লন্ডনে ভাষা শহীদদের স্মরণ করলো যুক্তরাজ্যের ঢাবি অ্যালামনাইরা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
তানভীর আহমেদ –
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইদের সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকের উদ্যোগে ৫২’র ভাষা শহীদদের স্মরণে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। শনিবার পূর্ব লন্ডনের বার্কিং রিপল সেন্টার আয়োজিত শহীদ দিবসের আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মুক্তিযোদ্ধা ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ বলেন, উর্দূকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার স্বরযন্ত্রের জোরালো প্রতিবাদ প্রথম উচ্চারিত হয়েছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সুলতান মাহমুদ শরীফ রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, ভাষাবিদ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা ও ভাষা শহীদ সালাম, বরকত, রফিক ও জব্বারের আত্নত্যাগের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ব্রিটেনের ‘কিং কাউন্সেল’ ব্যারিস্টার মোজাম্মেল হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকের পরিচালনায় পরিষদের সদস্য সাংবাদিক তানভীর আহমেদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের পরিচালনা পরিষদের সদস্য থার্ড সেক্টর কনসালটেন্ট বিধান গোস্বামী। সংগঠনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার চৌধুরী হাফিজুর রহমান ও ব্যারিস্টার কাজী আশিকুর রহমান সহ অন্যরা। বক্তারা বলেন, ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মচারীরা যে প্রতিবাদের সূচনা করেছিলেন সেই আন্দোলন পরবর্তীতে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিলো। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেভাবে নেতৃত্ব দিয়েছে বিদেশে বসেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইরা দেশের জন্য কাজ করতে নেতৃত্বের ভূমিকা রাখছে। লন্ডনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও বসন্ত উৎসব উৎযাপনের মধ্যদিয়ে ব্রিটেনে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্ম তাদের মাতৃভাষা, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাবে বলে মনে করেন বক্তারা।

দিনের শুরুতে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তরাজ্যে বসবাসরত শিল্পীরা। একুশে গানের রচয়িতা প্রয়াত আবদুল গাফফার চৌধুরীর লেখা অমর সঙ্গীত আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো গানটি পরিবেশন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত অ্যালামনাই ও প্রখ্যাত এই সাংবাদিককে শ্রদ্ধা জানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকে। অনুষ্ঠানে ‘তোমাকে উপড়ে নিলে বলো তবে কী থাকে আমার?’ শীর্ষক বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করে ব্রিটেনের আবৃত্তি সংগঠন বর্ণন।

বাংলাদেশের প্রখ্যাত ভিজ্যুয়াল আর্টিস্ট প্রিমা নাজিয়া আন্দালিব মুক্তিযুদ্ধে বীরাঙ্গনাদের আত্নত্যাগের বিষয়টি চিত্রকলার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন উপস্থিত দর্শকদের মাঝে। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সাবেক শিক্ষার্থী শিল্পী মাসুদ মিজানের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক একক চিত্র প্রদর্শণীর ব্যবস্থাও ছিলো। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, ভাষা ও বসন্ত শীর্ষক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিশু কিশোরদের তিনটি বিভাগে সেরা ৯ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা ও বসন্ত উৎসবের সার্বিক সহযোগিতা করেন, পলি জাহান, ফাতেহা পলি, ফাতেমা লিলি, রথিন্দ্র গোস্বামী, নিখিল সাহা, শায়লা শিমলা ও শামীমা খানম শিপ্রা।

অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন সঙ্গীত শিল্পী সারোয়ার ই আলম, রুপী আমীন,আশফাক বিন রউফ সহ অন্যরা। নৃত্য পরিবেশন করেন চৈতী রায়, উষারা আশাবরী রশীদ ও জয়িতা পাল। বসন্ত উৎসবের প্রায় সহস্রাধিক পিঠা ও সন্দেশ তৈরী করে সকল অ্যালামনাইকে পরিবেশন করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকে’র পরিচালনা পরিষদের সদস্য শওকত আলী বেনু ও রেহানা আক্তারকে কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। এছাড়া বাংলাদেশ ‘ল’ এসোসিয়েশনের যুক্তরাজ্যের নব নিযুক্ত কমিটি যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের পরিচালনা পরিষদের সাথে যুক্ত রয়েছেন তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকে। পরে বসন্ত উৎসবের র্যাফেল ড্রর বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। র্যাফেল ড্র-র প্রথম পুরস্কার জিতেছেন জাহিদ-পপি শাহনেওয়াজ দম্পতি। দ্বিতীয় পুরস্কার জিতেছেন নাসিমা এহসান লাবনী, তৃতীয় পুরস্কার জিতেছেন তারানা রউফ কান্তা ও চতুর্থ পুরস্কার জিতেছেন সুলতানা রশীদ নাসরিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের পক্ষ থেকে র্যাফেল ড্র বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন পরিচালনা পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ হারুন উর রশীদ, প্রদীপ মজুমদার, পলি জাহান, ফাতেহা পলি, আমীরুল ইসলাম শাহীন ও জাকির হোসেন স্বপন।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১