বিমানের তেলেসমাতি কারবার !

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

অনলাইন:

প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক দেখাতে নানা ধরনের কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বিমান লোকসানে থাকলেও লাভজনক দেখাতে তার সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের লাভের অর্থ যুক্ত করেছে। অপরদিকে, দায় রয়েছে এমন তথ্য গোপন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিবরণীতে দায়ের পরিমাণ কম দেখানো হয়েছে। ভ্যাট-ট্যাক্স ও সুদ বাবদ বিমানের বিপুল পরিমাণ টাকা বকেয়া থাকলেও আয়-ব্যয়ের হিসাবে তা প্রদর্শণ করা হয়নি।

বিমানের পাঁচ বছরের স্থিতিপত্র, আয়-ব্যয় হিসাব ও লাভ-লোকসানের বিষয়ে বাণিজ্যিক অডিট অধিদফতরের এক প্রতিবেদন থেকে এ চিত্র পাওয়া গেছে। রবিবার (১২ মে) অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির তৃতীয় বৈঠকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিগত সময়ের অডিট আপত্তিগুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

অডিট বিভাগের প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, বিমানের ১১২টি অডিট আপত্তির মধ্যে অষ্টম, নবম ও দশম সংসদের সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি বেশ কিছু অডিট আপত্তির ক্ষেত্রে অনুশাসন নিষ্পত্তির সুপারিশ করে। রবিবারের বৈঠকে ওই সুপারিশগুলোর অগ্রগতি প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এতে দেখা গেছে, সুপারিশকৃত অডিটগুলোর কোনোটির কোনও অগ্রগতি নেই। সবগুলোর ক্ষেত্রে অডিট বিভাগ তার প্রতিবেদনে বলেছে, ‘অগ্রগতিমূলক পদক্ষেপ বা জবাব পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, এসব অডিটের সংশ্লিষ্ট অর্থের পরিমাণ ৩৫৮ কোটি ৮০ লাখেরও বেশি টাকা।

এদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিগত পাঁচ বছরের স্থিতিপত্র, আয়-ব্যয় হিসাব ও লাভ-লোকসান হিসাব ও এ হিসাবের প্রবণতার বিষয়ে বাণিজ্যিক অডিট অধিদফতরের মতামতে বলা হয়েছে, ‘আর্থিক বিবৃতি  ও লাভ-ক্ষতির হিসাবে বিমান তার সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান বিমান পল্ট্রি কমপ্লেক্স (বিপিসি) ও বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টারের (বিএফসিসি) অর্জিত নিট লাভ যোগ করে দেখিয়েছে। যার ফলে বিমান দৃশ্যগতভাবে নিট লাভ দেখালেও প্রতিষ্ঠানটির ২০২০ সালে ১০২ কোটি ৯৯ লাখ ৯৩ হাজার ৮৩৭ টাকা এবং ২০২৩ সালে ২৫ কোটি ৯১ লাখ ৮ হাজার ২৭৮ টাকা নিট ক্ষতি হয়েছে। এতে করে প্রতিষ্ঠানটির প্রকৃত আর্থিক অবস্থা প্রকাশ পাচ্ছে না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘বিমান ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভ্যালুয়েশনের ক্ষেত্রে তার দায়গুলোর তথ্য যুক্ত করেনি। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে ল্যান্ডিং চার্জ, বোর্ডিং চার্জ, ইজারা, সারচার্জ এবং বিভিন্ন চার্জের ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স বাবদ বিপুল পরিমাণ টাকা বকেয়া থাকলেও গত ৫ বছরের আর্থিক বিবরণীতে তা দায় হিসেবে দেখানো হয়নি। এছাড়াও পদ্মা অয়েল কোম্পানির কাছে বিলম্বিত জ্বালানি তেলের মূল্য পরিশোধের সুদ বাবদ বড় অঙ্কের টাকা বাকি থাকলেও সেটাও দায় হিসেবে দেখানো হয়নি। ফলে প্রতিষ্ঠানের দায়ের পরিমাণ কম দেখানো হয়েছে। বিলম্বিত জ্বালানি তেলের মূল্য পরিশোধের সুদ ও বিভিন্ন চার্জ বাবদ খরচগুলো নিয়মিত পরিশোধ করলে প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি পেতো এবং নিট লাভের পরিমাণ পরিবর্তন হতো।’

কোনও প্রতিষ্ঠানের ইক্যুইটি ও সুদের আদর্শমান ২.৫ এর কম থাকার কথা থাকলেও বিমানে এই হার বর্তমান ৭.১৩। এতে করে প্রতিষ্ঠানের দায় ও সুদ বেড়েই যাচ্ছে। বিষয়টি ব্যবসায় নীতির জন্য হমকি স্বরূপ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

