শতবর্ষ পরেও কাজী নজরুল কতোটা প্রাসঙ্গিক

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

ব্রিকলেন নিউজঃ 

প্রেমের কবি, দ্রোহের কবি, সাম্যের কবি, অসাম্প্রদায়িকতার কবি,  কাজী  নজরুলের জন্মদিন আজ।  ১৮৯৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোলের  চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।পিতা কাজী ফকির আহমদ ও মাতা   জাহেদা খাতুনের ষষ্ঠ সন্তান তিনি। তার বাবা ফকির আহমদ ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ঈমাম  এবং মাজারের  খাদেম।

শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির প্রতিটি শাখায় দোর্দন্ডপ্রতাপে বিচরণ করেছেন নজরুল ইসলাম, কিন্ত সব কিছু ছাপিয়ে কবি হিসাবেই  তিনি কালোত্তীর্ণ  হয়েছেন।

স্বাধীনাত্তোর বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ভারত সরকারের কাছ থেকে নজরুলকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন, এবং জাতীয় কবির মর্যাদায় অধিষ্ঠিত  করেন।  ৭২ সালের ২৪শে মে কবি তাঁর জন্মদিনে বাংলাদেশে আসেন। তিনি তখন অসুস্থ ছিলেন। 

কবি নজরুল এখনো কতোটা  প্রাসঙ্গিক  তা তাঁর লেখাগুলো পড়লে সেটি অনুধাবন করা যায়।

১. প্রায় ১০০ বছর আগে তিনি এই কথা বলে গেছেন।

” হিন্দু লেখকগণ তাদের সমাজের গলদ-ত্রুটি-কুসংস্কার নিয়ে কি না কষাঘাত করেছেন সমাজকে, তা সত্ত্বেও তারা সমাজের শ্রদ্ধা হারাননি। কিন্তু হতভাগ্য মুসলমানের দোষ-ত্রুটির কথা পর্যন্ত বলবার উপায় নেই, সংস্কার তো দূরের কথা ! তার সংশোধন করতে চাইলেও এরা তার বিকৃত অর্থ করে নিয়ে লেখককে হয়ত ছুরিই মেরে বসবে। ”
– কাজী নজরুল ইসলাম(সওগাত, পৌষ ১৩৩৪)

