জুয়েল রাজ-
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক আখলাকুর রহমান ওরফে আকি রহমান (৩৯) পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন। তিনি প্রথম ব্রিটিশ মুসলিম হিসেবে এভারেস্ট জয় করলেন। নেপাল সময় সকাল সাড়ে সাতটায় তিনি চূড়ায় পৌঁছান।
পবিত্র রমজান মাসে ৩৯ বছর বয়সি আকি এভারেস্ট জয়ের যাত্রা শুরু করেন। নেপাল থেকে শেরপারা লন্ডনের চ্যানেল এস টেলিভিশনের হেড অব প্রোগ্রাম ফারহান মাসুদ খান কে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আকি রহমান সিলেটের সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের বাউধরন গ্রামের যুক্তরাজ্যপ্রবাসী মরহুম হাজি ইছকন্দর আলীর ছেলে। তিনি বিশ্বজুড়ে আকি রহমান নামেই পরিচিত।
জানা যায়, জন্মসূত্রে আকি রহমান যদিও বাঙালি। তবে মাত্র দেড় বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে পারি জমান যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডে। তাঁর শৈশব কেটেছে ইংল্যান্ডের ওল্ডহ্যাম শহরে। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে আকি রহমান সবার বড়। স্ত্রী হেনা রহমান ও পরিবারের লোকজনের উৎসাহে আকি রহমান এবার এভারেস্ট জয়ের পথে যাত্রা করেন। পর্বতারোহী আকি রহমান তিন সন্তানের জনক।
এর আগে আকি রহমান এক এক করে ছোটবড় বেশ কয়েকটি পর্বতশৃঙ্গে আরোহণ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। এবার হিমালয়ের মাউন্ট এভারেস্ট জয়ের পথে পা বাড়িয়েছেন। ২০২০ সালের জুলাই মাসে আফ্রিকার তানজিনিয়ার সবচেয়ে উঁচু পর্বত, যার উচ্চতা ৫ হাজার ৮৯৫ মিটার এবং মাউন্ট কিলিমানজারো জয় করে প্রথম সাফল্য অর্জন করেন তিনি। এরপর ফ্রান্সের সবচেয়ে উঁচু পর্বত ৪ হাজার ৮১০ মিটার মন্ট ব্লাংক, যা মাউন্ট এভারেস্টের চেয়ে মাত্র ৩৮ মিটার ব্যবধান ওই পর্বতটিও জয় করেন।
একই বছরের অক্টোবরে তৃতীয়বার ২৪ ঘণ্টায় জয়ের চ্যালেঞ্জ নিয়ে রাশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে উঁচু পর্বত মাউন্ট এলব্রস, যার উচ্চতা ৫৬৪২ মিটার তা মাত্র ৮ ঘণ্টায় আরোহণ করে বিজয়ী হন। এর পাশাপাশি রাশিয়ার কারবাদিনো-বলকারিয়াও জয় করেন আকি রহমান।
এরপর ২০২১ সালে নেপালে অবস্থিত পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিনতম পর্বত হিমালয় আমাদা ব্ল্যাম জয় করেন তিনি। যার উচ্চতা ৬ হাজার ৮৫৬ মিটার।
আকি রহমান, প্রথম ব্রিটিশ মুসলিম বাংলাদেশি ও প্রথম সিলেটি, যে পায়ে হেঁটে এভারেস্টের চূড়ায় যাবে। অনেকেই এভারেস্টের বিভিন্ন বেজ-ক্যাম্পে গেলেও এখন পর্যন্ত এভারেস্টের চূড়ায় কোনো ব্রিটিশ মুসলিম, ব্রিটিশ বাঙালি বা সিলেটি পায়ে হেঁটে যায়নি।
উল্লেখ্য গত ১১ এপ্রিল আকি রহমান ওল্ডহ্যাম থেকে নেপালের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন, এবং এর আগে চ্যানেল এস এর আর এফ এস চ্যারেটির মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে রিফিউজি দের সাহায্যে বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেন।