অসম্ভব কে সম্ভব করে তুলেছে পূর্বানাট !
জুয়েল রাজ-
গত রবিবার ২৩ নভেম্বর টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মাসব্যাপি সিজন অব বাংলাড্রামার ধারাবাহিক পরিবেশনার অংশ ,বার্মিংহাম এর নাটকের দল “পূর্বানাট” এর পরিবেশনা নাটক “নিতুর বিয়ে” এবারের নাটক টি ছিক পূর্বানাটের অসম্ভব কে জয় করার কাহিনী।
পূর্বানাট অতীতে ,ব্রিকলেন ৭৮ কিংবা সল্টি ওয়াটার এর মত বাঙালির ব্রিটেনে শিকড় প্রোথিত করার ইতিহাস নিয়ে সিরিয়াস নাটক মঞ্চায়ন করে দর্শকের মন জয় করেছে। এবং পেশাদার অভিনয় শিল্পীদের অভিনয় বরাবরই মুগ্ধ করেছে।
কিন্ত এবার তারা মঞ্চে নিয়ে এসেছে সংগঠনের সাধারণ সদস্যদের। অভিভাবকদের যাদের সন্তানেরা পূর্বানাটের সদস্য। যাদের কেউ এর আগে মঞ্চে অভিনয় করেন নি কোনদিন।
সেই সব মানুষজন মঞ্চ আলো করে এক ব্যাতিক্রমী মুগ্ধতায় ভরিয়ে দিয়েছেন দর্শকদের।
মুরাদ খানের লেখা ‘নীতুর বিয়ে’ নাটকটি আবর্তিত হয়েছে মহামারির সময় বিয়েকে ঘিরে নানা জটিলতা, পারিবারিক টানাপোড়েন, মানুষে–মানুষে দূরত্ব ও হাস্যরসের মিশেলে তৈরি অদ্ভুত বাস্তবতায়। ব্যঙ্গাত্মক রসের মধ্য দিয়ে সেই সময়ের অভিজ্ঞতাই উঠে এসেছে মঞ্চের প্রতিটি দৃশ্যে।

প্রথম শো থেকেই দর্শকদের প্রতিক্রিয়া ছিল উচ্ছ্বাসভরা।
নাটক দেখে এক তরুণ দম্পতি জানান, মহামারির সময়ই তাঁদের বিয়ে হয়েছিল; তাই গল্পটি তাঁদের জীবনের সঙ্গে মিলে গেছে। শো শেষে এক মা আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, তাঁর মেয়ের বিয়ের ঘটনাও নাকি ছিল একেবারে নাটকের মতো।দর্শকের এমন আন্তরিক ভালোবাসা ও প্রতিক্রিয়া অভিনয়শিল্পী থেকে শুরু করে পুরো প্রযোজনা দলকে দিয়েছে নতুন অনুপ্রেরণা।
নাট্যকার মুরাদ খান বলেন, নতুন নাটকের প্রথম প্রদর্শনী—সবসময়ই আলাদা রকমের উত্তেজনা থাকে, আর এবারের যাত্রাটা ছিল আরও চ্যালেঞ্জিং। আমাদের কোর গ্রুপের বেশির ভাগই আগে কখনো অভিনয় করেনি; হাতে গোনা দু–একজন ছাড়া তারা প্রমাণ করেছে—আমরাও পারি, এবং খুব ভালোভাবেই পারি!
নাটকের গল্প ছিল কোভিড সময়ে বিয়ের আয়োজন নিয়ে—মানুষ কীভাবে কঠিন সময়েও আরো মানবিক হয়ে উঠেছিলো, তার স্যাটায়রিস্টিক উপস্থাপন।
দর্শকদের প্রতিক্রিয়া ছিল অসাধারণ! এক ইয়ং কাপল বললো, তাদের বিয়েও হয়েছিল কোভিডের সময়, আর আমাদের নাটকের সিনোপসিস দেখে তারা দেখতে এসেছে—এবং দারুণ উপভোগ করেছে। আবার এক মা দৌড়ে এসে বললেন, তার মেয়ের বিয়েও নাকি একদম গল্পের মতো। দলের সবাই আমাকে খেপাচ্ছিল—আমি নাকি তাদের কাছ থেকে গল্প কপি করেছি! নকল স্টোরি!
মানুষ নাটকের সাথে এত সহজে সংযুক্ত হয়েছে—এই এনগেজমেন্টটাই সবচেয়ে আনন্দের।বাস্তব অভিজ্ঞতার সাথে মিল খুঁজে দর্শকদের হাসি আর উচ্ছ্বাস—এই সাফল্যই আমাদের শক্তি।
বিলেতের নাট্যজন নুরুল ইসলাম বলেন,
ধন্যবাদ পূর্বানাট এবং পুরো টিমকে, নাটকটি প্রাণবন্ত ছিলো, যাকে বলে এক নিঃশ্বাসে নাটকটি দেখতে হয়েছে, প্রতিটি দৃশ্যেই ভালো ভালো মেসেজ ছিলো, আলাপ করে জানতে পারলাম অনেকেই এবার নতুন করে অভিনয় করেছেন, কিন্তু সবার অভিনয় এতই সাবলীল ছিল মনে হয়নি নতুন অভিনয়, যাই হোক নাটকটি দর্শক সমাদৃত হয়েছে, পুরো টিমকে শুভেচ্ছা, শুভ কামনা
বার্মিংহাম থেকে দীর্ঘ ভ্রমণ করে নাটক মঞ্চায়ন করে ,গভীর রাতে পুরো টিম যখন আবার ফিরতি যাত্রা শুরু করেন , দর্শকের ভালোবাসা ও শুভেচ্ছায় সবাই ছিল উৎফুল্ল। সিজন অব বাংলা ড্রামায় একরাশ মুগ্ধতা ছড়িয়ে গেল পূর্বানাট ।



