সুনীল চৌধুরীকে সাথে নিয়ে সামশেরগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন অধীরের

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আলি আহসান বাপি , ভারত থেকে-

 

ওয়াকাফ আইন বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ মিছিলকে কেন্দ্র করে অশান্ত হয়ে ওঠে গোটা শামশেরগঞ্জ। এ মাসের গত ১১ তারিখ। পুলিশের উদাসীনতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। গোটা সামশেরগঞ্জ ব্লক জুড়ে চলে তান্ডব। বাড়িঘর ও দোকানপাট লুঠপাট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, বোমাবাজি, কাঁদানে গ্যাস, গুলি, হত্যা। সব মিলিয়ে গোটা শামশেরগঞ্জ জুড়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে জগৎজোড়া খ্যাতি ছিল যে সামশেরগঞ্জের, নিমেষেই তা ধুলোয় মিলিয়ে যায়।
নবান্নের নির্দেশে জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার আনন্দ রায় ও সামসেরগঞ্জ থানার ওসি শিবপ্রসাদ ঘোষকে বদলি করা হয়।
ঘটনার পর থেকেই গোটা সামসেরগঞ্জ জুড়েই সীমান্ত রক্ষী বাহিনী, সি আর পি এফ, ৱ্যাফ ও পুলিশের টহলদারি চলছে। সমানতালে ধরপাকড়ও চলছে। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক মানুষকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। যদিও পুলিশের বিরুদ্ধে নিরপরাধ ব্যক্তিদেরও ধরপাকড়ের অভিযোগ উঠছে।
এদিকে ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এসেছেন। বামেদের তরফে মহম্মদ সেলিম, বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী এসেছিলেন।

গতকাল জেলা কংগ্রেসের তরফে বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী ফারাক্কার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী সুনীল চৌধুরীকে সাথে নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে আসেন। প্রথমে যান হিজলতলা গ্রামে বিএসএফের গুলিতে আহত এক যুবককে দেখতে। তারপর দিঘড়ি গ্রামের বেতবোনা, পালপাড়া, শুলিতলা, লালপুর যান। পরে ধুলিয়ান বাজার ও শিবমন্দির এলাকায় বেশকিছু দোকানপাট পরিদর্শন করেন ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অধীর বাবু বলেন, ধুলিয়ান পুরাতন বাণিজ্য নগরী। পাশাপাশি ধুলিয়ান সম্প্রীতির শহর হিসেবেও পরিচিত।আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কখনও শুনিনি ধুলিয়ানে হিন্দু মুসলিমদের মধ্যে ঝামেলা বেঁধেছে। বাবরি মসজিদ ভাঙার সময় গোটা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ঝামেলা বেঁধেছে। কিন্তু ধুলিয়ানে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সম্প্রীতির স্বপক্ষে মিছিলে হেঁটেছেন।
এখন ভারতবর্ষের রাজনীতির হাল হকিকত বদলেছে। ভারতবর্ষ নামক মাঠটা দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রদায়িকতার বিষ বাস্পে পরিবেশ আস্তে আস্তে বিষিয়ে উঠছে।
এদিন অধীর বাবু তোপ দাগেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর দিকে। তিনি বলেন, মুখমন্ত্রী নিজে পুলিশমন্ত্রী দপ্তর সামলাচ্ছেন। তাঁর গাফিলতিতেই সামসেরগঞ্জ এলাকায় এতবড় অশান্তি সংগঠিত হয়ে গেল। এই ঘটনার দায় মুখ্যমন্ত্রীকেই নিতে হবে।
কংগ্রেসের নেতা, ফারাক্কার বিশিষ্ট সমাজসেবী সুনীল চৌধুরী বলেন, সরকার না চাইলে দাঙ্গা হয়না একথা একশো ভাগ ঠিক। পুলিশ যদি ঠিক সময়ে সক্রিয় হতো তাহলে এত ক্ষয়ক্ষতি হত না। আমি সামসেরগঞ্জ এর ভূমিপুত্র। সামসেরগঞ্জ এর মাটি সোনার চেয়েও খাঁটি। সারাটা জীবন আমরা হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই হয়েই কাটিয়েছি। আসলে কেন্দ্র রাজ্য দুই সরকারই মেরুকরণের রাজনীতি করতে চাইছে। সামনে ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। সাম্প্রদায়িক বিজেপির সাথে তৃণমূলের একটা গোপন আতাত আছে এটা সবাই জানেন। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমরা অর্থাৎ ভারতের জাতীয় কংগ্রেস বিভাজনের রাজনীতি করেনা।
সুনীল বাবু বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি ফ্যাসিবাদী সাম্প্রদায়িক বিজেপি সরকার কেন্দ্রে যখন থেকে ক্ষমতায় এসেছে তখন থেকে ভারতবর্ষের সম্প্রীতির আকাশটা ক্রমশ কালো মেঘে ঢেকে যাচ্ছে। ভারতের অখন্ডতা, সংহতি, ঐক্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রশ্নের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে। তাই আমাদের সময় এসেছে সম্মিলিতভাবে রুখে দাঁড়ানোর।
সুনীল চৌধুরী বলেন, রবীন্দ্রনাথ নজরুলের এই বাংলায় সাম্প্রদায়িকতা ঠাঁই নাই। এই বাংলা রামকৃষ্ণ পরমহংসের বাংলা। এই বাংলা যত মত তত পথের বাংলা। এই বাংলা তিতুমীর আর বিবেকানন্দের বাংলা। এই বাংলায় বিভেদকামী শক্তি যতই চেষ্টা করুক আমরা সব ভেদাভেদ ভুলে হিন্দু মুসলিম কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থাকবো।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১