জুয়েল রাজ-

চারদিনের সফরে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড: মুহাম্মদ ইউনূস। সরকারি টাকায় ব্যাক্তিগত সফর করছেন বলেই আলোচনা। ১০ মাসে ১১ সফরের অধিকাংশই নাকী তার ব্যক্তিগত সফর যা সরকারী নামে চালু আছে। এই হারে চলতে থাকলে আগামীতে এই সফরের জন্য ও তিনি কোন পুরস্কারে মনোনীত হতে পারেন।
যুক্তরাজ্যে রাজার বাড়ির অতিথি বলে বলে বাংলাদেশের জনগণের কাছে হাইপ তৈরী হয়েছিল সেটি হালে পানি পায়নি। কারন রাজার বাড়ির অতিথির তালিকায় নাকী নাম কাটা। কোথাও কেউ সেই নাম খুঁজে পায় নাই। এখন অপেক্ষা রাজা কোন উপহার তাঁক দেন। আবার এই সব ফাউন্ডেশনে মিলিয়ন মিলিয়ন পাউন্ড অনুদানের খবর ও আমরা সংবাদ মাধ্যমে পাই মাঝেমাঝে। ড: ইউনূস যেহেতু ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে এর আগে অনুদান দিয়েছেন ,কিংস ফাউন্ডেশন দিয়েছেন বা দিবেন এই আলোচনা ও আসবে নিশ্চয়।
চ্যাথাম হাউজে এক ঘন্টার একটি আলোচনা ছিল ড: ইউনূসের ,আমাদের ধারণা ছিল খুবই একাডেমিক একটা আলোচনা হবে ,এবং আগামীর বাংলাদেশ , নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে দেশী বিদেশী সাংবাদিক বুদ্ধিজীবী একাডেমিক লোকজন থাকবেন।
কিন্ত দেখলাম সেখানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভত ব্যবসায়ী, আর বিদেশী এনজিও অক্সফাম , আরেক বিতর্কিত কোম্পানী সেভরনের প্রতনিধি প্রশ্ন রাখলেন ,আর বাংলাদেশি দুইজন সাংবাদিককে প্রশ্ন করার সুযোগ দেয়া হয়।
তো আলোচনা শুনে মনে হইল , যেই লাউ ,সেই কদু ,এর আগে বিবিসি ,আল জাজিরা সহ দেশী বিদেশী সাংবাদিকদের যে সব কথা বলে আসছিলেন ঘুরে ফিরে সেই কথাই আবার বললেন। বড় প্যাকেজ ,ফান্ডামেন্টাল চেইঞ্জ , এই শেষ সুযোগ। মনে হয় উনিই শেষ পয়গাম্বর এর পরে আর কেউ বাংলাদেশে জন্ম নিব না। উনার উপর জুলাই সনদ নাজিল হইছে! এবং এর পরে আর কোন সনদ বা কিতাব বাংলাদেশে থাকবে না।সেই গৎবাঁধা সংস্কার আর পাসপোর্ট এর পুলিশ ভেরিফিকেশন এর কিচ্ছা। তরুণ প্রজন্ম। রাষ্ট্রীয় সেবা অনলাইন করণ ( যা ডাহা মিথ্যা ১০ মাসে এর কিছুই হয়নি সম্ভব ও নয় বিগত এক দশকের ও বেশী সময় ধরে ধারাবাহিকতা চলে আসছে)
তাঁর বক্তব্যে যা বুঝলাম বাংলাদেশের সব মানুষ অসৎ , বাংলাদেশের সব ব্যবস্থা অসৎ , তিনি নিজে ও যে ব্যবস্থা থেকে উঠে আসা।
ভারত বিরোধিতার কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন, মোদিকে অনুরোধ করেছেন সাহায্য করতে, শেখ হাসিনাকে চুপ থাকার জন্য।মোদী নাকী পাত্তাই দেয় নাই। মানবাধিকার লংঘন, হত্যা ,গুম মামলা , নারী নির্যাতন সংখ্যালঘু নীপিড়ন,মব ভায়োলেন্স , কোন সভ্য সমাজে হত্যাকান্ড সমূহের দায়মূক্তি দেয়া!এই সবের কোন উত্তর বা প্রশ্ন ও ছিল না। আবার ও সেই নেপাল , সেভেন সিস্টার বাণিজ্যক বলয়ের কথা উদ্বৃত্তি করলেন।
চ্যাথাম হাউজে এই সেমিনারে আবেদন করে ও আমি অনুমতি পাইনি প্রবশের। আবার আমি যাদের অনুরোধ করেছিলাম রেজিষ্ট্রেশন করতে অনেক পরে আবেদন করেও তারা প্রবেশের অনুমতি পেয়েছেন। অতিথি তালিকা কি বাংলাদেশ হাই কমিশন নাকি সরকারি নিরাপত্তা সংস্থা নির্ধারণ করেছেন জানি না। বা কিসের ভিত্তিতে সেই তালিকা হয়েছে তাও জানিনা। তবে অতিথিদের দেখে একটা ধারণা করতে পারি।
আমার প্রশ্ন করার সুযোগ থাকলে আমি জানতে চাইতাম ,বাংলাদেশে এই জঙ্গি অভ্যুথানে যে ম্যাটিকুলাস প্ল্যান তিনি উল্লেখ করেছেন ,সেই প্ল্যানটি আসলে কেমন ছিল?
