আওয়ামী লীগই ভোটে জিতবে – শেখ হাসিনা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

 জেলে বসেই করে ছিলেন উন্নয়ন পরিকল্পনা 

জুয়েল রাজ:
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগই ভোটে জিতবে, আজ ৭ মে লন্ডনে নাগরিক সংবর্ধনায়  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মন্তব্য করেন।
ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক  অনুষ্ঠানে অংশ নিতে লন্ডনে অবস্থান করছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের দেয়া এক নাগরিক সংবর্ধনায়  নানা পেশার মানুষের সাথে হাজারো দলীয় নেতাকর্মী  যোগ দিয়েছিলেন সেই সংবর্ধনা  অনুষ্ঠানে।  প্রধানমন্ত্রী  তাঁর বক্তব্যে, প্রবাসীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের ও আহবান জানান।  যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ এর সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুকের পরিচালনায়,  সংবর্ধনা সভায় দীর্ঘ বক্তব্যে তিনি ১৯৭৫ সালের বিভীষিকাময় স্মৃতির কথা উল্লেখ করে বলেন।  ভারত থেকে আমি লন্ডনে আসার বিমানের টিকেট কিনার টাকা ছিল না বলে রেহানার বিয়েতে আসতে পারি নাই। পরে যখন সে সন্তান সম্ভবা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী  ইন্দিরা গান্ধী সে সময় সব ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। লন্ডনে আসার পর  বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের  আন্তর্জাতিক  তদন্ত কমিশন গঠন করেছিলাম।   ২১ বছর পর যখন আমরা  সরকার গঠন করার সুযোগ পাই,  তখন বঙ্গবন্ধু  হত্যা মামলার কার্যক্রম শুরু করি। বিভিন্ন বুদ্ধিজীবিরা যখন বাংলাদেশে হিউম্যান রাইটস নিয়ে  প্রশ্ন তুলে তখন আমার শুধু মনে হয় আমাদের কি হিউম্যান  রাইটস ছিলনা। একটা মামলা পর্যন্ত করার অধিকার আমাদের ছিল না। তখন তো কেউ প্রশ্ন তুলেন নি। আমার ছোট ভাই  শেখ রাসেল কি অপরাধ করেছিল আমার মা কি অপরাধ করেছিল। আমার দুই ভাই তো মুক্তিযোদ্ধা ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন সেইসব খুনীদের জিয়া,   বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছিল।  খালেদা জিয়া ফিরিয়ে এনে পররাষ্ট্র দপ্তরে চাকরী দেয়। ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে রশিদ কে বিরোধী দলীয় নেতা বানায়,  খুনীদের বারবার পুরস্কৃত করা। কি প্রমাণ করে?
২০০১ সালের নির্বাচনের কথা একবার স্মরণ করেন। আমাদের কত নেতাকর্মী  বিদেশে আসতে বাধ্য হয়েছে, চোখ উপড়ে দিয়েছে। বসত বাড়ি কে কেটে পুকুর বানিয়ে দিয়েছিল। আমাকে মিটিং করতে দেয়া হয়নি।  সেই  বিভৎস নির্যাতন  নিপীড়নের বিভিন্ন জায়গার তাঁর সফর কালীন ঘটনার  বর্ণনা দেন।  প্রধানমন্ত্রী বলেন এই রকম হাজার হাজার ঘটনা ঘটিয়েছে  বিএনপি জামায়াতের  জোট সরকার।
আমরা ১৯৯৬ সালে দেশকে আমরা যে জায়গায় রেখেছিলাম, তারা এসে সব ধ্বংস করে দেয়।
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ  স্বাক্ষরতার হার দম,বিদ্যুৎ উন্নয়ন,