বাণিজ্যিক অডিট অধিদফতরের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী বিমানের প্রকৃত দায় এক হাজার ৭৫ কোটি ৪ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। কিন্তু ২০২১ সালে ৬২২ কোটি ২০ লাখ ৫২ হাজার টাকা কম দেখানো হয়েছে। এই দায় কম দেখানো বর্তমান অর্থবছরেও অব্যাহত আছে। যার ফলে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিবরণীতে দায়ের পরিমাণ সঠিক দেখানো হচ্ছে না। পেনশন ও গ্র্যাচুইটির বিপরীতে প্রভিশন  যথাযথভাবে প্রতিবছর রাখা হলে নিট লাভের পরিমাণ কম হতো বা নিট লস হতো বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।

বিমান গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং পরিষেবা থাতের আয় এয়ারলাইন্স ব্যবসা-বহির্ভূত হলেও এ খাতের আয়কে বিমানে আয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বাণিজ্যিক অডিট অধিদফতরের প্রতিবেদন অনুযায়ীম জুন ২০২৩ সমাপ্ত বছরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের  নিট লাভ প্রদর্শন করা হয়েছে ২৮ কোটি ৬৫ লাখ ২৭ হাজার ৪৪১ টাকা। এর মধ্যে বিমান পোলট্রি কমপ্লেক্সের নিট লাভ দুই কোটি ২০ লাখ ১২ হাজার ৬৫২ টাকা এবং বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টারের  নিট লাভ ৪৬ কোটি ২৩ লাখ ৭৪ হাজার ৭১৫ টাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। গত অর্থ বছরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিট ক্ষতি হয়েছে ২৫ কোটি ৯১ লাখ ৮ হাজার ২৭৮ টাকা। অর্থাৎ এয়ারলাইন্স ব্যবসা-বহির্ভূত বিপিসি’র পোলট্রি ও কৃষি পণ্য এবং বিএফসিসি’র উৎপাদিত খাবার বিক্রির লাভ বিমানের নিট লাভ অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।

অডিট অধিদফতরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অর্থবছরে বিমান আয় দেখিয়েছে ৯ হাজার ৫২১ কোটি ২৪ লাখ ৬৫ হাজার ৫৭৩ টাকা এবং ব্যয় দেখিয়েছে  সাত হাজার ৮’শ কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার ৯৬৭ টাকা। আয়ের মধ্যে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিস বাবদ এক হাজার ২০৭ কোটি ৭৭ লাখ ৭২ হাজার ৮২৬ টাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা এয়ারলাইন্স ব্যবসা-বহির্ভূত। আর্থিক বিবৃতিতে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন অথরিটির সারচার্জ এবং ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ ৩ হাজার ৮৬৫ কোটি ৬১ লাখ এক হাজার বিমানের দায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি।

দেরিতে জ্বালানি তেলের মূল্য পরিশোধ করায় পদ্মা অয়েল কোম্পানির বিলম্ব সুদ বাবদ ৯৭০ কোটি ৩৩ লাখ ৮৪ হাজার ৫১৫ টাকাও বিমান তার আর্থিক হিসেবে দায় হিসেবে দেখায়নি।

এদিকে ২০২১ সালে সরকারের কাছ থেকে ইক্যুইটি হিসেবে ৬৮৩ কোটি ৭৭ লাখ ৪১ হাজার ১০৯ টাকা পায় বিমান। শর্তানুসারে শেয়ার মূলধন খাতে প্রাপ্ত ওই অর্থ ৬ মাসের মধ্যে আইনগতভাবে শেয়ার মূলধনে রূপান্তরিত করতে হবে। কিন্তু বিমান ওই অর্থ শেয়ার মূলধনে রূপান্তর করেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্যিক অডিট অধিদফতরের পরিচালক মুহাম্মদ খাদেমুল বাশার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কোনও প্রতিষ্ঠানের লাভ-লোকসান দেখাতে হলে ওই প্রতিষ্ঠানেরই হিসাবকে প্রদর্শণ করতে হবে। কিন্তু বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তাদের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের আয়কে বিমানের আয় দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক দেখিয়েছে। এছাড়া লাভ-লোকসানের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের দায়-দেনা সবই অন্তর্ভুক্ত হবে। কিন্তু কিছু বিষয় তাদের আর্থিক হিসাব বিবরণীতে যুক্ত করা হয়নি। যেগুলো যুক্ত হয়নি তার সবই তাদের দায়। তারা যে আর্থিক হিসাব দিয়েছে, তাতে প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত চিত্র উঠে আসেনি।’

