ব্রিকলেন নিউজ-
যুক্তরাজ্যে বৈধ অভিবাসন হ্রাস ও ছাত্র ভিসা ব্যবস্থার অপব্যবহার ঠেকাতে এ মাসেই নতুন অভিবাসন আইন সংস্কারের একটি সাদা কাগজ (white paper) প্রকাশ করতে যাচ্ছে ব্রিটিশ সরকার।

এই প্রস্তাবনায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আশ্রয়প্রার্থিতা সীমিত করার বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। গত বছর, ব্রিটেনে মোট ১,০৮,০০০ জন আশ্রয়প্রার্থী আবেদন করেছিলেন, যাদের মধ্যে প্রায় ১৬,০০০ জন ছিলেন ছাত্র ভিসাধারী। এই সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে বলে হোম অফিস জানায়।
হোম সেক্রেটারি ইভেট কুপার বলেছেন, অনেক বিদেশি শিক্ষার্থী আর্থিকভাবে স্বনির্ভরতার কথা বলে ভিসা পেলেও, ভিসার মেয়াদ শেষে আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন করেন— যা ভিসা ব্যবস্থার অপব্যবহার।
নতুন প্রস্তাবনায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য কম মজুরির চাকরিতে যুক্তরাজ্যে থাকার সুযোগ সীমিত করার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে এমন পদক্ষেপ শিক্ষাবিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়তে পারে, কারণ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ফি থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বড় আয় করে।
এদিকে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনে লেবার পার্টির ব্যর্থতা এবং রিফর্ম পার্টির উত্থানও সরকারকে কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য করেছে। রিফর্ম পার্টি ইতোমধ্যে ১০টি কাউন্সিল, র্যানকন ও হেলসবির উপনির্বাচন এবং গ্রেটার লিঙ্কনশায়ার মেয়র পদের দখল নিয়েছে।
লেবার এমপি জো হোয়াইট সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আর দোটানায় না থেকে ট্রাম্পের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।” তিনি ডিজিটাল আইডি চালু ও আঞ্চলিক গ্যাং তদন্তের দাবিও জানান।
তবে, লেবার পার্টির কিছু এমপি সরকারের ডানপন্থী রূপান্তর নিয়ে উদ্বিগ্ন। এমপি র্যাচেল মাসকেল বলেন, “লেবার পার্টি মানুষের সুরক্ষা এবং কল্যাণে প্রতিষ্ঠিত—জনগণের এই প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হলে তারা অন্যত্র ভরসা খুঁজবে।”
প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার স্বীকার করেছেন যে নিয়ন্ত্রণহীন অভিবাসন, পরিবেশ দূষণ ও স্থানীয় সেবার ব্যর্থতায় জনগণের ক্ষোভ যৌক্তিক। তবে তিনি আশ্বাস দেন, “দায় এড়িয়ে নয়, বরং সরাসরি সমস্যাগুলোর সমাধানেই আমরা এগোবো।”
অন্যদিকে, লিবারেল ডেমোক্র্যাট নেতা এড ডেভি সতর্ক করে বলেছেন, “রিফর্মের মতো বিভাজনমূলক রাজনীতিকে প্রশ্রয় না দিয়ে, সরকারকে তার আদর্শে দৃঢ় থাকতে হবে।”
পরবর্তী সপ্তাহে প্রকাশিতব্য একটি গবেষণা প্রতিবেদনে সরকারকে পরামর্শ দেয়া হবে যাতে ‘গ্র্যাজুয়েট ভিসা’ শুধু উচ্চপর্যায়ের চাকরির জন্য সীমাবদ্ধ রাখা হয় এবং সামাজিক সেবাখাতে ভিসা ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করা হয়, যেখানে ভিসার অপব্যবহার ব্যাপক হয়েছে বলে অভিযোগ