১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ৫ই ও ৬ই নভেম্বর সিরাজগঞ্জের নাট্যভবনে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় মুসলিম তরুণ সম্মেলনে কবি কাজী নজরুল ইসলাম এক অনন্যসাধারণ বক্তব্য প্রদান করেন-
“আমাদের বাঙ্গালি মুসলিমদের মধ্যে যে গোঁড়ামি, যে কুসংস্কার, তাহা পৃথিবীর আর কোন দেশে, কোন মুসলমানের মধ্যে নাই বলিলে বোধ হয় অত্যুক্তি হইবে না। আমাদের সমাজের কল্যাণকামী যে সব মৌলানা সাহেবান খাল কাটিয়া বেনোজল আনিয়াছিলেন, তাঁহারা যদি ভবিষ্যৎদর্শী হইতেন, তাহা হইলে দেখিতে পাইতেন বেনোজলের সাথে সাথে ঘরের পুকুরের জলও সব বাহির হইয়া গিয়াছে। উপরন্তু সেই খাল বাহিয়া কুসংস্কারের অজস্র কুমির আসিয়া ভিড় করিয়াছে।
মৌলানা মৌলবী সাহেবকে সওয়া যায়, মোল্লা ও চক্ষুকর্ণ বুজিয়া সহিতে পারি, কিন্তু কাঠমোল্লার অত্যাচার অসহ্য হইয়া উঠিয়াছে। ইসলামের কল্যাণের নামে ইহারা যে কওমের জাতির ধর্মের কি অনিষ্ট করিতেছেন তাহা বুঝিবার মতো জ্ঞান নাই বলিয়া ইহদের ক্ষমা করা যায়। ইহারা প্রায়ই প্রত্যেকেই ‘মনে মনে শাহ ফরীদ, বগল-মে ইট।’ ইহাদের নীতি ‘মুর্দা দোজখ-মে যায় য়্যা বেহেশ্ত-মে যায়, মেরা হালুয়া রুটি-সে কাম।’
‘দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল।’ নীতি অনুসরণ না করিলে সভ্য জগতের কাছে আমাদের ধর্ম, জাতি আরো লাঞ্ছিত ও হাস্যাস্পদ হইবে। ইহাদের ফতুয়া-ভরা ফতোয়া। বিবি তালাক ও কুফরির ফতোয়া তো ইহাদের জাম্বিল হাতড়াইলে দুই দশ গা পাওয়া যাইবে। এই ফতুয়াধারী ফতোয়াবাজদের হাত হইতে গরীবদের বাঁচাইতে যদি কেহ পারে তো সে তরুণ। ইহাদের হাতের ‘আষা’ বা ষষ্টি মাঝে মাঝে আজদাহা রূপ পরিগ্রহ করিয়া তরুণ মুসলিমদের গ্রাস করিতে আসিবে সত্য, কিন্তু এই ‘আষা’ দেখিয়া নিরাশ হইয়া ফিরিলে চলিবে না। এই ঘোরো যুদ্ধ ভাইয়ের সহিত, আর আত্মীয়ের সহিত যুদ্ধই সর্বাপেক্ষা বেদনাদায়ক।
তবু উপায় নাই। যত বড় আত্মীয়ই হোক, তাহার যক্ষ্মা বা কুষ্ঠ হইলে তাহাকে অন্যত্র না সরাইয়া উপায় নাই। যে হাত বাঘে চিবাইয়া খাইয়াছে তাহাকে কাটিয়া ফেলিয়া দেওয়া ছাড়া প্রাণ রক্ষার উপায় নাই। অন্তরে অত্যন্ত পীড়া অনুভব করিয়াই এসব কথা বলিতেছি। চোগা-চাপকান দাড়ি-টুপি দিয়া মুসলমান মাপিবার দিন চলিয়া গিয়াছে। পৃথিবীর আর সব দেশের মুসলমানদের কাছে আজ আমরা অন্তত পাঁচ শতাব্দি পেছনে পড়িয়া রহিয়াছি। যাহারা বলেন, ‘দিন ত চলিয়া যাইতেছে, পথ তো চলিতেছি,’ তাহাদের বলি ট্রেন-মোটর-এরোপ্লেনের যুগে গরুর গাড়িতে শুইয়া দুই ঘণ্টায় এক মাইল হিসাবে গদাই-লস্করি চালে চলিবার দিন আর নাই। যাহারা আগে চলিয়া গিয়াছে তাহাদের সঙ্গ লইবার জন্য আমাদের একটু অতিমাত্রায় দৌড়াইতে হয় এবং তাহার জন্য পায়জামা হাঁটুর কাছে তুলিতে হয়, তাই না হয় তুলিলাম। ঐ টুকুতেই কি আমার ঈমান বরবাদ হইয়া গেল? ইসলামই যদি গেল, মুসলিম যদি গেল, তবে ঈমান থাকিবে কাহাকে আশ্রয় করিয়া? যাক আর শত্রু বৃদ্ধি করিয়া লাভ নাই। তবে ভরসা এই যে, বিবি তালাকের ফতোয়া শুনিয়াও কাহারও

