বাবা দিবসে পৃথিবীর সকল বাবাদের প্রতি শুভেচ্ছা…
জুয়েল রাজঃ
চারপাশে ভারী নীল রঙের পর্দা, বিছানায় শুয়ে শুয়ে দিন, তারিখ, সময় কিছুই আর আজকাল বুঝে উঠতে পারেন না ইমরান আহমেদ৷ এখন আবার নতুন প্রচলন হয়েছে এনার্জি ভাল্ব। এই ভাল্বের ফ্যাকাশে আলো দেখলে বোঝার উপায় নাই যে এখন দিন নাকি রাত। এই এনার্জি ভাল্বগুলোকে চায়নিজ মেয়েদের মত মনে হয়। বাঙালি ফর্সা নারীদের মতো হলুদাভ শুভ্র না। আগের ভাল্বগুলো ছিল বাঙালি রমনীয় সুন্দর। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুয়ে এইসব আবোল তাবোল ভেবে যাচ্ছেন তিনি।
তার নিজের স্ত্রীর কথাও মনে পড়ে আজকাল খুব বেশী। মাঝে মাঝে অপরাধ বোধও কাজ করে। তিনি কি বড় বেশী অবহেলা করেছেন এই নারীর প্রতি?
ইশরাত আহমেদ। বিয়ের আগের টাইটেলটা কোনভাবেই মনে করতে পারছেন না ইমরান সাহেব। ইশরাত নামের সাথে একটা কিছু ছিল, কিন্ত কিছুতেই মনে আসছে না। কারণ বিয়ের পর স্বামীর নামের আহমেদ পদবী যুক্ত করেছিলেন। বিয়ের এতো বছর পর আর কিছুতেই মনে করতে পারছেন না সেই পদবী কি ছিল ইশরাতের। কাকতালীয়ভাবে ইমরান ইশরাত নাম দুটো কেমন মিলে গিয়েছিল। আজ বারবার ইশরাতের মুখটা ভাবতে চেষ্টা করছেন ইমরান সাহেব।
কতটা অবহেলা পেয়ে, অভিমান নিয়ে নীরবে চলে গেছে ইশরাত। কেউ না জানুক, ইমরান সাহেব তো জানেন। বড় অভিমানী ছিল মেয়েটা। নিশির সাথে ইমরান সাহেবের সম্পর্কের বিষয়টি জানতেন ইশরাত। এক কান দুই কান করে ইশরাতের কানেও ঠিকই পৌঁছেছিল ব্যাপারটি। কোনদিন হয়তো ক্ষমাও করে নি। ক্ষমা চাওয়ার সুযোগটুকো পান নি তিনি। হঠাৎ করেই হার্ট অ্যাটাক, মাত্র একদিন হাসপাতালে ছিল ইশরাত। সব অভিমান বুকে নিয়ে, সব ছেড়ে চলে যায়। ইমরানের পৃথিবী জুড়ে তখন শুধু ছেলে ইরফান আর ইরফান।
কত এলোমেলো ভাবনা এসে ভীড় করছে, ঠিক মতো কথা বলতে পারেন না, কথা জড়িয়ে যায়, কোন কিছুই মনেও রাখতে পারেন না। তবু এই ভাবনাগুলো কেন যে এইভাবে বারবার আসে!