কারণ অর্থনীতিতে ড: ইউনূসের ক্ষুদ্র ঋণ বিষয় পঠিত হয় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ , পাশাপাশি এখন সময় রাষ্ট্রবিজ্ঞানে তাঁর ভূমিকা রাখার। একটি দেশের জাতির জন্ম পরিচয় নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে ,সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়ে কিভাবে সেই সংবিধান বিনষ্ট করে নতুন সনদ জারী করে একটি নতুন জাতি রাষ্ট্র গঠন করা যায় , এই ম্যাটিকুলাস প্ল্যান আগামীতে সক্রেটিস প্লেটো এরিস্টটল এর মত আপনার নাম উচ্চারিত হবে। আমি হলফ করে বলতে পারি।
আপনি বরং এর উপড় বই রচনা করেন যা পৃথিবীর দাস ক্যাপিটাল কে হার মানাবে।
আমি প্রশ্ন করতাম অঘোষিত ফার্স্ট লেডি লামিয়া মোর্শেদ নিয়ে ও। কথা বলো না বলো ওগো বন্ধু ছায়া হয়ে তব পাশে রইব ” উনি কেন ছায়া হয়ে থাকেন। কাকু ও কি এরশাদের পথে হাঁটছেন কী না?
আমার মনে হয় ,উনার পক্ষ থেকে পরিস্কার ভাবে বলা উচিত ছিল বলা তার এই সফর মূলত তারেক রহমান কেন্দ্রীক বাকী সব সাইড ডিশ। উনি যাদের সাথে সভা সেমিনার করে যাচ্ছেন , সে সব একটু সময় নিয়ে যে কেউ চাইলেই যুক্তরাজ্যে করা সম্ভব। এম পিদের প্রতিনিধি দলের সাক্ষাত। বাণিজ্য উপদেষ্টার সাথে মিটিং, চ্যাথাম হাউজে সেমিনার ,ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সভা , অন্তত এইদেশে যারা আছেন তারা খুব ভাল করেই জানেন এইসব বড় ঢিল না।
অথচ ব্রিটিশ এম পি টিউলিপ সিদ্দিক ,আমরা আইনী ভাষায় যত যাই বলি না কেন, সত্যি হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা স্টেকহোল্ড করেন তিনি। ড: ইউনূসকে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন চিঠি লিখে, কিন্ত তার প্রেস সেই চিঠি নিয়ে নানা মিথ্যা কথা বললে ও পরে স্বীকার করেছেন।
ড: ইউনূস তারেক রহমানের পাশাপাশি অথবা এক টেবিলে টিউলিপ ও তারেক রহমানকে বসতে। তাহলে বুঝতাম বড় প্যাকেজ অথবা সংস্কার তিনি করার ক্ষমতা রাখেন।
বি:দ্র – একটি মাত্র মেয়ে যে ধানমন্ডি ৩২ ভাঙা নিয়ে প্রশ্ন করেছিল ,সেনাবাহিনী পুলিশ থাকার পর ও কেন সরকার কোন ভূমিকা নেয় নাই এই প্রশ্নটা রেখেছিল।