সাংবাদিকদের  উদ্দেশ্যে তিনি বলেন
তারা আমাকে ভোট চোর  বলে
আমি জিজ্ঞাসা করি ভোট চোর বলার অধিকার কি তোমাদের আছে?এরা স্বাধীনতার  চেতনা, দেশের ভাবমূর্তি  বিনষ্টকারী খুনিদের দল।জীবনে রাজনীতি  করবে না মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয় এসেছিল। বিএনপি হচ্ছে ভোট ডাকাতের  দল।
জিয়াউর রহমান হ্যাঁ  না ভোট  কি ছিল দেশের মানুষ জানে।  সংবিধান ভঙ্গ করে একাধারে  সেনাপ্রধান ও   রাষ্ট্র প্রধান বনে যায় জিয়া।
প্রধানমন্ত্রী  বলেন, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে  কোন দল যখন সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় নাই।  রাষ্ট্রপতি সাহাবউদ্দিন আমাকে প্রস্তাব দেন,  জামায়াত ও জাতীয় পার্টি আপনাকে সমর্থন দিবে আপনি সরকার গঠন করতে পারেন।  আমি না করেছিলাম  জামায়াত আর জাতীয় পার্টিকে নিয়ে আমি সরকার গঠন করব না। দেশের মানুষ আমাদের নির্বাচিত করলেই তবে সরকার গঠন করব।
আওয়ামী লীগ ভোট চুরি করে বা ক্ষমতা দখল করে রাষ্ট্র ক্ষমতায়  আসে নাই। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে।
১৯৯৬ সালে সরকারে থাকা অবস্থায় আমেরিকা আমাকে প্রস্তাব দিল গ্যাস বিক্রি  করতে হবে। আমি জানিয়ে দিলাম দেশের  চাহিদা পূরণ করে, ৫০ বছরের রিজার্ভ রেখে  তবেই আমরা গ্যাস  বিক্রি করব। আপনারা আগে সার্ভে করুন কি পরিমাণ গ্যাস আমাদের  মজুদ আছে।  তারা সার্ভে করতে পাঠায়,  প্রথম বার
সার্ভের পরেই  আর কথা বলে না।  বললাম জনগণের সম্পদ আমি বিক্রি করতে পারি না।
লতিফুর রহমান এর তত্বাবধায়কের  সময় একই আলোচনা।  গ্যাস বিক্রি  করতে হবে, আমি বললাম গ্যাসই নাই বিক্রি  করব কোথা থেকে।বিএনপি মুচলেকা দিয়ে আসল। আমি সেদিন বলেছিলাম আল্লাহ মন বুঝে ধন দেয়,  আপনি গ্যাস বিক্রি করতে পারবেন না। তাই হয়েছিল। বিএনপি ক্ষমতায় এসে এক ফোঁটা গ্যাস ও পায় নাই ।  আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা  এনেছি, সার্বভৌমত্ব  রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।
এক এগারোতে যখন আমাকে জেলে দিল, কোন কাজ নেই, জেলে বসে বসে লিখতে শুরু করি,  যদি কখনো  ক্ষমতায় যাই  কি কি করব।  যার ফলশ্রুতিতে  আমরা ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভিশন ২০২১ নির্বাচনী ইশতেহারে নিয়ে এসেছিলাম।
জেল খানার স্মৃতিচারণে  শেখ হাসিনা বলেন, সেই সময়ের ডিজিএফ আই এর প্রভাবশালী কর্মকর্তা  আমিন আমাকে এসে বলেন আপনাকে নির্বাচন করতে হবে না, আপনি প্রধানমন্ত্রীর  মর্যাদায় থাকবেন। তাঁকে বলেছিলাম ১৯৫৪ সালে আমার বাবা মন্ত্রী ছিলেন।
আমি এসব চাই না নির্বাচন চাই।
২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় জড়িত ছিল জেনারেল বারি,  বারিই তারেক কে ঠিকমত ঝাড়ি দিয়েছিল  লাত্থি গুতা দিয়েছিল।তারেক রহমান মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে এসেছিল বিদেশে।
২০০৮ সালের নির্বাচনে ২০ দলের জোট ছিল তাদের  ৩০ টা সিট পেয়েছিল। সেই নির্বাচন নিয়ে তো কোন প্রশ্ন বিএনপির ও নেই। তাহলে তাদের জনপ্রিয়তা তো প্রমাণিত।
