সাঈম চৌধুরী :
ব্রিটেনের মর্যাদাপূর্ণ কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। আগামী ১২ জুন লন্ডনের সেন্ট জেমস প্যালেসে এক রাজকীয় অনুষ্ঠানে তাঁকে এই সম্মাননা প্রদান করবেন ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস। দেশের সংবাদমাধ্যমে এই খবরটি নিয়ে চর্চা হচ্ছে গত কিছুদিন। কিন্তু আপনি যদি কিংস ফাউন্ডেশনের প্রদত্ত এই অ্যাওয়ার্ডসের জন্য ২০২৫ সালের মনোনীতদের তালিকা দেখেন, তা’হলে ঐ তালিকায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম পাবেন না। এটি নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠতেই পারে। কেউ কেউ ইতোমধ্যে প্রশ্নটি তুলেছেনও বটে।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক দ্য কিংস ফাউন্ডেশন এই বছরের পুরস্কারের জন্য ২৫ জন মনোনীত ব্যক্তির নাম ঘোষণা করেছে। গত ২১মের পর এই তালিকাটি আর আপডেট বা হালনাগাদ করা হয় নি।

এখন কথা হচ্ছে, দ্যা কিংস ফাউন্ডেশনের চূড়ান্ত মনোনয়নের পর নতুন করে কেনো ড. ইউনূসকে এই সম্মাননার জন্য বিবেচনা করা হলো আর তিনি যদি পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হয়ে থাকেন তা’হলে তালিকায় এখন পর্যন্ত কেনো তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হলো না?
কিংস ফাউন্ডেশনের মতো আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ একটি সংস্থার এমন খামখেয়ালিপনা নিয়ে রহস্য তৈরি হতেই পারে।
প্রশ্ন হচ্ছে, কবে, কখন এবং কিভাবে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. ইউনূস এই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত এবং মনোনীত হলেন।
এ প্রশ্নের উত্তরে রয়েছে চমৎকৃত হওয়ার মতো কিছু বিষয় আশয়। বিদেশি একটা সংবাদমাধ্যম বলছে, গত এপ্রিলে আর্থনা সামিটে অংশগ্রহণ করতে কাতার সফর করেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ঐ সফরে তিনি কিং চার্লস ফাউন্ডেশনের সিইও ক্রিস্টিনা মুরিনের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। সংবাদমাধ্যমটি প্রশ্ন তুলেছে, ঐদিন মধ্যাহ্নভোজের সভায় কি ইউনূসের নাম পুরস্কারের জন্য বিবেচনা করা হয়েছিল? সংবাদ থেকে আমরা জানতে পারি, ঐ ভোজ সভায় স্পেসএক্সের ভাইস-প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার এবং বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) খলিলুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন। আর এই বৈঠকেই বাংলাদেশে স্টারলিংকসের বাণিজ্যিক উদ্বোধনের ক্ষেত্রে জটিলতাগুলো সমাধান করা হয়েছিল এবং এ্যালেন মাস্কের ইন্টারনেট পরিষেবা সংস্থাকে আন্তরিকভাবে কাজ শুরু করার জন্য সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, হয়তো বা কিংস ফাউন্ডেশনের সিও ক্রিস্টিনা মুরিনের সাথে ইউনূসের সাক্ষাতের সময়ের নতুন করে হারমনি অ্যাওয়ার্ডের জন্য বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার নাম সংযোজন করা হয়।
এখন কথা হচ্ছে, দোহায় গৃহীত এ সিদ্ধান্তটি কি আয়োজকদের কাছে সঠিকভাবে জানানো হয়নি? আর যদি জানানো হয়ে থাকে তাহলে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে দোহা বৈঠকের পর তো, অনেক সময় পাওয়া গেছে তবু কেনো কিংস ফাউন্ডেশন পুরস্কার প্রাপ্তদের তালিকায় মুহাম্মদ ইউনূসের নাম আজ পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত করে নি?
যাই হোক, শেষ অবধি ভালোয় ভালোয় ড. ইউনূসের হাতে উঠুক হারমনি অ্যাওয়ার্ড। আগাম অভিনন্দন।
লেখক- সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক