মবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি সেনাবাহিনীর

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের মব সহিংসতা ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সেনাবাহিনী। সোমবার (২৬ মে) দুপুর দেড়টায় ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।

দেশের চলমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জনগণের জানমাল এবং রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সম্পদের নিরাপত্তা প্রদানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

প্রধান সেনা কর্মকর্তার নির্দেশনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনা সদস্যরা বর্তমানে ৬২টি জেলায়, এমনকি দূরবর্তী চরাঞ্চলেও সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন বলে জানান কর্নেল শফিকুল।

তিনি আরও জানান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম এবং সাধারণ জনগণের সঙ্গে নিবিড় সমন্বয়ের মাধ্যমে, একটি সমন্বিত ও বিস্তৃত পরিকল্পনার আওতায় এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

এসময় লে. কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পর থেকে সেনাবাহিনী দেশের স্বার্থে সবার সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছে এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কাজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পৃক্ত হবে না।’

মব তৈরি করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির বিষয়ে সতর্ক করে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘কেউ যদি মব তৈরি করে বিশৃঙ্খলা করতে চায়, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সেনাবাহিনী।’

সূত্র বলছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা গত কয়েক মাস ধরে একাধিকবার ‘আর মব চলতে দেওয়া হবে না’ বলে হুঁশিয়ারি দিলেও এখনও চলছে মবের রাজত্ব। মব তৈরি করে অরাজকতা সৃষ্টির পেছনে কিছু সংগঠন ও ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে উসকানি দিচ্ছে। বিশেষ করে ইউনূস সরকার এবং তার নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল সিটিজেন্স পার্টি (এনসিপি) সম্প্রতি বেশ কয়েকটি এলাকায় জনসমাবেশের নামে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে। এর সঙ্গে রয়েছে জামায়া-শিবির ও ইনকিলাব মঞ্চ ও জুলাই ঐক্যের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) হিসাবে, ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত গণপিটুনিতে অন্তত ১১৯ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৭৪ জন। গত ১০ বছরে গণপিটুনিতে মোট ৭৯২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে ২০২৪ সালে। গত বছর এ ধরনের ঘটনায় ১৭৯ জন নিহত হয়েছেন।

বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলবদ্ধভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনা বেড়েছে। দেশব্যাপী আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থকদের বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

এ ছাড়া নানা স্থানে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপরও হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের ৫ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত দেশের ৪৯ জেলায় হামলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্তত ১ হাজার ৬৮টি ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এসব ঘটনা ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ পত্রপত্রিকায় ‘মব’ ও ‘মব জাস্টিস’ শব্দ দুটি আলোচনায় রয়েছে। ইংরেজি শব্দ ‘মব’-এর অর্থ ‘উচ্ছৃঙ্খল জনতা’। আর সরল ভাষায়, এই বিশৃঙ্খল জনতা নিজের হাতে আইন তুলে নিয়ে সহিংসতা করলে তাকে ‘মব জাস্টিস’ বা ‘উচ্ছৃঙ্খল জনতার বিচার’ বলা হচ্ছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১