লন্ডনে প্রশংসিত, ছান্দসিকর ‘ র জাগরণের পংক্তিমালা  

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

জুয়েল রাজঃ

ওরা চল্লিশজন কিংবা তার ও বেশী/  যারা প্রাণ দিয়েছে এখানে, রমনার রৌদ্রদগ্ধ  কৃষ্ণচুড়া গাছের তলায় / ভাষার জন্য, মাতৃভাষার জন্য, বাংলার জন্য –  মাহাবুব আলম চৌধুরীর বিখ্যাত কবিতা কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে  এসেছি,  ৫২’র ভাষা শহীদদের  স্মরণে আবৃত্তি  দিয়ে শুরু হয় জাগরণের পংক্তিমালা,
বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে লন্ডনের  টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল আয়োজিত ‘Freedom and Independence Theatre Festival’ এ শনিবার ৬ নভেম্বর পূর্ব লন্ডনের কবি নজরুল সেন্টারে ছান্দসিক পরিবেশন করেছে  ‘জাগরণের পংক্তিমালা’   জনপ্রিয় আবৃত্তিশিল্পী মুনিরা পারভীনের গ্রন্থনা এবং পরিচালনায় আবৃত্তিতে অংশ নেন শতরূপা চৌধুরী, সোমাভা বিশ্বাস,রাজ্ দাস এবং মুনিরা পারভীন l জাগরণের পংতিমালায় ১৯৫২র ভাষা আন্দোলন থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং তার পরবর্তী ইতিহাস তুলে এনেছেন মুনিরা,  আমার ভাইয়ের রক্ত রাঙানো  একুশে ফেব্রুয়ারি  আমি কি ভুলিতে পারি থেকে  একে একে  উচ্চারিত  হয়,  হেলাল হাফিজের  এখন যৌবন যার  মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/ এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ  সময়। নির্মলেন্দু  গুণের সেই থেকে স্বাধীনতা  শব্দটি আমাদের। ৭৫ এর ১৫ আগষ্টের বেদনাহত কালো রাত নিয়ে, হুমায়ুন আজাদের, এ লাশ আমরা রাখবো কোথায়, তেমন যোগ্য সমাধী কই? মৃত্তিকা বলো, পর্বত বলো, অথবা সুনীল- সাগর- জল -সব কিছু ছেঁদো, তুচ্ছ শুধুই!  তাইতো রাখি না এ লাশ,  আজ মাটিতে পাহাড়ে কিম্বা সাগরে, হৃদয়ে হৃদয়ে দিয়েছি ঠাঁই।
ছান্দসিক বরাবরের মতো তাদের, জাগরণের  পঙক্তিমালায় ও  আবৃত্তি  করেন  বীরাঙ্গনাদের  দিনিলিপি। মুক্তিযুদ্ধ গবেষক অপূর্ব শর্মার বীরাঙ্গনা কথা থেকে পাঞ্জাবীর বউ পাঠ করেন মুনিরা,  প্রভারানীর প্রশ্ন ছিল – স্বাধনতার পঞ্চাশ বছর পরও কেন তাঁকে পাঞ্জাবির বৌ বলে ডাকা হয় l তিনি একজন বীর, বীরাঙ্গনা,তিনি দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন ۔۔۔এই স্বাধীনতা তো তিনি চাননি ۔۔তিনি মুক্তি চান।
অনুষ্ঠানের শেষ পরিবেশনা ছিল,  এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা, আমরা তোমাদের ভুলবনা।  ছোটি গল্পের মতো,  কবিতার পঙক্তিমালায়  ছান্দসিক তুলে আনে ১৯৫২ থেকে বাংলাদেশের যাত্রা পথের ইতিহাস,  স্বাধীনতার  সুবর্ণজয়ন্তী র এক অনন্য পরিবেশনা ছিল অনুষ্ঠানটি।
 অনুষ্ঠানে  অতিথি হিসেবে বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছরের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করেন, মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ হাসান এমবিই, মুক্তিযোদ্ধা লোকমান হোসেন এবং ডক্টর সেলিম জাহান l  আলোচকগণ,  ৭১ সালের বিভিষীকাময় দিনগুলির কথা এবং তাদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির কথা বলেন  ডক্টর সেলিম জাহান,  দেশের  উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন-তরুণদের হাত ধরেই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে  আলোচনা এবং প্রশ্নোত্তর পর্বে আরও অংশগ্রহণ করেন মিডিয়া ব্যক্তিত্ত্ব উর্মি মাজহার,সাংবাদিক আব্দুস সাত্তার সহ আরও অনেকে, উপস্থিত দর্শক শ্রোতা ছান্দসিকের এই ইতিহাস নির্ভর অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ছান্দসিকের চেয়ারম্যান,  মুনিরা পারভীন বলেন, ছান্দসিক শুরু থেকেই বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে অনু্ষ্ঠান মালা সাজিয়ে থাকে। স্বাধীনতার  সুবর্ণ  জয়ন্তীতে আমরা বাংলাদেশের সোনালী অর্জনকে কবিতায় এবং আলোচনায় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সাংস্কৃতিক চর্চা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চা,  মুক্তিযুদ্ধের  মূল যে  চেতনা ,  সেই চেতনায় শান দিবে  বলে ছান্দসিক বিশ্বাস করে, তাই বারবার আমরা বীরাঙ্গনাদের দুঃসহ দিনলিপি নিয়ে আসি মঞ্চে।

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০