ইমরান সাহেব খুব ভাল করেই জানেন, খুব বেশীদিন আর সময় নেই তার হাতে। মৃত্যু হয়তো এই হাসপাতালেরই কেবিন থেকে কেবিনে খুঁজে বেড়াচ্ছে ইমরান সাহেবকে। যখনই পেয়ে যাবে, ঠিক তখনই সব শেষ।
সারা জীবন শুনে আসলেন, মৃত্যুর আগে নাকি মানুষ আল্লাহ খোদা করে। সারা জীবন যারা নাস্তিকতার চর্চা করে, তারাও শেষ সময়ে এসে নিজেকে সমর্পণ করে। তার এসব কিছুই মাথায় আসছে না। মৃত্যুর পর আসলে কী হবে, কোথায় যাবেন, কী বিচার হবে – এসব একবারও তার ভাবনায় আসছে না কেন? তিনি বারবার চেষ্টা করছেন নিজেকে সমর্পন করতে। কিন্ত কিছুতেই পারছেন না। যতবার গভীরভাবে সমর্পণ করতে চাইছেন, তার মৃত স্ত্রীর মুখ, একমাত্র ছেলের মুখ ফিরে ফিরে আসে। আর ফিরে আসে নিশি।
হাসপাতালে আছেন কয়েক মাস ধরে। এর আগে আসা যাওয়ার মধ্যেই ছিলেন। দীর্ঘ চিকিৎসা নিয়েছেন ভারতে। বয়সের কারণে, ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধে পরাস্ত হয়ে গেছেন। জীবনের সাথে যুদ্ধ করতে করতে ক্যান্সারের কাছে এসে আর কুলিয়ে উঠতে পারেন নি।
তারুণ্যে/ কৈশোরে ??? লেখাপড়া শেষ করে, টু টু করে ঘুরে বেড়ানোই ছিল তার একমাত্র কাজ। তখনই এক বন্ধুর বোনের বিয়েতে গিয়ে নিশির সাথে তার পরিচয়। সেই থেকে, নানা পথ পাড়ি দিয়ে নিশির সাথে জড়িয়ে যায় জীবন। দুই ধর্মের মানুষ দুইজন, যদিও কেউই ধর্ম নিয়ে মাথা ঘামায় নি কোনদিন। কিন্ত যখন চুড়ান্ত সময় আসে, সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়ায় সমাজ, ধর্ম ও পরিবার। একরকম জোর করেই ইশরাতের সাথে বিয়ে দেয়া হয়। কিন্ত যতদূর জানেন ইমরান সাহেব, নিশি আর বিয়ে করেনি। কোন প্রতিবাদও করেনি, যোগাযোগও করেনি। একবার জানতেও চায় নি, ইমরান কেন এমন করেছো তুমি। এই যে অভিযোগ না করা, ইমরান সাহেবকে সেটি পুড়িয়েছে সবচেয়ে বেশী।
বিয়ের পর, নিশি কোন যোগাযোগ রাখেনি ইমরান সাহেবের সাথে, প্রথম প্রথম কিছুদিন ইমরান সাহেব চেষ্টা করেছিলেন নিশির সাথে যোগাযোগ রাখার। কিন্ত নিশি সেটা চায় নি। এখনকার মত যোগাযোগের এতো মাধ্যম ও ছিল না তখন। একটা সময় শরীরী নিশি জীবন থেকে হারিয়ে যায়। জীবন থেকে হারালে ও মন থেকে হারায় নি নিশি। যতবার যতভাবে চেষ্টা করেছেন ইশরাত কে ভালবাসতে, ঠিক ততোবারই অশরীরী নিশি এসে সামনে দাঁড়ায়। ইশরাতের সাথে একটা দূরত্ব থেকেই যায়। দীর্ঘ ২৫ বছরের সংসার জীবনে সেই দূরত্ব আর পাড়ি দিতে পারেন নি ইমরান সাহেব। নিশি এমন ভাবে জড়িয়ে গিয়েছিল জীবনে, ইমরান সাহেবের যা কিছু অর্জন৷ এর কারিগর ছিলেন নিশি। ব্যাংকার হিসাবে শুরু করেছিলেন চাকরী জীবন৷ কিন্ত নিশি সেটি চায়নি। নিশির পরামর্শ, নানা জায়গায় যোগাযোগ, প্রথম অফিস ভাড়া নেয়া, অফিসের ডিপোজিট দেয়া সবই করেছিল নিশি তার নিজের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে । বায়িং হাউজ দিয়ে শুরু করেছিলেন এখন ৫ টি গার্মেন্টসের মালিক। নিজের অফিসের কাজ শেষ করে বায়ারদের সাথে যোগাযোগ, ইমেইল আদান প্রদান সবই করে দিতেন নিশি। তাই চাইলে ও অস্বীকার করার, অথবা ভুলে যাওয়ার কোন সুযোগ ছিলনা। নিশির দূরত্বকে পাড়ি দিতে, ব্যবসার পিছনে পাগলা ঘোড়ার মত ছুটে বেড়িয়েছেন ইমরান। কিন্ত দিন শেষে পথের শেষে এসে দাঁড়ায় নিশি।
ইমরান সাহেব ভুল ছিলেন, নিশি ভুল ছিলেন, নাকী ইশরাত ভুল ছিল? ইমরান ভাবছেন… ইশরাতকে কখনো অসন্মান করেন নি তিনি, স্বামী হিসাবে যাবতীয় দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন। একটা বৈবাহিক সম্পর্ক কি শুধু দায়িত্ব পালনেই সীমাবদ্ধ? ইশরাত কে কি কখনো ভালবেসেছেন তিনি? ইশরাত ভাবনা থেকে চলে যায়, নিশি ভাবনা থেকে চলে যায়।
সেখানে হঠাৎ চলে আসে একমাত্র ছেলে ইরফান, কতোদিন হলো ছেলের মুখটা দেখেন না, আহারে সন্তান আমার। যার মুখ দেখে জীবনটাই বদলে গিয়েছিল পুরোটা। ব্যবসা আর ছেলে এই দুইই হয়ে উঠে তার বেঁচে থাকার অবলম্বন। ইশরাতের উপস্থিতি সেখানে একেবারেই আটপৌরে আসবাব এর মতো। মেয়েরা নাকী পিতৃভক্ত হয়, ছেলেরা হয় মাতৃভক্ত। কিন্ত ইরফান সাহেবের ক্ষেত্রে ঠিক তার উল্টো হয়েছে। একমাত্র ছেলে হয়ে গেছে পিতৃভক্ত। বাবা মানেই সব, সারাদিন মায়ের সাথে লেপ্টে থাকলে ও বাবাকে পাওয়া মাত্র আর কিছুই ছেলে বুঝেনা। তাবিজের মতো গলায় লটকে থাকে সে ছেলে। মাঝরাতে ঘুম থেকে জেগেও বাপের বুকের উপর শুয়ে থাকে।
স্কুল, কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় পুরোটা সময়ই বাপ অন্ত প্রাণ ছিল ইরফান, স্কলারশীপ নিয়ে চলে যায় আমেরিকা, সেখানেই এখন স্থায়ী আবাস। বিদেশী মেম বিয়ে করেছে, উত্তর আমেরিকার কোন এক দেশ, বারবার সেই দেশের নাম ভুলে যান তিনি। একমাত্র নাতিন একটু একটু কথা বলতে শিখেছে, স্মার্টফোন আসাতে এখন ভিডিও কলে কথা বলা যায়। নাতিনের মুখ ছেলের মুখ, ভাবতে ভাবতেই এক সময় গভীর ঘুমে তলিয়ে যান ইমরান সাহেব।
তবে কি মারা যাচ্ছেন তিনি, ক্যান্সারের উপসর্গ ব্যাথা কিছুই আজকাল বুঝেন না। অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাথা নাশকের কারণে, নাকী নিজেই ব্যাথার উর্ধ্বে উঠে গেছেন বুঝে উঠতে পারছেন না।
