সুজাত মনসুরঃ
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছে প্রায় এক যুগ হতে চললো। গত এক যুগ ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। এই এক যুগে সরকার বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে লন্ডন। মন্ত্রী-এমপিদের সংবর্ধনা আর জাতীয় দিবসগুলোতে গৎবাঁধা বক্তৃতার প্রতিযোগিতা ব্যথিত গত এক যুগে এই ষড়যন্ত্র ও অপ্রচার মোকাবিলায় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ কার্যতঃ চরমভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। বরং দেখা গেছে যারা এই ষড়যন্ত্রের হোতা তাদের সহযোগিদের(বিশেষ করে মিডিয়া কর্মী) সাথে দহরম মহরম বজায় রেখেছে। যদিও তৃণমূলের কর্মীরা তাদের অবস্থান থেকে সাধ্যমত চেষ্টা করেছে তা মোকাবিলা করার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এই সংখ্যাও তেমন আশাব্যাঞ্জক নয়। ইতোমধ্যে দেশে আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। বিশেষ করে সরকারি দল আওয়ামী লীগ। নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দল গোছানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, বিএনপিসহ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে। নির্বাচন প্রতিহত ও যেকোনো ভাবেই সরকার পতনের জন্য এবার তারা মরণ কামড় দেবে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র ও লবিং শুরু হয়ে গেছে। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার তো আছেই। এই লবিং ও ষড়যন্ত্রের মূল কেন্দ্রবিন্দুও হবে লন্ডন।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ। বয়োবৃদ্ধ ও নানা জটিল রোগে আক্রান্ত। করোনা শুরু হওয়ার আগে তিনি সশরীরে যেকোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতেন। এখন আর তা সেভাবে সম্ভব নয়। সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক আগামী নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৩ আসন থেকে এমপি হওয়ার খায়েশে লবিং করার জন্য দেশে অবস্থান করছেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী প্রতিবারের মতো আগামী নির্বাচনেও সিলেট-২ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ও দেশে অবস্থান করছেন। দীর্ঘদিন রাজনীতি করার পর নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার খায়েশ অন্যায় কিছু নয় বরং যৌক্তিক। কিন্তু নির্বাচনও করবেন দলের সাংগঠনিক দায়িত্বশীল পদ বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ ধরে রাখবেন এটা কোন নৈতিকতা? উপরেরটি খাবেন, নীচেরটি কুড়িয়ে নেবেন তা তো হতে পারে না। এমতাবস্থায় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগকে গতিশীল ও আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে লন্ডন ষড়যন্ত্র মোকাবিলায়
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনিবার্য হয়ে পড়েছে। অনেক আগেই সম্মেলন করা উচিত ছিল। কেননা নিয়মিত সম্মেলন না হলে নেতৃত্ব গড়ে উঠে না। স্থবিরতা দেখা দেয়। নেতৃত্ব ক্রমান্বয়ে ডিক্টেটর হয়ে ওঠে।