জুয়েল রাজঃ
আজ শহীদ আলতাব আলী দিবস। ১৯৭৮ সালের ৪ মে বর্ণবাদীদের হাতে নির্মমভাবে প্রাণ হারান বাঙালি যুবক আলতাব আলী।তাঁর স্মরণে প্রতিবছর দিনটি বর্ণবাদ বিরোধী দিবস হিসাবে স্মরণ করা হয়।
আলতাব আলীর হত্যাকান্ডটি লন্ডন তথা পুরো যুক্তরাজ্যেই সে সময় আলোড়ন তুলেছিল। বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি বাঁক বদল করেছিল তাঁর হত্যাকান্ডটি । যা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষকে এক কাতারে নিয়ে এসেছিলো। ৮০’র দশক যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের জন্য খুব সহজ ছিল না। প্রতিনিয়ত বর্ণবাদী হামলার শিকার হতে হতো তাঁদের। রাস্তায়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা ছিল।
তেমনি খুন হওয়া, ২৫ বছরের আলতাব আলী ছিলেন একজন টেক্সটাইল কর্মী, যিনি খুন হওয়ার কিছুদিন আগে বাংলাদেশ থেকে ইংল্যান্ড এসেছিলেন। তিনি কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে ব্রিকলেনের সন্নিকটে হোয়াইটচ্যাপল রোডস্থ একটি পার্কে ছুরিকাঘাতে নিহত হন। ১৯৯৮ সাল থেকে পার্কটি তার নামে আলতাব আলী পার্ক হিসেবে নামকরণ করা হয়। যেখানে বর্তমান আছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। সম্প্রতি কাউন্সিল কতৃপক্ষ আলতাব আলীর নামে একটি ভবনের ও নাম করণ করেছে।
তাঁর মৃত্যুর ঘটনা টাওয়ার হ্যামলেটসের কমিউনিটিগুলোকে সেদিন ঘৃণা ও অসহনশীলতার বিরুদ্ধে সোচ্চার, করেছিলো। প্রায় ৭ হাজার মানুষ আলতাব আলীর কফিন বহন করে পূর্ব লন্ডন থেকে হাইড পার্ক, ১০ ডাউনিং স্ট্রীট পর্যন্ত মিছিল করেছিল। এই ঘটনার পর ব্রিটেনের সরকার ও নড়েচড়ে বসে এবং বর্ণবাদের বিরুদ্ধে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। বর্ণবাদ বিরোধী আইন সংস্কার করতে বাধ্য হয়।
সর্বশেষ মেয়র নির্বাচনের আগে লেবার দলীয় প্রার্থী জন বিগস ঘোষণা দিয়েছিলেন, নির্বাচিত হলে ৪ মে আলতাব আলী হত্যার দিনটি আলতাব আলী দিবস ঘোষণার পাশাপাশি একে কাউন্সিলের উদ্যোগে পালন করা হবে। নির্বাচিত হয়ে,২০১৫ সাল থেকে স্থানীয় মেয়র জন বিগস ৪ মে কে আলতাব আলী দিবস ঘোষণা করেন। এবং কাউন্সিল কতৃপক্ষ যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করে থাকে। পাশাপাশি আলতাব আলী ফাউন্ডেশন, স্বাধীনতা ট্রাষ্ট সহ বিভিন্ন সংগঠন বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতীক হিসাবে প্রতিবছর আলতাব আলীকে স্মরণ করেন।