দুচোখ জুড়ে ঘুম আসছে, মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে নিশি, গুণগুণ করে গাইছে,” যদি আরো কারে ভালোবাসো, যদি আরো ফিরে নাহি আসো, তবে তুমি যাহা চাও তাই যেন পাও, আমি যত দুঃখ পাই গো” মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে নিশি, ইমরান তোমার কি খুব ঘুম পাচ্ছে? ইমরান শুনছেন সব, কিন্ত উত্তর দিতে ইচ্ছে করছে না, নিশির গাঁয়ের গন্ধ পাচ্ছেন তিনি। আমাদের নেপাল যাওয়ার কী হলো? আমাদের কথা ছিল নেপালের সেই হোটেল থেকে হিমালয়ের সূর্যোদয় দেখব।
আর ও গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে আসছে তার চোখ, নার্সের পোষাক পরা বিছানার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ইশরাত। ইশরাত আবার নার্স হলো কবে, ইশরাত তো কবেই মরে গেছে। মানুষ কি মরলে নার্স হয়ে যায়? নিশি কোথায় গেল? আমাদের নেপাল যাওয়ার কথা। ইশরাত কি বলছে কিছুই আর শুনছেন না ইমরান সাহেব। কিন্ত নিশির গানের সুর দূর থেকে দূরে যাচ্ছে, আমি তোমার ও বিহনে রহিব ও বিলীন ও তোমাতে করিব বাস, দীর্ঘ দিবস, দীর্ঘ রজনী, দীর্ঘ বরষ ও মাস…..
লাগেজ ব্যাগ, সব কিছুই প্রস্তুত, দেশে যাবে ইরফান। আত্মীয় স্বজন যারা আছেন দেশে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছেন। বাবাকে দেখতে আসছেন তিনি। এক সময় বাবাই ছিল ইরফানের পৃথিবী, মায়ের মৃত্যুর পর সেটি আরো প্রকট হয়ে গিয়েছিল। বাবা ও ইরফানের জন্য আস্তে আস্তে ব্যবসা বাণিজ্য সব গুটিয়ে নিয়ে আসেন তিনি। মায়ের মৃত্যুর পর ইরফান তাঁর মাকে সবচেয়ে বেশী অনুভব করতে শুরু করে। যে ছেলে এক সময় বাবার জন্য পাগল ছিল, মায়ের মৃত্যুর পর নিজেকে আবিস্কার করে সেই শূণ্যতা।
বাবাকে ছেড়ে আমেরিকায় আসতে খুবই কষ্ট হয়েছিল ইরফানের। সেই যে আসা আর বাবার কাছে ফেরা হয়নি, মাঝে একবার দেশে গিয়েছিল মাত্র এক মাসের জন্য ছুটি কাটাতে। সেই শেষ যাওয়া তা ও ১০ বছর প্রায়। ইরফানের মেয়ে ও হয়েছে ঠিক তার মতো। সে ছেলেবেলায় বাপের গলায় ঝুলে থাকত, এই মেয়েও ঝুলে থাকে বাপের গলায়। মাত্র স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে, দিনশেষে সব গল্প তার জমা থাকে বাবার জন্য।
আজ স্কুল থেকে ফিরেই সেই মেয়ে বমি করছে, থামছে না কিছুতেই একসময় বমি করতে করতে নিস্তেজ হয়ে যায়, পাখির মত চঞ্চল মেয়েটি, ইরফান আর স্ত্রী মেয়েকে নিয়ে দৌঁড়ায় হাসপাতালে, বমির পর কাঁপিয়ে জ্ব্রর আসছে মেয়ের, বাবার হাত ধরে ঘুমিয়ে আছে, ডাক্তার রা নানা রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন, এখনো বুঝতে পারছেন না। বমি এবং জ্বরের কারণ কি।
