ঐক্যের ডাকে সাড়া না পেয়ে নির্বাচন বানচাল করতে বিদেশ ব্রিগেড দিয়ে স্বপদে থাকার ঘোষণা ইউনূসের

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ঘিরে চলমান রাজনৈতিক নাটক এক নতুন মোড় নিয়েছে। গতকাল রাতে হঠাৎ তার পদত্যাগের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লে দেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোড়ন তৈরি হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় জল্পনা-কল্পনা।

তবে এই গুঞ্জনের সূত্রপাত, এর প্রতিক্রিয়া ও পরিণতি নিয়ে এখন জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে—এটি কি নিছকই একটি রাজনৈতিক নাটক ছিল? বিশেষ করে যখন দেখা গেল, রাত পোহানোর আগেই ড. ইউনূসের ঘনিষ্ঠ ICT বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব একটি ফেসবুক পোস্টে জানিয়ে দেন, “ড. ইউনূস পদত্যাগ করছেন না। তার ক্ষমতা প্রয়োজন নেই, কিন্তু বাংলাদেশের জন্য তার প্রয়োজন আছে।”

এর ১০ ঘণ্টা আগেই ইউনুস ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত একদল রাজনৈতিক নেতা—নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, আসিফ মাহমুদ এবং জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান—পৃথকভাবে ইউনূসকে উদ্দেশ করে পদত্যাগ না করার আহ্বান জানান। তারা বলেন, বর্তমান সংকটময় সময়ে ‘জাতীয় ঐক্য’ গড়ে তোলা জরুরি এবং ড. ইউনূসের নেতৃত্বেই তা সম্ভব। তাদের এসব আহ্বান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও জনগণের মাঝে তা প্রত্যাশিত সাড়া ফেলেনি। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, ‘ঐক্যের ডাক’ মূলত রাজনৈতিক কৌশলের অংশ।

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে সে বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাসমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। সেই সরকারেই প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বে আসেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহায়তায় গঠিত এই সরকার শুরু থেকেই নানা বিতর্ক ও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। অথচ তার আইসিটি বিষয়ক সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এখন বলছেন, “কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপের নজির নেই।” এই মন্তব্যও রাজনৈতিকভাবে বিপরীতমুখী বার্তা দিচ্ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

সামাজিক মাধ্যমে এমন বক্তব্যকে অনেকেই ভণ্ডামি হিসেবে দেখছেন। কারণ, ড. ইউনূস নিজে সেনা হস্তক্ষেপের সুবিধাভোগী হয়েই ক্ষমতায় এসেছেন। সেই তিনিই এখন গণতন্ত্রের কথা বলছেন—এ যেন নৈতিক দ্বিচারিতার এক প্রতীক।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিবের ভাষায়, “এটা একেবারে সাজানো নাটক। একদিন পদত্যাগের গুজব ছড়াবে, পরদিন ‘ঐক্যের ডাক’ দিয়ে তাকে থেকে যাওয়ার আহ্বান জানানো হবে, তারপর নিজ দলের লোকজনই বলে দেবে—তিনি থাকছেন। এটা জনমানসে নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার ব্যর্থ প্রয়াস।”

রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন উঠেছে, এই নাটকের পেছনে রয়েছে আন্তর্জাতিক চাপ ও বিদেশি ‘ব্রিগেড’-এর তৎপরতা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সম্প্রতি ভোট ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের বিষয়ে সেনাবাহিনীর সুস্পষ্ট অবস্থান গ্রহণ ও সেনাবাহিনীর ভাষ্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মিলে যাওয়ার পরপরই এনসিপিসহ ইউনুস ঘনিষ্ঠরা চাপের মুখে পড়েন। এর প্রেক্ষিতে ‘পদত্যাগ’ নাটক সাজিয়ে একটি নতুন অবস্থান নিতে চেয়েছিলেন তিনি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নাটক জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা এবং নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার প্রচেষ্টা। জনতার সামনে গণতন্ত্র ফেরানোর কথা বলে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার কৌশল মাত্র।

এদিকে, ইউনূসের স্বপদে থাকার ঘোষণায় তার সমালোচকরা বলছেন, “এই সরকার এবং ইউনূস—উভয়েরই নৈতিক ভিত্তি এখন প্রায় শূন্য। যে নাটক রচনা করে নিজেকে জোর করে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, তা ব্যুমেরাং হয়ে ফিরবে। এই সরকারের চরিত্রই হচ্ছে নাট্য-সরকার। যেখানে গণতন্ত্র নেই, জবাবদিহিতা নেই, আছে শুধু বিদেশি প্রভাব, নাটক আর ফেইসবুক-রাজনীতি।”

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১