ইংল্যান্ড ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশি রবিন দাস

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

জুয়েল রাজঃ

ক্রিকেটের জন্মস্থান ইংল্যান্ড, আর ক্রিকেটের তীর্থস্থান  বলা হয় লর্ডসকে।  বৃহস্পতিবার থেকে  লর্ডসে শুরু হয়েছে নিউজিল্যান্ড বনাম ইংল্যান্ডের প্রথম টেস্ট। ৩৮তম ওভারে ফিল্ডিং করতে নামলেন এক তরুণ। কিন্তু তাঁর জার্সিতে না আছে কোনও নাম, না আছে নম্বর। ধারাভাষ্যকার  জানিয়ে দেন  রবিন এর নাম। অনেকেই হয়তো অবাক হয়েছেন, তাঁকে দেখে।  ইংল্যান্ডের জাতীয় দলে, এর আগে কেউ নাম পর্যন্ত শোনেন নি।রবিন অতিরিক্ত ফিল্ডার হিসাবে মাঠে নেমেছিলেন বৃহস্পতিবার। যদিও মাত্র চারটি ডেলিভারির সময় মাঠে ছিলেন তিনি। প্রশ্ন জাগাই স্বাভাবিক। জাতীয় দলের ১৩ জনের ঘোষিত তালিকায়  এই নামে  কেউ ছিলেন না।

মূলত  রবিন যখন মাঠে নামেন, তখন লর্ডস টেস্টে প্রথম একদশে সুযোগ না-পাওয়া হ্যারি ব্রুক এবং ক্রেগ ওভারটন অতিরিক্ত ফিল্ডার হিসাবে মাঠে ছিলেন। বাইরে গিয়েছিলেন স্টুয়ার্ট ব্রড। তার পরেও ম্যাটি পট্স চোট পাওয়ায় তৃতীয় একজন ক্রিকেটার দরকার ছিল। তাঁর জায়গাতেই ফিল্ডিং করেন রবিন। পটসের অসমাপ্ত ওভার শেষ করেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। সেই ওভার শেষ হতেই মূল দলের ব্রড মাঠে ফেরেন এবং রবিন উঠে যান।  মূলত  সংকটময় একটা পরিস্থিতিতে তাঁকে মাঠে নামতে বলে টিম ম্যানেজমেন্ট।আর এর ফলে বিশ্ব ক্রিকেটে এক  ইতিহাসের জন্ম দিলেন  রবিন। প্রথম কোন ব্রিটিশ বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত  ক্রিকেটার ইংল্যান্ড দলের হয়ে মাঠে নামার গৌরব অর্জন করলেন।  রবিনের ক্রিকেট খেলার পিছনে তার বাবা মৃদুল দাস ও বড়ভাই জনি’র অবদান সবচেয়ে।

রবিনের জন্ম  লন্ডনে, বাবা মৃদুল দাস পেশায় ব্যবসায়ী  বাবার জন্ম বাংলাদেশের সুনামগঞ্জে।  টেমস নদীর পাড়ে মেমসাহেব নামেএ রেস্টুরেন্টের মালিক তিনি। যাকে দেশে বিদেশে সবাই মনি দা নামেই চিনে।

২০ বছর বয়সের  রবিনের  ক্রিকেট ক্যারিয়ার খুব দীর্ঘ না হলেও, ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে খেলেন সাসেক্সের হয়ে। এখনও পর্যন্ত মাত্র একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন রবিন। ২০২০ সালের সেই ম্যাচে তিনি করেছিলেন ৭ রান। তবে ২০১৮ সালে এসেক্সের অনূর্ধ্ব-১৬ দলের হয়ে দুইশত রান  করেছিলেন  এসেক্স দ্বিতীয় একাদশের হয়েও খেলেছেন তিনি।

বলের হিসাবে মাত্র ৪ রান করলে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসায় ভাসছেন রবিন দাস।

লিভার সাংবাদিক  আবু সাঈদ চৌধুরী লিখেন,  এই দিনটির জন্য দীর্ঘসময় অপেক্ষায় ছিলাম। আমার মত যাঁরা দেশে খেলাধুলার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত ছিলেন। তাঁদের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক মূহুর্ত। আশাকরি সে একদিন মুল দলের একাদশে সুযোগ পাবে। রবিনের জন্য অগ্রিম শুভকামনা। অনেক ভারতীয় ও পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়দের এ দেশের মুল দলে খেলতে দেখে আক্ষেপ  হত। কবে যে, একজন ব্রিটিশ-বাংলাদেশী এ দেশের জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করবে। আশাকরি, রবিন দাসই হবে আমার আক্ষেপ ঘুচানোর হাতিয়ার।এসেক্স,কাউন্টি ক্রিকেট টিম ও তাঁদের টুইটারে ধন্যবাদ জানিয়েছে রবিন

রবিনের বাবা নিজেও খুব উচ্ছ্বসিত।  রবিনের এই সাফল্য’র মূল কৃতিত্বটা বড় ছেলে জনিকেই দিতে চান। পাশাপাশি বলেন, তার পথচলা মাত্র  শুরু, এখনই কিছু মন্তব্য করতে রাজী নই।  তিনি বলেন, এখনো সংবাদ করার মতো বা কোন কিছুই অর্জন হয়নি। স্বপ্ন দেখি, বদলী একদিন জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামবে৷ প্রসঙ্গত, এসেক্সের দ্বিতীয় একাদশের হয়ে খেলেন রবিনের দাদা জোনাথন জয় দাস। তিনি উইকেটরক্ষক। এসেক্সের ক্রিকেট বোর্ডের ডিরেক্টর জাওয়ার আলি বলেছেন, “ভাল লাগছে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলতে দেখে। আশা করব ভবিষ্যতে রবিন ইংল্যান্ডের হয়েও খেলবে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০