রাত পোহালেই ফ্লাইট ইরফানের। তাঁর বাবা ডাক্তার নার্স, আত্মীয় স্বজন সবাইকে বারবার জিজ্ঞাসা করছেন, ইরফান আসে নাই? ইরফান কখন আসবে? বাবার জন্য ইরফানের বুক জুড়ে হাহাকার, কখন সে বাবাকে একবার গিয়ে জড়িয়ে ধরবে বুকে। মানুষটা সারা জীবন ইরফান ছাড়া কিছুই ভাবে নি। একদিকে পৃথিবী আর অন্যদিকে ইরফান। মায়ের অকাল মৃত্যুর পর চাইলেই বিয়ে করতে পারতেন তার বাবা। কিন্ত ছেলের জন্য আর সেদিকে পা বাড়ান নি। আত্মীয় স্বজনরা বারবার চাপ দিয়েছেন, কিন্ত কোন ভাবেই ইমরান সাহেব কে রাজী করানো যায় নি। তৃতীয় ভুল আর করতে চান নি ইমরান সাহেব। কারণ তিনি ভাল করেই জানতেন, নিশির ছায়া তাঁকে ছেড়ে যাবে না। তাই সেই পথে আর পা বাড়ান নি। ছেলে ইরফান কে অবলম্বন করেই পথ চলেছেন।
ইরফানের মেয়েটি তার হাত ধরে বসে আছে, নার্স আসছে, বারবার ব্লাড নিচ্ছে, এটা সেটা কতকিছু করছে, জ্বরের কারণে মাথা তুলতে পারছে না, নিষ্পাপ মুখের দিকে তাঁকিয়ে আছে ইরফান, ঠিক যেন তার মায়ের মুখের একটি বনসাই ভার্সন তার মেয়ের মুখটি। চোখ বন্ধ মেয়ে, ঘুমের ঘোরে জপছে বাবা, কোথাও যাবে না, বাবা কোথাও যাবে না, বাবা কোথাও যাবে না, লাভ ইউ বাবা, লাভ ইউ বাবা…
ইরফানের ফ্লাইটের সময় চলে যাচ্ছে, সারা রাত হাসপাতালে কাটিয়ে দিয়েছে। মেয়েটা এখন একটু ঘুমাচ্ছে…ডাক্তারী পরীক্ষার সব ফলাফল এখনো আসে নাই, আজকের মধ্যেই পেয়ে যাবে, ডাক্তাররা ধারণা করছে স্বাভবিক জ্বর বা বমি হওয়া নয়, অন্য কোন সমস্যা আছে হয়তো, নিশ্চিত হওয়ার আগে আসলে কিছুই বলছে না। ইরফান মেয়ের হাত এক মূহুর্তের জন্য ও ছাড়ছে না। ফ্লোরে বসেই সারা রাত কাটিয়ে দিয়েছে। দেশে যাওয়ার প্ল্যান আর মাথায় কোন ভাবেই আসছে না। ইরফান জানে তার বাবা একেবারে সায়াহ্নে এসে দাঁড়িয়েছন, বারবার তাকে দেখতে চাইছেন, কেউ তাঁকে দেখতে গেলেই জড়ানো অস্পষ্ট ভাবে জানতে চান ইরফান আসছে?
ইমরান সাহেব,একবার ঘুমে তলিয়ে যাচ্ছেন, আরেকবার নিশির গান ও একটু একটু শুনতে পাচ্ছেন,
নেপালের একটা হোটেলে, ছোট ইরফান নিশির কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে। নিশি ইরফানের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, হিমালয়ের উপড়ে ঊঁকি দিচ্ছে সকালের রোদ, জানালা দিয়ে সেই আলো পড়ছে ইরফানের মুখের উপড়। ইমরান চোখ খুলতে চাইছেন, কিন্তু সূর্যের আলোয় কিছুতেই তাকাতে পারছেন না। কিন্ত ইরফানের মুখটি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন।
ইরফান মেয়ের গালে আদর দিচ্ছে, কপালে আদর দিচ্ছে, আমি কোথাও যাচ্ছি না মা। চোখ মেলে দেখ মা, এই যে বাবা তোর পাশে দাঁড়িয়ে আছি, মেয়েটা তবু বিড়বিড় করছে লাভ ইউ বাবা, লাভ ইউ বাবা।