বিবি অন্তত বাপের বাড়িও চলিয়া যায় নাই এবং কুফরি ফতোয়া সত্ত্বেও কেহ ‘শুদ্ধি’ হইয়া যান নাই।
পশু সাজবার মানুষের একি ‘আদিম’ দুরন্ত ইচ্ছা!- ন্যাজ গজাল না বলে তারা টিকি দাড়ি জন্মিয়ে যেন সান্তনা পেল। হিন্দুত্ব মুসলমানত্ব দুই সওয়া যায়, কিন্তু তাদের টিকিত্ব দাড়িত্ব অসহ্য, কেননা ঐ দুটোই মারামারি বাধায়। টিকিত্ব হিন্দুত্ব নয়, ওটা হয়ত পন্ডিত্ব। তেমনি দাড়িও ইসলামত্ব নয়, ওটা মোল্লাত্ব। এই দুই “ত্ব” মার্কা চুলের গোছা নিয়েই আজ যত চুলাচুলি! মানুষ আজ পশুতে পরিণত হয়েছে, তাদের চিরন্তন আত্মীয়তা ভুলেছে। পশুর ন্যাজ গজিয়েছে ওদের মাথার ওপর, ওদের সারা মুখে। ওরা মারছে লুংগিকে, মারছে নেংগোটিকে; মারছে টিকিকে, দাড়িকে! বাইরের চিহ্ন নিয়ে এই মূর্খদের মারামারির কি অবসান নেই?
আমাদের পথে মোল্লারা যদি হন বিন্ধ্যাচল, তাহা হইলে অবরোধ প্রথা হইতেছে হিমাচল। আমাদের দুয়ারের সামনের এই ছেঁড়া চট যে কবে উঠিবে খোদা জানেন। আমাদের বাংলাদেশের স্বল্পশিক্ষিত মুসলমানদের যে অবরোধ, তাহাকে অবরোধ বলিলে অন্যায় হইবে, তাহাকে একেবারে শ্বাসরোধ বলা যাইতে পারে। এই জুজুবুড়ির বালাই শুধু পুরুষদের নয়, মেয়েদেরও যেভাবে পাইয়া বসিয়াছে, তাহাতে ইহাকে তাড়াইতে বহু সরিষা-পোড়া ও ধোঁয়ার দরকার হইবে। আমাদের অধিকাংশ শিক্ষিত বা অর্ধ-শিক্ষিত লোকই চাকুরে, কাজেই খরচের সঙ্গে জমার তাল সামলাইয়া চলিতে পারে না। অথচ ইহাদের পর্দার ফখর সর্বাপেক্ষা বেশি। আর ইহাদের বাড়িতে শতকরা আশিজন মেয়ে যক্ষ্মায় ভুগিয়া মরিতেছে। আলো-বায়ুর অভাবে। এই সব যক্ষ্মা রোগগ্রস্ত জননীর পেটে স্বাস্থ্য-সুন্দর প্রতিভাদীপ্ত বীর সন্তান জন্মগ্রহণ করিবে কেমন করিয়া! ফাঁসির কয়েদিরও এইসব হতভাগিনীদের অপেক্ষা অধিক স্বাধীনতা আছে। আমাদের কন্যা-জায়া-জননীদের শুধু অবরোধের অন্ধকারে রাখিয়াই ক্ষান্ত হই নাই, অশিক্ষার গভীরতর কূপে ফেলিয়া হতভাগিনীদের চির-বন্দিনী করিয়া রাখিয়াছি। আমাদের শত শত বর্ষের এই অত্যাচারে ইহাদের দেহ-মন এমনি পঙ্গু হইয়া গিয়াছে যে, ছাড়িয়া দিলে ইহারাই সর্বপ্রথম বাহিরে আসিতে আপত্তি করিবে। ইহাদের কি দুঃখ কিসের যে অভাব তাহা চিন্তা করিবার শক্তি পর্যন্ত ইহাদের উঠিয়া গিয়াছে।”

 

উদাহরণ:
‘শিখা’ পত্রিকার টাইটেল পৃষ্ঠায় একটি ক্ষুদ্র রেখা-চিত্র ছিল। তা লেখক আবুল হুসেন এঁকেছিলেন। একটি খোলা কোরান শরীফে। মানব বুদ্ধির আলোর স্পর্শে কোরানের বানী প্রদীপ্ত হয়ে উঠেছে, এ-ছিল রেখাচিত্রটির মর্ম। কিন্তু এর একটা কদর্থ বের করতে বিরুদ্ধবাদীদের বেগ পেতে হয়নি। তাঁরা এর অর্থ রটাল, মুসলিম সাহিত্য সমাজের সমর্থকরা কোরানকে পুড়িয়ে ফেলে শুধু মানব বুদ্ধিকেই দাঁড় করাতে চাচ্ছে।

জীবনকালে ধর্মবাদীরা তাঁকে কাফের উপাধী দিয়েছিল। এই উপাধী পাওয়ার পর শিখা গোষ্ঠী’র এক সভায় কবি বলেন- “বহুকাল পরে কাল রাত্রে আমার ঘুম হয়েছে । এতদিন আমি মনে করতাম আমি একাই কাফের , কিন্তু আজ দেখে আমি আশ্বস্ত হলুম যে , মৌ আনোয়ারুল কাদির প্রমুখ কতকগুলি গুনি ব্যক্তি দেখছি আস্ত কাফের । আমার দল বড় হয়েছে এর চেয়ে বড় সান্ত্বনা আমি চাইনা।

২. অনেক আগে নারায়ণগঞ্জে “আলী আহমদ চুনকা পৌর পাঠাগার’ চত্বরে লাকি ওসমানের গড়া কাজি নজরুল ইসলামের একটি ভাস্কর্যে তৈরি করা হয়। সেই ভাস্কর্যের মোড়ক উন্মোচন করেছিলেন শামসুর রাহমান। তো, মোড়ক উন্মোচনের আগেই মৌলবাদীরা ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলতে পারে এমন একটা আশঙ্কার কারণে রাত দিন চব্বিশ ঘণ্টা ভাস্কর্যটি পাহারা দেওয়া হয়েছিল।

