এবার ঈদে চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ৬০ শতাংশ ছুটিতে যাচ্ছেন। তবে সব ধরনের হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। ভর্তি রোগীদের সেবাও যথারীতি চলবে। এই সময় প্রতিদিন তদারকি করবেন ইউনিটপ্রধান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান জানান, চিকিৎসাসেবায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে সেটা নিশ্চিত করতে অমুসলিম চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি মুসলিমদের অনেকে ঈদে কর্মরত থাকবেন। এ বিষয়ে হাসপাতালগুলোকে জরুরি রোস্টার করতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে সরকারি হাসপাতাল রয়েছে ৬৫৪টি। এসব হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকের সংখ্যা ৩০ হাজার ২৭৩।
রাজধানীর শ্যামলীতে ২৫০ শয্যাবিশি
ষ্ট টিবি হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আয়শা আক্তার বলেন, ‘ঈদের ছুটিতেও হাসপাতালের জরুরি বিভাগ খোলা থাকে। দায়িত্বের জায়গা থেকে প্রতিনিয়ত খোঁজ রাখতে হয়। কয়েক বছর ধরে হাসপাতালে সহকর্মী-রোগী এঁদের সঙ্গে আমার ঈদের ছুটির সময়টুকু কাটে। এঁরাও তো পরিবারের অংশ।
নিটোরের পরিচালক ডা. কাজী শামীম উজজামান বলেন, ‘জরুরি চিকিৎসায় সেবা যাতে ব্যাহত না হয়, সে জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ডবয়কে রোস্টার করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাতে সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী ঈদের ছুটি ভোগ করতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি অন্য ধর্মাবলম্বীদের ছুটি না দিয়ে মুসলিমদের ছুটি দিতে। তার পরও বড় একটি অংশ ছুটি পাচ্ছে না। কারণ আমাদের তিন শিফট ম্যানেজ করতে হয়।’
শামীম উজজামান বলেন, ‘জরুরি পরীক্ষা বা অপারেশন করা নিয়েও কোনো সমস্যা নেই। ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস চালু থাকবে। যদি বড় কোনো সমস্যাও হয় আমরা চিকিত্সা দিতে পারব। আমি নিজেসহ জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবেন।’
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডা. মো. শফিউর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের জরুরি, মেডিসিন, সার্জারিসহ প্রতিটি বিভাগে ননমুসলিমদের দিয়ে রোস্টার করা হয়েছে। ঈদের ছুটিতে চিকিৎসক, নার্সসহ সবার খাবার ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থাপনায় ১৪ নির্দেশনা
গত ১০ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়, ছুটিকালীন কর্মস্থলে পর্যাপ্ত জনবল ও চিকিত্সাসেবা নিশ্চিত করতে ঈদের আগে ও পরে সমন্বয় করে পর্যায়ক্রমে ছুটি দিতে হবে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর জরুরি বিভাগ ও লেবার রুম, ইমার্জেন্সি ওটি, জরুরি ল্যাব, এক্স-রে সেবা সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে। ছুটি শুরুর আগেই ছুটির সময়ের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ, রি-এজেন্ট, সার্জিক্যালসামগ্রী মজুদ ও তাত্ক্ষণিকভাবে সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রতিষ্ঠানপ্রধান ঈদের দিন রোগীদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশন তদারকি করবেন এবং রোগীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। পশুর হাটের নিকটবর্তী স্বাস্থ্য স্থাপনাগুলোতে বিশেষ প্রস্তুতি নিতে হবে। জাতীয় ও জেলা ঈদগাহে মেডিক্যাল টিম দায়িত্ব পালন করবে।
(সৌজন্যে কালেরকন্ঠ)