সুশান্ত দাস,সেন্টক্যালিক্সট,কানাডা

কানাডার মন্ট্রিয়ল শহরে লেখক মুক্তিযুদ্ধ গবেষক তাজুল মোহাম্মদ’র আয়োজনে গত ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে ভার্চুয়াল আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত আলোচনাসভায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত হতে মুক্তিযোদ্ধা,প্রবীন রাজনীতিক,কবি, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিককর্মী সহ নানাবিধ নবীন-প্রবীন প্রজন্মের সংমিশ্রণে বক্তারা আলোচনায় সম্পৃক্ত হয়।
বক্তারা বলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার
১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন হয়েছিল
আর শপথ গ্রহন করেছিল ১৯৭১ এর ১৭ এপ্রিল।
ভর্চুয়াল আলোচনাসভায় সেদিনের প্রেক্ষাপট,তাৎপর্য এবং আজকের বাস্তবতা শীর্ষক আলোচনা হয় দুই পর্বে।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-
বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন ও কথা সাহিত্যিক সালমা বানী।
আরো উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ মোহাম্মদ গণি,সাংবাদিক বাকী বিল্লাহ বকুল, কবি জেবুল হাসান,লেখক অলক চৌধুরী, সাংস্কৃতিক কর্মী ও নৃত্য শিল্পী জান্নাত জাহান ইসলাম তুষ্টি, সাংস্কৃতিক কর্মী সুশান্ত দাস(প্রশান্ত)প্রমুখ ।
বক্তারা বলেন-
বাংলা, বাঙালি, মুক্তিযুদ্ধ ও মুজিবনগর যেন এক অভিন্ন নাম। ইতিহাসের এই দিনটি বৈদ্যনাথতলায় রচিত হয়। একাত্তরের অগ্নিঝরা এই দিনেই বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক ভিত্তিমূল রচিত হয়। একাত্তরের এই দিনে বাঙালি জাতি নতুন করে জেগে ওঠে। শপতের দৃপ্তে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। স্বাধীনতার স্পৃহায় তীক্ষ্ণ হয়ে ওঠে।
তাঁরা উদাহরণ দিয়ে বলেন- ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, বাঙালির সেই স্বাধীনতার সূর্য আবারও ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের ভবেরপাড়া গ্রামের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে উদিত হয়েছিল।
কিন্তু পরিতাপের বিষয় আজ সেই স্বাধীনতা আবার পদধূলিত হচ্ছে। ৭১-র পুরনো শকুন কৌশলে ঝাপটা বসাচ্ছে। চব্বিশের গনঅভুথ্যান দুর্নীতি ও অপ রাজনীতির বিরোদ্ধে না দাঁড়িয়ে ওরা ৭মার্চ,১৫ই আগস্ট,সাত বীর শ্রেষ্টদের ভাস্কর্য, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর,৩২নং ধানমন্ডি, মাজার ভাঙ্গা, জাতীয় পতাকা,জাতীয় সংগীত,দেশের নাম, সংবিধান পরিবর্তনে এহেন চেষ্টা বাদ দেয়নি। সর্বশেষে সর্বজনীন বর্ষবরণ মতো ‘মঙ্গল শোভা’ যাত্রাকে বদলিয়ে ক্ষান্ত হয়নি; এমনকি কবি রফিক আজাদের বাড়ি পর্যন্ত ধ্বংস করে ফেললো।
কাজেই ১৭ এপ্রিল যে শুধু ১৯৭১ সালের মুজিবনগর দিবসের শপতের দিন তা নয় বরং ৭১-র চেতনায় ‘আজকের-পাকি প্রেমী’ অপশক্তির বিরোদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর দিন; দেশের সকল যুব যুবা নবীন প্রবীণের ঐক্যবদ্ধতার দিন। এই অপশক্তির রোধে সবাইকে জাগাতে হবে, জাগতে হবে।