অনলাইন ডেস্ক-
চলমান স্থবিরতায় দিনে অর্থনীতির ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। গত এক সপ্তাহে ক্ষতি হয়েছে ৮৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। ঝুঁকি তৈরি হয়েছে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার। ব্যাহত হবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। গবেষণা সংস্থা পিআরআই’র নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মহাখালী বাস টার্মিনাল। ঘুরছে না চাকা, থেমে আছে অসংখ্য গাড়ি, অলস হাজারো কর্মী। তারা জানান, বুধবার গাড়ি নিয়ে মহাখালী ঢুকেছেন, কিন্তু আর বের হতে পারেননি। ফলে ছয় দিন ধরে বন্ধ উপার্জন। এমন অবস্থা রাজধানীর হাজারো নিম্ন আয়ের মানুষের।
বাজারে সাধারণ মানুষের অবস্থা যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি। নানা পদক্ষেপেও আসছে না নিয়ন্ত্রণে। আন্দোলন শুরু হওয়ার পর পরিবহন সংকটসহ নানা কারণে অনেক পণ্যের দাম আরও বেড়েছে।
বন্ধ কলকারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অর্থনীতিবিদদের মতে, ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় অর্থনীতির ক্ষতি বেশি হচ্ছে। তাদের হিসাবে, গত এক সপ্তাহে ক্ষতি হয়েছে ৮৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। যার দায় বহন করতে হবে সরকার, বেসরকারি খাত ও সাধারণ মানুষকে।
পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘সরকারের রাজস্ব প্রতিদিন ১ হাজার কোটি টাকা করে হচ্ছে না। সরকারের সরাসরি আয় কমে যাচ্ছে। মানুষের আয় যেমন কমছে সরকারের আয় তেমন কমছে। আমাদের রাজস্বর যে পরিস্থিতি সব মিলিয়ে আমাদের যে মূল্যস্ফিতির পরিস্থিতি তা আরো উস্কে গেল।’
অর্থনীতিবিদদের মতে, ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নিম্ন আয়ের মানুষ ও ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে আর্থিক সংকটের কারণে সরকার পারবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। আবার টাকার প্রবাহ বাড়লে মূল্যস্ফীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘কোভিড ছাড়া এই ধরণের অবস্থায় লম্বা সময় ধরে আমরা এর আগে পড়িনি। সরকার নানা ধরনের ব্যবস্থাপনা নিয়েছিল। তখন একটা সুযোগ ছিল সরকারের। কারণ তখন মূল্যস্ফীতি কম ছিল। তখন সরকারের রিজার্ভ ছিল রেকর্ড পর্যায়ের।’
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এমন অচলাবস্থা বৈশ্বিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। তাই দ্রুত অর্থনীতি সচল করার তাগিদ তাদের।