রজার রহস্যে মুখে কুলুপ খলিলুরের, নাগরিকত্ব বিতর্কে দেশজুড়ে তোলপাড়

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

নিজস্ব প্রতিবেদক

রজার রহমান পরিচয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব এবং দীর্ঘদিনের প্রবাস জীবনের তথ্য সামনে আসার পর, সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানকে ঘিরে বিতর্ক আরও ঘনীভূত হয়েছে। এই ইস্যুতে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য না দিয়ে নীরবতা পালন করছেন তিনি, যা আরও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

নর্থইস্ট নিউজ-এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, খলিলুর রহমান অন্তত ২৬ বছর যুক্তরাষ্ট্রে ‘রজার রহমান’ নামে বসবাস করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। এমনকি মার্কিন সরকারে চাকরিও করেছেন।

বুধবার খলিল একই সংবাদ সম্মেলনে প্রায় ২০ মিনিট ধরে তার বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেও আলোচিত রজার রহমান প্রসঙ্গে একেবারে চুপ ছিলেন। তার এই নীরবতা রাজনৈতিক মহলে নতুন করে সন্দেহ ও গুঞ্জনের জন্ম দিয়েছে। এমন একজন ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার মতো স্পর্শকাতর পদে অধিষ্ঠিত থাকতে পারেন কি না—এই প্রশ্ন এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

অনুসন্ধানে উঠে আসে রজার রহমান নামে খলিলুরের যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাসের এক বিস্তৃত রেকর্ড পাওয়া যায়। তিনি ১৯৯৮ সালের অক্টোবর থেকে নিউইয়র্কের স্কারসডেলের ২৯, ব্রেটন রোড ঠিকানায় স্বপরিবারে বসবাস করে আসছেন।

তার আরও অন্তত ১০টি ঠিকানা মিলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে—ম্যাসাচুসেটস, কানেকটিকাট ও মেরিল্যান্ডে। মার্কিন রেকর্ডে তার স্ত্রী হিসেবে উঠে এসেছে নুরুন নাহার রহমানের নাম, যিনি ফেসবুকে ‘সাথী’ নামে পরিচিত। তার বোন সেলিন রহমান নিউ ইয়র্কে বসবাসরত একজন স্নায়ুবিশেষজ্ঞ। খলিলুর রহমানের আরও অন্তত ১৩ জন আত্মীয় একই এলাকায় বাস করছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

‘রজার রহমান’ নামে পরিচালিত একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, যেখানে খলিলুর রহমান ও তার পরিবারের অসংখ্য ছবি রয়েছে, তা ২০ বছরের মার্কিন জীবন এবং পরিচয়ের অনেকখানি নিশ্চয়তা দেয়। ছবিতে স্ত্রীকে ‘সাথী’ নামে ট্যাগ করা হয়েছে, বন্ধুবান্ধবরা তাকে ‘খলিল ভাই’ ও ‘রজার ভাই’ উভয় নামেই ডাকছেন এবং কমেন্টের উত্তরে স্পষ্টতই দেখা যায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।

গুরুত্বপূর্ণ হলো- এই প্রোফাইলটি ২০২৪ সালে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ইস্যুতে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পাঁচ মাস আগে এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হওয়ার দশ মাস আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়।

একজন নাগরিক যদি বৈধভাবেই দ্বিতীয় দেশের নাগরিকত্ব অর্জন করেন, তবে তা প্রকাশে অসুবিধা থাকার কথা নয়। কিন্তু ২৬ বছর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস, ফেসবুকে পরিচয় লুকিয়ে রাখা এবং এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিষয়ে নীরবতা—সব মিলিয়ে বিষয়টি ঘনীভূত রহস্যের রূপ নিয়েছে। বিশ্লেষকদের প্রশ্ন, যদি সত্যিই রজার ও খলিল একই ব্যক্তি হন, তবে তার মতো একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির এই গোপনীয়তা কি রাষ্ট্রীয় স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা কাঠামোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ?

সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি ইতিমধ্যেই ‘টক অব দ্য টাউন’-এ পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থাকা কোনো ব্যক্তি যদি দ্বৈত নাগরিকত্ব গোপন করেন, তবে তা শুধু আইনি নয়, নৈতিকভাবেও প্রশ্নবিদ্ধ। আর এমন একজন ব্যক্তি যদি হয় জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা তাহলে রাষ্ট্রের জন্য তা আরো উদ্বেগ জনক বলে মনে করে সংশ্লিস্টরা।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১