ব্রিকলেন:
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এশিয়ার লৌহমানবী (আয়রন লেডি) উল্লেখ করে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িক দ্য ইকোনমিস্ট বলেছে, ১৭ কোটি মানুষের দেশে দারিদ্র বিমোচনে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
‘শেখ হাসিনা ইজ আ এশিয়া’জ আয়রন লেডি’ শিরোনামে বুধবার এক সাক্ষাৎকার ভিত্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য ইকোনমিস্ট। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় ভার্জিনিয়ার এক হোটেলে এই সাক্ষাৎকার নেয়া হয়।
ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী নারী সরকার প্রধান এবং উভয় লিঙ্গের রাষ্ট্র প্রধানদের মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য একজন ব্যক্তিত্ব। ক্ষমতায় থাকার দুই দশকের মধ্যে ১৭ কোটি মানুষের দেশে দারিদ্র্য বিমোচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তিনি সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার নেতৃত্বের বেশিরভাগ সময়ই দেশের বার্ষিক গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল সাত শতাংশের ঘরে।
‘৭৫ বছর বয়সী এই নেতার নেতৃত্বে তার দল আওয়ামী লীগ পরপর তিনটি নির্বাচনে জয়লাভ করেছে এবং সবমিলিয়ে চারবার। ইন্দিরা গান্ধী বা মার্গারেট থ্যাচারের চেয়ে বেশিদিন সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন শেখ হাসিনা। আগামী বছরের শুরুর দিকে বাংলাদেশে যে জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে সেই নির্বাচনেও জয়ী হবেন বলে তিনি আশা করছেন।’
সাক্ষাৎকারে ইকোনমিস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রেখেছিল যে, নির্বাচন নিয়ে তিনি কী প্রত্যাশা করেন। জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমি এই দেশকে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশ হিসেবে দেখতে চাই।
ইকোনমিস্ট বলছে, আগামী নির্বাচন বিএনপিকে ক্ষমতায় ফেরার পথ দেখাবে না। শেখ হাসিনা একটি স্বাধীন ভোটের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে দাবি করেছেন। তিনি অর্ধ শতাব্দী আগে সেনা শাসনের অধীনে গঠিত বিএনপিকে ‘একজন সামরিক শাসক কর্তৃক অবৈধভাবে গঠিত’ বলে অভিযুক্ত করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় ইসলামি দল পাকিস্তানের সাবেক মিত্র এবং সেই দলের প্রায় সবাই যুদ্ধাপরাধী। আমাদের বক্তব্য হল যে, এমন কোনো দল নেই (আওয়ামী লীগ ছাড়া) যারা সত্যিই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। ইকোনমিস্টের বিশ্লেষণ, শেখ হাসিনার শক্ত হাতে সরকার পরিচালনা থেকে কোনো না কোনোভাবে বাংলাদেশ উপকৃত হয়েছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা আমার ভাইকে, আমার মাকে, মাত্র ১০ বছর বয়সী আরেক ভাইকে হত্যা করেছে। আমার দুই চাচাতো বোন, আমার একমাত্র চাচা, যিনি একজন প্রতিবন্ধী ছিলেন- তাদেরকেও হত্যা করেছে।’
দুর্নীতি বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সামরিক সরকারকে দায়ী করেন শেখ হাসিনা। তিনি পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের অস্তিত্বহীন দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়টি তুলে ধরেন।
দুর্নীতির বিষয়ে প্রশ্নে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, হয়তো নিচের স্তরে দুর্নীতি হয়, কিন্তু আজকাল তেমনটা হচ্ছে না। তারা এটা করার সাহস দেখালে আমি ব্যবস্থা নেব।