সিজন অব বাংলা ড্রামায় মঞ্চস্থ হয়েছে আয়না আর্টসের ক্রিসিলাইস

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
জুয়েল রাজ- 
সিজন অব বাংলাড্রামায় দীর্ঘদিন ধরেই নাটক মঞ্চায়ন করে আসছে আয়না আর্টস।  যুক্তরাজ্যে যারা নাট্যচর্চা করেন ,তাঁরা জানেন , লন্ডনের বাইরে বাংলা নাটক এর পৃষ্ঠপোষকতা করা চর্চা করা বেশ কঠিন। সেই কঠিন কাজটাই দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে আয়না আর্টস।  গত ১৫ নভেম্বর  লন্ডনের ব্রাডি আর্টস সেন্টারে মঞ্চায়িত হয় নাটক ক্রিসিলাইস।
আয়না আর্টস বরাবরই নাটকের বিষয়বস্তু নিয়ে সচেতন ভাবে কাজ করে আসছে , বিশেষ করে নারী অধিকার ,নারীদের বিভিন্ন মানসিক টান পোড়েনকে মঞ্চে তুলে আনেন জেসমিন চৌধুরী। ইংরেজী ভাষায় মঞ্চায়িত হওয়াতে  বহু সংস্কৃতির  মানুষকে একই দর্শকসারিতে  নিয়ে আসার কাজটি সহজ হয়।
এবারের পরিবেশনা ও এর ব্যাতিক্রম নয়। নাট্যকার জেসমিন চৌধুরীর লেখা ও অপু চৌধুরীর পরিচালনায় নাটক ‘Chrysalis’ দর্শনীর বিনিময়ে  একই দিনে  পরপর প্রর্দশিত দুটি শো-ই ছিল দর্শক পরিপূর্ণ।
আয়না আর্টসের দর্শক নন্দিত ‘ক্রিসালিস’ নাটকের কাহিনী এগিয়ে যায় নারীদের  “মেনোপজ” কে প্রতিপাদ্য করে,নারীর জীবনের স্বাভাবিক প্রাকৃতিক জৈবিক ক্রিয়াকলাপ নিয়ে। এই চিরন্তন প্রক্রিয়াটি নারী নিজে, সমাজ, জীবনসঙ্গি, সহকর্মী কেউই সহজভাবে মেনে নিতে পারেনা। শারীরিক  পরিবর্তনের সাথে মনোজগতে যে ঝড় বয়ে যায় , প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় বিষয়টি গোপন করার প্রবণতাই বিদ্যমান। সেই গোপনীয়তার ট্যাবু ভেঙে
অধিকাংশ নারী এই বিষয়ে আলাপ করতেও স্বাচ্ছন্দবোধ করেননা।
মঞ্চে এক নাট্যকার তার নাটকের কাহিনী লিখতে গিয়ে তার চারপাশের নাটকরের  নারী চরিত্ররা তাকে ভাবিয়ে তুলে , জেসমিন চৌধুরী এই জায়গায় তার মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। এই সময়ে একেক জন নারীর একেক বিষয়ে সমস্যা  হতে পারে এবং তখন কি  সচেতনতা  দরকার ,করণীয় কি Chrysalis’ নাটকে তিনি  তুলে এনেছেন।
আবার একই বিষয়ে  সমাজ বা পরিবারের পুরুষ দৃষ্টিভঙি’র ও চরিত্রায়ণ করেছেন তিনি। পুরুষরা যেহেতু এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায় না তাই বিষয়টি  অনুধাবন করতে না পারার ফলে পরিবারে যে দূরত্ব তৈরী হতে পারে। পুরুষেরও একই  ধরণের সমস্যার মধ্য দিয়ে গেলে তাঁদের কি অবস্থা হতো, তা হাস্যরসের মাধ্যমে তুলে ধরেন।
শুধু হাস্যরস নয়   গাইনী বিশেষজ্ঞের ভূমিকায় সমাধানের কিছু পরামর্শ দেন। এই সময় নারীরা আত্মহত্যার মত সিদ্ধান্ত নিতে ও পিছপা হন না। এর থেকে বের হয়ে আসার পরামর্শই ছিল মূল বার্তা।
নাটকে গানের ব্যবহার ছিল অনবদ্য বিশেষ করে “ওলো সই ,ওলো সই আমার ইচ্ছে করে তোদের মত মনের কথা কই” এক ঘোর লাগা আবাহ তৈরী করে মঞ্চে।চরিত্রের সাথে প্রত্যেকটি চরিত্রি সুবিচার করেছেন, মূল অনুঘটক লেখক চরিত্র অপু চৌধুরী নিজের দীর্ঘ অভিনয় জীবনের অভিজ্ঞতাকে সুনিপুণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন ।
যে উদ্দেশ্যে মাস ব্যাপী এই নাট্য উৎসবটি পরিচালিত হয়ে আসছে, নতুন প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করা। আয়না আর্টস এই কাজটি সুন্দর ভাবে করেছে, শিশু কিশোরদের চরিত্রগুলো মঞ্চে সুন্দর ভাবে তুলে এনেছে ।নাটকে  অভিনয় করেছেন  মাইশা ফজল, আরিশা ফজল, ফারিয়া সিদ্দিকী, জয়তী পাল, মুকাররাম হোসাইন, মুরাদ চৌধুরী, গুলশান আরা লুনা, মার্টিনা কুজনোভা, মোহাম্মদ ফজল, মৌসুমী সেন গুপ্ত, রফিকুর রহমান চৌধুরী, অপু চৌধুরী ও জেসমিন চৌধুরী।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মেনচেস্টারে অপু চৌধুরী ও জেসমিন চৌধুরী ‘আয়না আর্টস প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাদের সাথে সহযোগিতায় ছিল ‘পূর্বনাট’ ও মুরাদ খান। তাদের মঞ্ছস্থ নাটকগুলো হলো ‘মায়া’জ হানিমুনস’ রচনা জেসমিন চৌধুরী। ‘মুখোশ’ রচনা- এরিয়েল ডর্ফম্যান, অনুবাদ সৈয়দ শামসুল হক। ‘জেরা’ রচনা ফরিদ কামালী। ‘ওড়না’ রচনা জেসমিন চৌধুরী। ‘টেলিগ্রাম’ রচনা জেসমিন চৌধুরী। ‘এক্সট্রা মেরিটাল’ রচনা জেসমিন চৌধুরীও  ‘ঘূর্ণি‌’ রচনা করেছেন জেসমিন চৌধুরী।  অন্য সবগুলো নাটকের নির্দেশনায় ছিলেন অপু চৌধুরী। গতবছর নাটোৎসবে প্রদর্শিত ‘ঘূর্ণির’ নির্দেশনা দিয়েছেন যৌথভাবে অপু ও জেসমিন চৌধুরী।
লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ২২ বছরের ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে “সিজন অব বাংলা ড্রামা ২০২৫”
বাংলা নাটক, নাচ এবং সঙ্গীতের মাধ্যমে ব্রিটিশ-বাঙালি প্রতিভাদের উপস্থাপন করা এবং তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটানো। উৎসবের এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়, “KINDNESS”
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০