মৃত্যুদিবসে_স্মরণ_ও_শ্রদ্ধা
মাশূক_ইবনে_আনিস
আজ সততার রাজনীতি ও পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিত্বের মহান মানুষ— জাতীয় নেতা, কিংবদন্তিতুল্য রাজনৈতিক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এর তৃতীয় মৃত্যু দিবস।
কেমন ছিলেন সৈয়দ আশরাফ? —ছিলেন একজন বিচক্ষন রাজনৈতিক। অন্তর্মুখী মানুষ। ছিলেন রাজনৈতিক দর্শনের প্রবক্তা। সংস্কৃতিমনস্ক উদার মনোবৃত্তিসম্পন্ন আধুনিক চিন্তক। বিপর্যয়ে কখনই বিপর্যস্ত হতেন না। সিদ্ধান্তে ছিলেন অটল। দেশপ্রেমিক ছিলেন বলেই ‘ —দেশ আগে ‘এই নীতিতে বিশ্বাস করতেন বলেই— বিরাগভাজন হলেন চিরবন্ধুদের।
এদের অপছন্দ আর চক্রান্তেই আধুনিক আওয়ামী লীগের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাধারণ সম্পাদক হয়েও— স্বেচ্ছায় বিদায় নিলেন সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে।
তাঁর এলজিআরডি মন্ত্রণালয় সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিমুক্ত থাকা সত্বেও— তাঁকে সরিয়ে দেয়া হলো শতচাপ প্রয়োগ করে।
মাফিয়া রাজনীতির কাছে পরাজিত হলো পরীক্ষিত সততার রাজনীতি। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তখনও চুপ থাকলেন।
শত-শত সাংবাদিকের প্রশ্ন ‘ — আপনি কি সরকার থেকে পদত্যাগ করছেন! ‘— জবাবে তিনি বললেন ‘— গুজবে কান দেবেন না ‘।
বাংলাদেশের শতশত পত্রিকায় পরের দিন লিডহেডিং হলো — সৈয়দ আশরাফ বলেছেন, —গুজবে কান দেবেন না।
বাংলাদেশের বিনিয়োগ রাজনীতি যখন স্হবির, উন্নয়ন যখন বাঁধা গ্রস্ত— সিআইএ আর রো ‘ এর কুটচালে জাতীয় উন্নয়ন স্তিমিত—তখনই সৈয়দ আশরাফ হলেন সমস্যা সমাধানের জিয়নকাঠি।
পাঁচ দিনের চীন সফর শেষে নিয়ে আসলেন পাঁচ বিলিওন ডলারের বিনিয়োগ।
নয়া চীনের সঙ্গে চীন-বাংলাদেশ নতুন সম্পর্কের নতুন উন্নয়নের মাত্রা যোগ হলো।
বন্ধুপ্রতিমরা নাখোশ হলো।
ঘটলো ষড়যান্ত্রিক অনেক খেলা। কখনও ধর্মীয়, কখনও ইউনুসিয়ো।
সৈয়দ আশরাফ আমলে কিছুই নিলেন না।
দক্ষিণ এশিয়ার আন্ত:রাজনীতির কিংবদন্তি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকটজন হিসেবে— সর্বোচ্চ বিশ্বস্হজনে পরিনত হলেন সৈয়দ আশরাফ।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার বাহক হলেন তিনি। কী সিন্ধান্ত কী বাস্তবায়ন! সব কিছুতেই প্রধানমন্ত্রী স্বাচ্ছন্দ্যে ভরসা করতেন— সৈয়দ আশরাফ এর উপর।
আমাদের এই সময়ের আওয়ামী রাজনীতিতে একটি নতুন সমীকরণ প্রতিষ্ঠা পাচ্ছিলো। এটা সহ্য হয়নি ইন্দু-মার্কিন গোয়েন্দা রাজনীতির চোখে।
ফলত : যা হবার তা ই হলো।
স্বল্পমুল্যে বিক্রি হওয়া বাংলাদেশি রাজনীতিবিদদেরকে কিনে নিলো ইন্দু-মার্কিন রুপিয়া ডলার।
কোনো দোষ না-থাকা স্বত্ত্বেও বলিরপাটা হলেন— বাঙালির আধুনিক রাজনীতির প্রবক্তা জননেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
যে নেতা সম্মেলনের মঞ্চে একটি দর্শন উপস্থাপন করেছিলেন হ্রস্বস্বরে, বলেছিলেন, — আওয়ামী লীগ একটি অনুভূতির নাম!
অনুভূতি-দ্বারা ই মানুষ যেভাবে পরিচালিত হয়, তেমনই রাজনৈতিক অনুভূতির নাম আওয়ামী লীগ।
এখন সারা বাংলাদেশের উচ্চশ্রেণীর শিক্ষার্থীরা বারবার এই দর্শনটি ছড়িয়ে দিচ্ছে সোসাল মিডিয়ায়।
এই বক্তব্য একদিন আমাদের রাজনীতি বিজ্ঞানের পাঠ্য বিষয় হবে।
ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও থেমে নেই। ষড়যন্ত্র চলছে— এই বক্তব্য খোদ প্রধানমন্ত্রীর।
উনিশ-শ-পঁচাত্তর আর দুই হাজার বাইশ সালের ষড়যন্ত্রকারীরা সমান বংশিয়ো তাই ; সমানভাবেই বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশের উন্নয়নের বিরুদ্ধে সক্রিয় ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে— বলেই আমাদের উপর বিভিন্নভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যাচ্ছে!
এই হীন-রাজনীতি সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বুঝতে পেরেছিলেন অনেক আগে। যার মুল্যও হয়ত তাঁকে জীবন দিয়ে পরিশোধ করতে হলো!
—আশরাফ ভাই, —আপনি ছিলেন কাউন্সিলর সোনাওর আলীর আত্মার আত্মীয়। সোনাওর আলীর সুবাদেই আমি পরিচিত হয়েছিলাম আপনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে। সোনাওর আলীর উইভার্স এর ফ্লাটে কতোনা সঙ্গ দিয়েছি আপনার সঙ্গে। কারণ ; আপনিতো শুদ্ধ রবীন্দ্র সঙ্গীত আর গীতবিতানের শিক্ষক ছিলেন।
ছিলেন বন্ধুর চেয়ে প্রিয় আর; শিক্ষকের মতো শুদ্ধাচারী।
আপনি নিশ্চয়ই ভালো আছেন সৈয়দ সাব! —এই প্রত্যাশা ও বিশ্বাস আমার মতো হাজারো ভক্তজনের।