অনলাইন ডেস্ক-
কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে সৃষ্ট বিক্ষোভ দমনে কী কী ঘটেছে তার বিস্তারিত তথ্য সরকারকে প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের নিয়ম-নীতি ও মানদণ্ড মেনে এই দেশের সব আইন প্রয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা নিশ্চিতের আহ্বানও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) জেনেভা থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে সরকারি নীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ও যুব আন্দোলনের বিক্ষোভে ১৭০ জনের বেশি মৃত্যুর খবর এসেছে। এক হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অনেকে নিখোঁজ রয়েছে। এতে অন্তত দুই সাংবাদিক নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বিরোধী দলের নেতাসহ শতাধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
তিনি বলেন, আমরা অনুধাবন করেছি যে অনেক মানুষ সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত গোষ্ঠীর সহিংস আক্রমণের শিকার হয়েছেন এবং তাদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য কোনো প্রচেষ্টা করা হয়নি। তাই জনসাধারণের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার জন্য এবং এই সহিংসতা যাতে অন্যদিকে পরিচালিত না হয় সেজন্য সংলাপের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা উচিত। আমি সরকারকে অনুরোধ করছি যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনের নিয়ম এবং মানদণ্ড অনুযায়ী পরিচালিত করুন।
একইসঙ্গে বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলাবাহিনী যেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ভঙ্গ না করে এবং যদি করেন তারা যেন দায়মুক্তি না পায় সেই আহ্বানও করেছেন তিনি। এ ছাড়া সহিংসতায় উসকানি দিতে পারে কিংবা ভিন্নমতের বিরুদ্ধে আরও দমন-পীড়নের দিকে নিয়ে যেতে পারে এমন কোনো বিবৃতি বা কাজ এড়িয়ে চলতে সকল রাজনৈতিক নেতার প্রতি আবেদন করেছেন তিনি।
সাংবাদিক এবং মিডিয়া আউটলেটসহ সবাইকে অবাধে এবং আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সঙ্গতি রেখে যোগাযোগ করার স্বার্থে হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বাংলাদেশ সরকারকে সম্পূর্ণ ইন্টারনেট সংযোগ পুনরুদ্ধার করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও যোগ করেন, সরকারকে পরিবারের সুবিধার জন্য নিহত, আহত বা আটকদের বিবরণ দিতে হবে।
ইন্টারনেট শাটডাউনের কারণে জনসাধারণের পক্ষে বিভিন্ন বিষয় যাচাই এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে যা তাদের দায়মুক্তি বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি করবে। সার্বিক বিষয় নিয়ে ভলকার তুর্ক বাংলাদেশ সরকারকে একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানান।