিয়েছে অনশনরত আমাদের।

২০১৩ এর গণজাগরণ মঞ্চেও আমাদের অবস্থান ছিল একদম পরিষ্কার।

যে কোন আন্দোলনে আমরা বাতাস বুঝি।হয়তো অনেক শার্পভাবে বুঝি না সক্রিয় রাজনীতি না করার কারণে কিন্তু কার কি এজেন্ডা,কার দোকানে কি বিক্রি হয় তা আমরা জানি।কে কার এজেন্ট তাও অনুমান করতে পারি।

ডিপ স্টেট পলিটিক্স,জিও পলিটিক্স,আঞ্চলিক রাজনীতি আমাদের পাকা চুলে একটু আধটু ধরা পড়ে।

আমাদের চিরজীবনের ভুল হচ্ছে আমরা ভাবি জামায়াত-শিবির বুঝি একদিন আমাদের মতোই বাংলাদেশপ্রেমী হয়ে যাবে,আমাদের বাংলাদেশকে তারা মেনে নিবে।এবং যে কোন ইস্যুতে আগাপাশতলা না ভেবে আমরা নিরপেক্ষতার এক আত্মঘাতী খেলা খেলতে যাই।

বিএনপি করা যাবে,জামায়াত-শিবির করা যাবে,বামদল,জাসদ,বাসদ,ফেডারেশন,রাষ্ট্র সংস্কার,রাষ্ট্রচিন্তা,হিজবুত তাহরী,ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন সব করা যাবে-শুধু লীগ করা খুব লজ্জার,দৈন্যের–এ হচ্ছে আমাদের মনস্তত্ত্ব।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে যত মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে ১১জন স্টুডেন্ট।বাকীদের পরিচয় হয়তো জানা যাবে।মীর মুগ্ধকে কে এসাসিন করলো জানা প্রয়োজন।ফাইয়াজকে কিভাবে মা*রা সম্ভব ‘সজলচোখে’ এ প্রশ্ন সর্বদা জাগরূক থাকবে।

কে কি উদ্দেশ্যে ব্র‍্যাক সহ অন্য প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টদের রাস্তায় আসার জন্যে ইমেইল দিলো জানা প্রয়োজন।আমার চল্লিশোর্ধ্ব বয়সে কোনদিন প্রাইভেট ইউনির কোন ছেলেমেয়েকে বিসিএস দিতে শুনেছি মনে পড়ে না।

সরকার পতনের আন্দোলন,এন্টি এস্টাবলিশমেন্ট বিরোধী বিপ্লব দেশে দেশেই চলে-সুশাসনের অনুপস্থিতি,জনমানসের রোষ এসব প্রকাশের জন্য বিক্ষোভ স্বাভাবিক ব্যাপার।শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকাতে আমার দেশে সেই বিক্ষোভ প্রকাশের ধরন একদম ইমব্যালেন্সড।

সরকারের কোন নীতির বিপরীতে নিজের অবস্থান জানানোর জন্যে কেউ মেট্রোরেল পোড়ায় না,ডাটা সেন্টার,টিভি সেন্টার,বাস,সেতু ভবন এসব ধ্বংসস্তুপে পরিণত করে না।টোল প্লাজা গুঁড়িয়ে দেয় না।এসব কারা করে আসছে বছরের পর বছর সবাই জানে।

২৪ কোটি মানুষের দেশে গরীবের কোন কিছুই কাউন্ট হয় না,তাদের জীবনের কোন মূল্য নেই।মধ্যবিত্তের সন্তানের মৃতদেহ তাই খুব প্রয়োজন যে কোন মবকে উস্কানোর জন্য।

রাজনীতিতে ভালো-মন্দ বলে কিছু নেই।২০১৩ তে শিবিরের যে পরাজয় হয়েছিলো তা তারা ভুলবে কখনো মনে করি না।সুযোগ পেলেই শিবিরের আসল নায়েবে আমির ট্রাক ভাইয়ার নেতৃত্বে এরা ঝাঁপিয়ে পড়বে এ আমাদের জানা কথা।

হঠকারীতা,অদূরদর্শীতা,লাগামহীন চামড়ার মুখ,দম্ভ,জিদ,অহংকার সুবুদ্ধির দ্বার রুদ্ধ করলে উপযুক্ত পরামর্শদাতার প্রয়োজন হয়।

প্রবাসে বসে যারা অবিরাম উস্কানি দিচ্ছে দেশে গৃহযুদ্ধ বাঁধানোর অভিলাষে তাদের প্রত্যেককে পরিবারসহ দেশে এনে আন্দোলনের নেতৃত্বে বসিয়ে দেয়া সময়ের দাবী মাত্র।তাদের সন্তানেরা আছে লন্ডনে,অস্ট্রেলিয়াতে,ফ্রান্সসহ অন্যান্য দেশে অথচ মারা যাচ্ছে মুগ্ধরা।

দলের,সরকারের যারা অবিরাম সুবিধাভোগী তারা এই সংকটে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সেই ওয়ান ইলেভেনের সংস্কারপন্থীদের মতোই।

কোন ভুল হয়ে গেলে তা যদি জীবন-মরণের হয়ে যায় তখন ড্যামেজ কন্ট্রোলে সহায়তা করতে হয়।প্রশ্ন করার সময় বহু পাওয়া যাবে।আগে এই সংকট থেকে বের হতে হবে।

দু’চোখ দিয়ে দেখে যাচ্ছি অবিরত;আমাদের অনলাইন অফলাইনের লড়াই কোনকালেই সহজ ছিল না।এখনো নেই।একদিন এসব দিন শেষ হবে-সেই পর্যন্ত মস্তিষ্ক নামক হার্ডডিস্কে সাজিয়ে রাখছি অনেক বেদনা ও ব্যথার স্মৃতি।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১