লাভজনক দেখাতে নানা ধরনের কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বিমান লোকসানে থাকলেও লাভজনক দেখাতে তার সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের লাভের অর্থ যুক্ত করেছে। অপরদিকে, দায় রয়েছে এমন তথ্য গোপন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিবরণীতে দায়ের পরিমাণ কম দেখানো হয়েছে। ভ্যাট-ট্যাক্স ও সুদ বাবদ বিমানের বিপুল পরিমাণ টাকা বকেয়া থাকলেও আয়-ব্যয়ের হিসাবে তা প্রদর্শণ করা হয়নি।

বিমানের পাঁচ বছরের স্থিতিপত্র, আয়-ব্যয় হিসাব ও লাভ-লোকসানের বিষয়ে বাণিজ্যিক অডিট অধিদফতরের এক প্রতিবেদন থেকে এ চিত্র পাওয়া গেছে। রবিবার (১২ মে) অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির তৃতীয় বৈঠকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিগত সময়ের অডিট আপত্তিগুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

অডিট বিভাগের প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, বিমানের ১১২টি অডিট আপত্তির মধ্যে অষ্টম, নবম ও দশম সংসদের সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি বেশ কিছু অডিট আপত্তির ক্ষেত্রে অনুশাসন নিষ্পত্তির সুপারিশ করে। রবিবারের বৈঠকে ওই সুপারিশগুলোর অগ্রগতি প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এতে দেখা গেছে, সুপারিশকৃত অডিটগুলোর কোনোটির কোনও অগ্রগতি নেই। সবগুলোর ক্ষেত্রে অডিট বিভাগ তার প্রতিবেদনে বলেছে, ‘অগ্রগতিমূলক পদক্ষেপ বা জবাব পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, এসব অডিটের সংশ্লিষ্ট অর্থের পরিমাণ ৩৫৮ কোটি ৮০ লাখেরও বেশি টাকা।

এদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিগত পাঁচ বছরের স্থিতিপত্র, আয়-ব্যয় হিসাব ও লাভ-লোকসান হিসাব ও এ হিসাবের প্রবণতার বিষয়ে বাণিজ্যিক অডিট অধিদফতরের মতামতে বলা হয়েছে, ‘আর্থিক বিবৃতি  ও লাভ-ক্ষতির হিসাবে বিমান তার সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান বিমান পল্ট্রি কমপ্লেক্স (বিপিসি) ও বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টারের (বিএফসিসি) অর্জিত নিট লাভ যোগ করে দেখিয়েছে। যার ফলে বিমান দৃশ্যগতভাবে নিট লাভ দেখালেও প্রতিষ্ঠানটির ২০২০ সালে ১০২ কোটি ৯৯ লাখ ৯৩ হাজার ৮৩৭ টাকা এবং ২০২৩ সালে ২৫ কোটি ৯১ লাখ ৮ হাজার ২৭৮ টাকা নিট ক্ষতি হয়েছে। এতে করে প্রতিষ্ঠানটির প্রকৃত আর্থিক অবস্থা প্রকাশ পাচ্ছে না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘বিমান ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভ্যালুয়েশনের ক্ষেত্রে তার দায়গুলোর তথ্য যুক্ত করেনি। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে ল্যান্ডিং চার্জ, বোর্ডিং চার্জ, ইজারা, সারচার্জ এবং বিভিন্ন চার্জের ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স বাবদ বিপুল পরিমাণ টাকা বকেয়া থাকলেও গত ৫ বছরের আর্থিক বিবরণীতে তা দায় হিসেবে দেখানো হয়নি। এছাড়াও পদ্মা অয়েল কোম্পানির কাছে বিলম্বিত জ্বালানি তেলের মূল্য পরিশোধের সুদ বাবদ বড় অঙ্কের টাকা বাকি থাকলেও সেটাও দায় হিসেবে দেখানো হয়নি। ফলে প্রতিষ্ঠানের দায়ের পরিমাণ কম দেখানো হয়েছে। বিলম্বিত জ্বালানি তেলের মূল্য পরিশোধের সুদ ও বিভিন্ন চার্জ বাবদ খরচগুলো নিয়মিত পরিশোধ করলে প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি পেতো এবং নিট লাভের পরিমাণ পরিবর্তন হতো।’

কোনও প্রতিষ্ঠানের ইক্যুইটি ও সুদের আদর্শমান ২.৫ এর কম থাকার কথা থাকলেও বিমানে এই হার বর্তমান ৭.১৩। এতে করে প্রতিষ্ঠানের দায় ও সুদ বেড়েই যাচ্ছে। বিষয়টি ব্যবসায় নীতির জন্য হমকি স্বরূপ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

