এই মেধাবীরাই গড়বে স্মার্ট বাংলাদেশ !
জুয়েল রাজ- পহেলা জুলাই থেকে চলছে কোটা বিরোধী অবরোধ , বলাযায় সারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে এই আন্দোলন । ২০১৮সালে কোটা পদ্ধতি বাতিল করার আগ পর্যন্ত সরকারিচাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্যসংরক্ষণ করা হতো। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্যছিল ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ কোটা। এই কোটাসংস্কার করে ১০ শতাংশ করার দাবিতে২০১৮ সালেআন্দোলনে নামে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকারসংরক্ষণ পরিষদ। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, “ছাত্ররাকোটা ব্যবস্থা চায় না। তারা আন্দোলন করেছে। ফলে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এনিয়ে আর আলোচনাকরার বা হা-হুতাশ করার কিছু নেই। আমি বলে দিয়েছিথাকবে না।” সেই থাকবে নাকি কীভাবে কার্যকর করা যায়, সেজন্যক্যাবিনেট সেক্রেটারিকে দিয়ে একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে, যাতে এটা বাস্তবায়ন করা যায়। এরপর ওই বছরের ৪অক্টোবর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে কোটা ব্যবস্থা পুরোপুরিবাতিল করে দেয় সরকার। তবে ২০২১ সালে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হাইকোর্টেরিট করলে গত ৫ জুন এক রায়ের মাধ্যমে আবারও ফিরেআসে কোটা। এরপর কোটা বাতিলে গত ১ জুলাইআন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। কোটা নিয়ে আন্দোলনেবারবার আলোচনায় আসে মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিষয়টি। এই৩০ শতাংশ কোটা নিয়েই মূলত যত মাথাব্যাথা বা সমস্যা।মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে নানা প্রসঙ্গ , দ্বিমত , আলোচনাআছে । মুক্তিযোদ্ধা কোটা ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু চালুকরেছিলেন। পরে নানা সময় এর কলেবর বা সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে। মুক্তিযোদ্ধারা যারা ৭১র মহান মুক্তিযুদ্ধেঅংশ নিয়েছিলেন তাঁরা কি কোটার জন্য কিংবা ভাতার জন্যঅথবা রাষ্ট্রীয় সুবিধা ভোগের জন্য যুদ্ধে গিয়েছিলেন? নিশ্চয় নয়। তাঁরা জানতেনই না দেশ কবে স্বাধীন হবে,স্বাধীনদেশে আদৌ ফিরতে পারবেন কী না, অথবা জীবিত থাকবেননা কখন শহীদ হবেন তার কিছুই তাঁদের জানা ছিল না।শুধুমাত্র একটি মুক্ত স্বাধীন দেশের জন্য তাঁরা জীবন বাজীরেখেছিলেন। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ সেই ঋণমুক্তির দায় থেকেই , আমার মত এবং ধারণা মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সন্তানদের জন্যএই কোটা পদ্ধতি চালু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা শহুরে জীবনে অভ্যস্থ , প্রাইভেটবিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা অর্জন করা শিক্ষার্থীরা জানেন না । প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটা ছেলে মেধা দিয়েই লিখিত পরীক্ষায়পাশ করে যদি মুক্তিযোদ্ধা পোষ্য কোটায় একটা চাকরি পায়তাতে আপনাদের মেনে নিতে সমস্যা কোথায় ? আমরা যারাপ্রত্যন্ত এলাকা থেকে উঠে এসেছি দেখেছি দরিদ্র মুক্তিযুদ্ধাদের,তাঁদের সন্তানদের কি অমানবিক পরিশ্রম করে পড়ালেখাকরিয়েছেন , দিনশেষে এদের সন্তানরা যখন দ্বিতীয়, তৃতীয়শ্রেণীর চাকরীতে নিয়োগ পেয়েছে , মানুষগুলোর আনন্দ এবংসুখ দেখেছি। সংবাদপত্রে তো প্রায়ই দেখি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায়কোন কোন ইউনিটে ১ শতাংশ দুই শতাংশ উত্তীর্ণ হয়েছেন।যোগ্য প্রার্থীর অভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল , এসব তোগণমাধ্যমে প্রকাশিত। সর্বশষ প্রশ্নপত্র ফাঁসের যে মহাউৎবেরসংবাদ দেখলাম , এরপর তো কোন কর্মকর্তা দেখলেই মনেপ্রথম প্রশ্নটাই আসবে প্রকৃত মেধাবী না ফাঁস প্রশ্নের মেধাবী ?