সরকার পতনের পর সিলেটে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাসায় হামলা ও থানায় আগুন

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

ব্রিকলেন নিউজ-

শেখ হাসিনার পদত্যাগের দুইদিনে  নগরের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী অঙ্গসংগঠনের অন্তত ২৫ জন শীর্ষ পর্যায়ের নেতার বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব হামলায় কতজন হতাহত হয়েছেন, সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাসায় হামলার পাশাপাশি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সিলেট পুলিশ সুপারের কার্যালয়; সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানা; বন্দরবাজার, সোবহানীঘাট ও লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ি। এ ছাড়া সিলেট জেলা পরিষদ এবং নগর ভবনেও হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। এর বাইরে সিলেটের পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় ও কেন্দ্রীয় কারাগারে ভাঙচুরের চেষ্টা হয়েছিল বলে দুটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, নগরের বন্দরবাজার এলাকায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের ভবনের ভেতর থেকে ধোঁয়া উড়ছে। ভবনের সামনে বেশ কয়েকটি পোড়া গাড়ি পড়ে আছে। লোকজন এখানে ভিড় করে ধ্বংসস্তূপের ছবি তুলছেন। ভাঙচুরের শিকার নগর ভবনের সামনে পড়ে থাকা কাচ পরিষ্কার করছেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। অন্যদিকে বন্দরবাজার, সোবহানীঘাট ও

লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়িও পুড়ে গেছে।

একাধিক পুলিশ সদস্য জানিয়েছেন, জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কোনো জরুরি কাগজপত্রই আর অবশিষ্ট নেই। আসবাবসহ সব জরুরি কাগজ পুড়ে ছাই হয়েছে। একই ঘটনা ঘটেছে বন্দরবাজার, সোবহানীঘাট ও লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ক্ষেত্রেও। আজ মঙ্গলবার কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তবে পুলিশ সুপারের কার্যালয় ও ফাঁড়িগুলো পুনরায় সংস্কার করে চালু করা হলেও জরুরি কাগজপত্রের অভাবে মারাত্মক সমস্যায় পড়তে হবে।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী ও আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর প্রচারিত হওয়ার পরপরই পৃথক মিছিল নিয়ে একদল মানুষ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের গুরুত্বপূর্ণ ও পরিচিত নেতাদের বাসায় গিয়ে হামলা চালায়। হামলা-ভাঙচুর হয়েছে সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের একজন প্রতিমন্ত্রী, দুজন সংসদ সদস্য, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও একাধিক কাউন্সিলরের বাসভবনেও।

ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রবাসী ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ (সদর ও নগর) আসনের সংসদ সদস্য এ কে আবদুল মোমেন, সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর) আসনের সংসদ সদস্য রনজিত চন্দ্র সরকার এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসভবন। শাপলাবাগ এলাকায় শফিকুরের, ধোপাদিঘিরপার এলাকায় মোমেনের, গোপালটিলা এলাকায় রণজিতের এবং পাঠানটুলা এলাকায় আনোয়ারুজ্জামানের বাসা অবস্থিত।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা জানান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খানের বাসায়ও হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তিনবারের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের শ্বশুরবাড়িও আক্রমণের শিকার হয়েছে।সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের মধ্যে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদের বাসায় হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। হামলা ও অগ্নিসংযোগ  করা হয় সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ  সম্পাদক দেবাংশু দাশ মিঠুর বাসা ও অফিসে। গ্যারাজে রাখা গাড়ি ও ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে বলে জানা গেছে ।

এ ছাড়া গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম এবং ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের কার্যালয়। সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. মখলিছুর রহমান কামরানের কার্যালয়েও হামলা করা হয়। আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিত ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেক উদ্দিন তাজের বাসা ভাঙচুরের পাশাপাশি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িও ভস্মীভূত হয়।

এ ছাড়া দলনিরপেক্ষ হওয়া সত্ত্বেও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদের বাসায়ও ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রেজওয়ানের বড় ভাই সিলেটের প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও জাসদ সিলেটের সভাপতি লোকমান আহমদ। নগরের আম্বরখানা বড়বাজার এলাকায় তাঁদের যৌথ পরিবারের বসবাস।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১