বাণিজ্যিক অডিট অধিদফতরের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী বিমানের প্রকৃত দায় এক হাজার ৭৫ কোটি ৪ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। কিন্তু ২০২১ সালে ৬২২ কোটি ২০ লাখ ৫২ হাজার টাকা কম দেখানো হয়েছে। এই দায় কম দেখানো বর্তমান অর্থবছরেও অব্যাহত আছে। যার ফলে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিবরণীতে দায়ের পরিমাণ সঠিক দেখানো হচ্ছে না। পেনশন ও গ্র্যাচুইটির বিপরীতে প্রভিশন  যথাযথভাবে প্রতিবছর রাখা হলে নিট লাভের পরিমাণ কম হতো বা নিট লস হতো বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।

বিমান গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং পরিষেবা থাতের আয় এয়ারলাইন্স ব্যবসা-বহির্ভূত হলেও এ খাতের আয়কে বিমানে আয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বাণিজ্যিক অডিট অধিদফতরের প্রতিবেদন অনুযায়ীম জুন ২০২৩ সমাপ্ত বছরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের  নিট লাভ প্রদর্শন করা হয়েছে ২৮ কোটি ৬৫ লাখ ২৭ হাজার ৪৪১ টাকা। এর মধ্যে বিমান পোলট্রি কমপ্লেক্সের নিট লাভ দুই কোটি ২০ লাখ ১২ হাজার ৬৫২ টাকা এবং বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টারের  নিট লাভ ৪৬ কোটি ২৩ লাখ ৭৪ হাজার ৭১৫ টাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। গত অর্থ বছরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিট ক্ষতি হয়েছে ২৫ কোটি ৯১ লাখ ৮ হাজার ২৭৮ টাকা। অর্থাৎ এয়ারলাইন্স ব্যবসা-বহির্ভূত বিপিসি’র পোলট্রি ও কৃষি পণ্য এবং বিএফসিসি’র উৎপাদিত খাবার বিক্রির লাভ বিমানের নিট লাভ অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।

অডিট অধিদফতরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অর্থবছরে বিমান আয় দেখিয়েছে ৯ হাজার ৫২১ কোটি ২৪ লাখ ৬৫ হাজার ৫৭৩ টাকা এবং ব্যয় দেখিয়েছে  সাত হাজার ৮’শ কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার ৯৬৭ টাকা। আয়ের মধ্যে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিস বাবদ এক হাজার ২০৭ কোটি ৭৭ লাখ ৭২ হাজার ৮২৬ টাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা এয়ারলাইন্স ব্যবসা-বহির্ভূত। আর্থিক বিবৃতিতে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন অথরিটির সারচার্জ এবং ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ ৩ হাজার ৮৬৫ কোটি ৬১ লাখ এক হাজার বিমানের দায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি।

দেরিতে জ্বালানি তেলের মূল্য পরিশোধ করায় পদ্মা অয়েল কোম্পানির বিলম্ব সুদ বাবদ ৯৭০ কোটি ৩৩ লাখ ৮৪ হাজার ৫১৫ টাকাও বিমান তার আর্থিক হিসেবে দায় হিসেবে দেখায়নি।

এদিকে ২০২১ সালে সরকারের কাছ থেকে ইক্যুইটি হিসেবে ৬৮৩ কোটি ৭৭ লাখ ৪১ হাজার ১০৯ টাকা পায় বিমান। শর্তানুসারে শেয়ার মূলধন খাতে প্রাপ্ত ওই অর্থ ৬ মাসের মধ্যে আইনগতভাবে শেয়ার মূলধনে রূপান্তরিত করতে হবে। কিন্তু বিমান ওই অর্থ শেয়ার মূলধনে রূপান্তর করেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্যিক অডিট অধিদফতরের পরিচালক মুহাম্মদ খাদেমুল বাশার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কোনও প্রতিষ্ঠানের লাভ-লোকসান দেখাতে হলে ওই প্রতিষ্ঠানেরই হিসাবকে প্রদর্শণ করতে হবে। কিন্তু বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তাদের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের আয়কে বিমানের আয় দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক দেখিয়েছে। এছাড়া লাভ-লোকসানের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের দায়-দেনা সবই অন্তর্ভুক্ত হবে। কিন্তু কিছু বিষয় তাদের আর্থিক হিসাব বিবরণীতে যুক্ত করা হয়নি। যেগুলো যুক্ত হয়নি তার সবই তাদের দায়। তারা যে আর্থিক হিসাব দিয়েছে, তাতে প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত চিত্র উঠে আসেনি।

( বাংলা ট্রিবিউনের সৌজন্যে)

 

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০