তারা বলেন, বাংলাদেশে নাকী কোন উন্নতি হয় নাই।  বাংলাদেশ কে ধ্বংস করে দিয়েছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী  ধারাবাহিক ভাবে, দেশের
প্রবৃদ্ধি  থেকে শুরু করে, মাথাপিছু  আয়,  মুদ্রাস্ফতি,
বাজেটের আকার,  জিডিপি, বৈদেশিক রিজার্ভ  থেকে শুরু করে প্রতিটা সেক্টরে সর্বশেষ ১৪ বছরে তাঁর সরকারের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী  বলেন যে, কোবিড এবং ইউক্রেন যুদ্ধের  বিশ্ব প্রভাবের পরও আমাদের যে রিজার্ভ   এখনো আছে।  পাঁচ মাসের খাদ্য কেনার ক্ষমতা আছে বাংলাদেশের।
তিনি বলেন বাংলাদেশে কেউ হৃতদরিদ্র থাকবে নে।
খালেদা জিয়ার উন্নয়নের গতিতে  নীচে নামতে নামতে বিদ্যুতের উৎপাদন ৩২০০ মেগাওয়াটে নেমে এসেছিল।   আর এখন ২৫ হাজার মেগাওয়াট।
খালেদা জিয়ার মট্রিক পাশ নিয়ে ও রসিকতা করে বলেন  বাংলাদেশের মেয়েদের ৯৮ শতাংশের উপরে মেয়েরা শিক্ষা গ্রহণ করছে।
পেয়াজ উৎপাদন থেকে শুরু করে সেক্টর ধরে ধরে তুলে ধরেন।  ডিজিটাল  বাংলাদেশ গঠনে তাঁর সরকারের ভূমিকা উল্লেখ করে, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন মহিলাদের কর্মসংস্থানে আমরা গুরুত্ব  দিয়েছি,  সংসারের কাজ ও  এখন কর্মসংস্থানের হিসাবে ধরা হবে। তিনি বলেন, দেশে একজন মানুষ ও  গৃহহীন  থাকবে না।
চলতি রোজায়  ইফতার পার্টি র বদলে দলীয় নেতাকর্মীদের   খাবার  বিতরণের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি, নেতা কর্মীরা তাই করেছে। কোন মানুষ না খেয়ে থাকেনি। এখন চলছে ধান কাটার মৌসুম আমাদের দলের  নেতাকর্মীরা সেখানে ধান কেটে কৃষকদের সাহায্য করছে। বলেছি দেশের এক ইঞ্চি জায়গা ও অনাবাদি থাকবে না।  প্রধানমন্ত্রী  মুচকি হেসে বলেন  নিজেদের ক্ষেতের জমি চাষ করে  ২০০ মন ধান পেয়েছেন এবার। লন্ডনে আসার আগে নাকী গণভবনে ছাগলের দুইটি বাচ্চা ও দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী  বলেন,  আমরা হাইটেক পার্ক সহ ইকোনমি  অঞ্চল তৈরী করেছি। সেখানে  প্রবাসীদের জন্য আলাদা জোন থাকবে। খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ  ব্যবসায় আপনারা বিনোয়োগ করতে পারেন। এয়ার বাসের সাথে চুক্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, বিমান এ দুইটি কার্গো  বিমান ও আরো  ৮ টি যাত্রীবাহী বিমান যোগ হবে বিমানের বহরে।
এক পর্যায়ে বলেন বুড়ো মানুষ আর কত বকবক করবো। অনেকক্ষণ এখানে দাঁড়িয়ে বকবক করছি।
বিএনপির নির্বাচন বাণিজ্য নিয়ে বলেন,  তারা ৩০০ আসনে ৯০০ প্রার্থীকে মনোনয়ন  দেয়, নির্বাচনে জিতবে না জেনে,  ভোটের দিন দুপুর বেলা তারা নির্বাচন  থেকে সরে আসলো।
তারেক রহমানের ৪০ কোটি টাকা ফিরিয়ে আনার কথা উল্লেখ করে বলেন, এই  খুনি,  লুটেরা  চোরের দল যাতে আর ক্ষমতায় না আসতে পারে  সেই দিকে খেয়াল রাখতে  হবে, আগামী নির্বাচনে ও আওয়ামী লীগ ই ভোটে জিতবে। ৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০