৩. রবীন্দ্রনাথকে ছোট করার জন্যে বাংলার নাৎসিরা রবীন্দ্রনাথ ও কাজী নজরুলের নামে অনেক মিথ্যা গল্প হাটে বাজারে চালু করে। অথচ ৭ই আগস্ট ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে, ২২শে শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দে, রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুতে শোকাহত নজরুল তাৎক্ষণিকভাবে রচনা করেন ‘রবিহারা’ ও ‘সালাম অস্তরবি’ কবিতা-দুটো এবং ‘ঘুমাইতে দাও শ্রান্ত রবিরে’ শোকসঙ্গীত। ‘রবিহারা’ কবিতা নজরুল স্বকণ্ঠে আবৃত্তি করেন কলকাতা বেতারে, গ্রামোফোন রেকর্ডে।

৪. বাংলায় সবচেয়ে সম্মানসূচক উপাধী হল শহিদ। সেটি আবার আরবি শব্দ থেকে আসছে! শহিদের ধারনাটি ইহুদি এবং খ্রিস্টান ধর্ম থেকে এসেছে। মার্টায়ার কথাটার অর্থ ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মের গোড়ার দিকে ছিল সাক্ষী। নিজের ধর্মবিশ্বাস ত্যাগ করার বদলে যে নিজের মৃত্যু অথবা হত্যা প্রত্যক্ষ করে অর্থাৎ তার সাক্ষী হয়, সে হলো মার্টায়ার। ইসলামে শহিদ কথাটা এসেছে এই ধারণা থেকেই। এবং প্রথমে এর অর্থ ছিলো সাক্ষী। নিজের বিশ্বাসের জন্যে যে স্বেচ্ছায় মৃত্যুকে মেনে নেয়। অপর পক্ষে, হাদিসের ব্যাখ্যা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার আদেশে ধর্মযুদ্ধে যে নিহত হয়, সে-ই হল শহিদ। বৌদ্ধধর্মে বোধিসত্ত্ব কথাটার সঙ্গেও শহিদের ধারণা খানিকটা যোগ হয়েছে। তবে হিন্দু ধর্মে শহিদের ধারণা নেই। বাঙলা ভাষাতেও নেই।

বাঙলায় শহিদ শব্দটার প্রথম বারের মতো ঢুকে পড়ে পুঁথি সাহিত্যের মাধ্যমে। একটি পুঁথির নামই আছে; শহিদের কারাবালা। ১৯০৫ সালে বেগম রোকেয়া, তারপর কাজী নজরুল শহিদ শব্দটির ব্যবহার করেন। মুসলিমদের বাহিরে প্রথম শহিদের উপাধী পান- ক্ষুদিরাম। ১৯২২ সালের অগাস্ট মাসে ধূমকেতা পত্রিকায় কাজী নজরুল ইসলাম ক্ষুদিরামের একটি ছবির নিচে লেখেন- “বাঙলার প্রথম শহিদ ক্ষুদিরাম।” নজরুল দেশের জন্য জীবন দেওয়ায় ক্ষুদিরামকে শহিদের মর্যাদায় ভূষিত করেন। পরবর্তীতে নজরুলের হাত ধরেই দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া বিপ্লবীদের শহিদের উপাধীতে ভূষিত করার রীতি শুরু হয়। বাংলাদেশে শহিদ শব্দটি জনপ্রিয়তা পায় ১৯৫২ সাল থেকে। ভাষার জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে যারা নিহত হন তাদেরকে শহিদের মর্যাদা দেওয়া হয়। শহিদ যেহেতু ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে সর্বোচ্চত্যাগ ও খুব সম্মানিত উপাধী সুতরাং শহিদ শব্দটি খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে।

“কাজী নজরুল ইসলাম এখন রাষ্ট্রধর্মী বাঙলাদেশের জাতীয় কবি-খাঁটি ইসলামী কবি।এক সময় ফতোয়াবাজদের জ্বালায় তিনি অস্থির ছিলেন; আর এখন যদি কবিতা লিখতেন, তবে আজ যারা তাকে জাতীয় কবি বানিয়েছে, তারাই তাঁকে কাফের বলে তার শির ছিঁড়তো।”

-হুমায়ুন আজাদ

তাই আমাদের সমাজ চিত্র আজ ও যে তিমিরে ছিল আজ ও সেই তিমিরেই আছে। তাই শতবর্ষ পরে ও  নজরুল আমাদের জীবনে সমান প্রাসঙ্গিক।

(তথ্যসূত্র অনলাইন)

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০