সিলেট ১ আসনে প্রার্থী হতে পারেন ডা: জোবায়দা রহমান
জুয়েল রাজ
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ার পার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হকের লন্ডন সফর নিয়ে চলছে আলোচনা । হঠাৎ করেই গত ১লা মে লন্ডনে আসেন আরিফুল হক চৌধুরী । তাঁর লন্ডন সফর ঘিরে শুরু হয় নানা গুঞ্জন। বেগম খালেদা জিয়ার বাংলদেশ ফিরে যাওয়া নিয়ে তারেক রহমানের ব্যস্ততার কারণে সেই সাক্ষাতটি সম্ভব হয়ে উঠেনি।অবশেষে গতকাল ৮ মে সন্ধ্যায় তারেক রহমানের সাথে সাক্ষাত করেন আরিফুল হক চৌধুরী।আলোচনায় আসে দুটি বিষয় , সিলেট ১ আসনে নির্বাচনের প্রার্থীতা নিশ্চিত করা অথবা সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক নিয়োগ পাওয়া।যদি ও সপ্তাহব্যাপী লন্ডনের সাংবাদিকদের খোলাসা করে কোন উত্তর দেন নি আরিফুল হক চৌধুরী।

তবে বিএনপির নেতাদের সাথে আলোচনায় জানা গেছে, আরিফুল মূলত সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চান। তাঁর প্রথম পছন্দ সিলেট-১ আসন। তবে এখানে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদীর। বিএনপির প্রভাবশালী এই নেতা আগামী নির্বাচনেও এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইচ্ছুক। ফলে মুক্তাদীরকে ডিঙিয়ে আরিফুলের এখানে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে কম। এ ক্ষেত্রে আরিফুলকে সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুর) আসনে প্রার্থী করা হতে পারে বলে দলের ভেতরে আলোচনা আছে।
এদিকে হিথ্রো বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, লন্ডনে সবার সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে এসেছেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে প্রার্থিতা হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের মূল টার্গেট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা। তারপর দলের সিদ্ধান্তই সবকিছু। আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গত ১৭ বছরে সিলেটের কোনো দৃশ্যমান উন্নতি হয়নি। আগামী ২/৩ মাসের মধ্যে গত ফ্যাসিস্ট সরকারের সিলেটে দুর্র্নীতি নিয়ে তথ্য সামনে আনব। এর আগে গত সপ্তাহে ঢাকা দক্ষিণ মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়ে তারেক রহমানের সিদ্ধান্তের জন্য লন্ডনে আসেন ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। দেশে ফিরে গিয়েই তিনি সম্মতি দেওয়ার পর গতকাল ২৭ এপ্রিল তাকে মেয়র ঘোষণা করে সরকার গেজেট প্রকাশ করেছে।
সর্বশেষ বিএনপির নির্ভর যোগ্য একটি সূত্র আজকের বৈঠকের আলোচনা ও সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
আলোচনায় দুইটি বিষয়ই উঠে এসেছে। সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক নিযুক্ত হতে তারেক রহমানের কোন আপত্তি নেই।
তবে সিলেট ১ আসনের প্রার্থীতার ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চয়তা পান নি সাবেক এই মেয়র। বৈঠকে সিলেট ১ আসনে জিয়া পরিবারের কোন সদস্য যদি নির্বাচন করেন ,তাহলে আরিফুল হক চৌধুরী সেই আসনটি পাবেন না। অন্যথায় তাঁকে এই হেভি ওয়েট আসনে প্রার্থী করা হবে।
জিয়া পরিবারের সদস্য হিসাবে তারেক রহমানের স্ত্রী জোবায়দা রহমানের নির্বাচন করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী, জোবায়দা রহমানের জন্ম সিলেটে। তার পিতা রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী , জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর প্রধান ছিলেন। এভং হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সরকারে তিনি যোগাযোগ ও কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। সিলেট ১ আসন নিয়ে বাংলাদেশে একটি মিথ প্রচলিত আছে ।যদিও আরিফুল হক চৌধুরী এই বিষয়ে এখনো কোন মন্তব্য করেন নি।
উল্লেখ্য সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আরিফুলকে অংশ নেওয়ার জন্য দলের বাইরের ভোটারদের চাপ ছিল। তিনি লন্ডনে তারেক রহমানের অনুমতির জন্য এসেছিলেন। কিন্ত গ্রীন সিগনাল না পাওয়াতে তিনি সেই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন নি। তখন ও সিলেট ১ আসনে নির্বাচনের বিষয়টি আলোচনায় উঠে এসেছিল ।
আরিফুল হক বর্তমানে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে আছেন। এর আগে তিনি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া তিনি সিলেট জেলা বিএনপির সদস্য। এর আগে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন একসময়ের ছাত্রদলের প্রভাবশালী এই নেতা।