বাংলা সিনেমা মাইকের প্রদর্শনী উপচে পড়া ভীড়
জুয়েল রাজ-

গতকাল, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, লন্ডনের জেনিসিস সিনেমা হলে বাংলা সিনেমা “মাইক” প্রদর্শিত হয়েছে। এটি একটি শিশুতোষ চলচ্চিত্র, যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে উপজীব্য করে নির্মিত। চলচ্চিত্রটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন এফ এম শাহীন ও হাসান জাফরুল বিপুল।
“মাইক” সিনেমাটি মুক্তির পর আন্তর্জাতিক পর্যায়েও প্রশংসিত হয়েছে। ২০২৪ সালে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত সুচিত্রা সেন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এটি শ্রেষ্ঠ শিশুতোষ চলচ্চিত্র হিসেবে পুরস্কৃত হয়। লন্ডনে ডায়াস্পারা ৭১ এর উদ্যেগে প্রদর্শিত হয়েছে সিনেমাটি।
মূলত ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যে ভাবে জয়বাংলা এবং বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ছিলেন সেই সময়ে , এক দল কিশোর কিভাবে সেই ভাষণ প্রচার করে মানুষের মাঝে প্রতিবাদের স্পৃহা জাগিয়ে তুলেছিল সেই উপজীব্য করেই নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে সৈয়দ এনাম স্বাগত বক্তব্যে বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা কামাল, কবি টিএম আহমেদ কায়সার, ড:রায়হান রশীদ ,সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শাহাব আহমেদ বাচ্চু, সাংবাদিক নিলুফা হাসান ও জুয়েল রাজ, সাংস্কৃতিক সংগঠক মান্না রায়, রানা মেহের, স্মৃতি আজাদ, জাহিদ মিয়া, চিত্রনির্মাতা ড গোলাম রাব্বানী, শিক্ষক সবিতা শামসাদ, কাউন্সিলর জেসমিন চৌধুরী , মিডিয়া ব্যক্তিত্ব উর্মী মাজহার, কামরুল আই রাসেল, প্রিন্টার নুর মোমেন, ইউকে আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, ইউকে আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো হরমুজ আলী, যুবলীগ নেতা জামাল খান ও সর্বইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আফজাল হোসেন সিদ্দিক মিয়াকে।
কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আজকের প্রদর্শনীর আর্থিক স্পনসর সেকুলার বাংলাদেশ মুভমেন্ট এর সভাপতি কাউন্সিলর পুষ্পিতা গুপ্তা, এডিএস ড্রাইভিং স্কুলের কর্ণধার অতিশ সাহা ও কেরিয়ার রিসার্চ সেন্টার এর কর্ণধার বিশিষ্ট সোসাল মিডিয়া ঈনফ্লুয়েন্সার সুশান্ত দাশগুপ্ত কে। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমাদের সকল মিডিয়া পার্টনার এবং আজকে যেসকল মিডিয়া প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়েছেন তাদের।
ব্রিটেনের শিশু কিশোর ও মুক্তিযুদ্ধাদের জন্য সিনেমাটি আমরা ফ্রি টিকেটের ব্যবস্থা করেছি। যাতে করে ব্রিটেনের নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও বর্তমান বাংলাদেশ নিয়ে ভাবতে পারে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম গৌরবময় ইতিহাসকে ধারণ করতে পারে, এই ভাবনা থেকেই এমন আয়োজন আমাদের।
দর্শক হিসাবে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে এসে ছিলেন সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী ঈসা খান রাশেদ , তিনি জানান আমি আমার সন্তানদের নিয়ে এসেছি গল্পের ছলে এই মাইক’-এর মাধ্যমে তারা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণসহ স্বাধীনতার ইতিহাস সহজ ভাবে বুঝতে পারে। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে ‘মাইক’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ও তিনি মনে করেন। হল ফেরত দর্শকরা এই সিনেমাটি অন্যান্য শহরে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করার ও আহবান জানিয়েছেন অনেকে।
আয়োজকদের অন্যতম একজন জামাল আহমেদ খান বলেন,মাইক সিনেমার মধ্য দিয়ে যে আওয়াজ বা বার্তা আমরা পৌঁছাতে চেয়েছি, সেই জয়বাংলা আওয়াজ টি আমরা ছড়িয়ে দিতে পেরেছি নতুন প্রজন্মের কাছে এইটাই আমাদের প্রাপ্তি।
যুক্তরাজ্যের দূর দূরান্তের বিভিন্ন শহর থেকে দর্শকেরা সিনেমাটি দেখতে আসেন। এবং বিষয় বস্তুর জন্য নির্মাতা ও প্রদর্শনীর আয়োজকদের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
লন্ডনের স্কুল শিক্ষক সবিতা শামসাদ তাঁর স্কুলের ১৩ জন ছাত্র ও ১৬ জন অভিভাবককে নিয়ে এসেছিলেন।তারা মাইক সিনেমা এবং সিনেমা হলের পরিবেশ উপভোগ করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী সবিতা বলেন আমি দেশপ্রেমিক। কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী নই, প্রবাসের নতুন প্রজম্মকে ইতিহাস ঐতিহ্যের সাথে যুক্ত করার প্রয়াস থেকেই তাদের নিয়ে আসা ।