যে বলেছে একবার জয় বাংলা,তার নামেই দাও মামলা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

কলমে- টিম বাংলাদেশ :

নাগরিক ক্ষোভ বলি,আর বিদেশী শক্তির মদদে চলা অরাজকতা বলি-বাংলাদেশে ২০২৪ এর জুলাই এর ৭ তারিখ থেকে শুরু করে আগস্টের ৭ তারিখ পর্যন্ত চলা লাগাতার নৈরাজ্যের প্রেক্ষিতে দেশ চলে যায় অনির্বাচিত অবৈধ সেনা সমর্থিত অন্তর্বর্তীকালীন এক ডামি সরকারের হাতে।দেশে যখন আইন আদালত বলতে কিছু নেই তখন অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে সেনাবাহিনীর আশ্রয়প্রার্থী হয়।সেনাপ্রধান ওয়াকার রাজশাহীর সেনানিবাসে দেয়া ১৩ আগস্ট মঙ্গলবারের বক্তব্যে বলেন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে অনেককেই আশ্রয় দেয়া হয়েছে।এ সংখ্যা সেনাপ্রধানের দেয়া তথ্যমতে ৬২৬ জন।এর মধ্যে আছেন রাজনৈতিক দলের নেতা,সরকারী আমলা,পুলিশ কর্মকর্তা।এর মধ্যে ৫১৫ জন ছিল পুলিশ সদস্য,যাদের মধ্যে ২৮ জন পুলিশ কর্মকর্তা।বিবিসি বাংলার রিপোর্ট অনুযায়ী আশ্র‍য়গ্রহীতাদের মধ্যে ৭ জন ছাড়া বাকী অনেকেই নিজের পরিবারের কাছে বা স্বজনদের কাছে প্রত্যাবর্তন করেছেন।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে যারা আগে থেকেই সেনা হেফাজতে ছিল,বা হাউজ এরেস্ট ছিল তাদের কেন বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেফতার করতে হলো বিবিধ স্ক্রিপ্ট লিখে?এ উত্তর দিতে পারবে স্ক্রিপ্ট রাইটিং এর এডিটিং প্যানেল।অনুমান করা যায়,যে সিভিল ক্যু’র পুরোটাই হয়েছে অনলাইন ভিত্তিক গুজবের উপর নির্ভর করে তারা সাদামাটা গ্রেফতার কাউকে করলে কিভাবে টিকটক,বা রিল তৈরীর উপাদান যাওয়া যাবে?কি দিয়ে মানিটাইজেশন পাবে পিনাকীরা!

তাই ৫ আগস্ট থেকে সেনা হেফাজতে থাকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ রাতারাতি পৌঁছে যান এয়ারপোর্টে ৬ আগস্ট, এজ ইফ উনি বিমান ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা করেছিলেন।হাছান মাহমুদকে নিয়ে রিল বানানোর সুযোগ হাতছাড়া হওয়াতে একেবারে হাম্বাদিক ইলিয়াসের দেয়া ভিডিও বার্তা অনুসরণ করে নাটকের স্ক্রিপ্ট সুন্দর করে লিখে গ্রেফতার দেখানো হয় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে।ইলিয়াস তার অনেক ভিডিওতে বলেছে যেন ধরতে পারলে সালমানের দাঁড়ি কেটে দেয়া হয়।অতএব সালমান সাহেবের দাঁড়ি কেটে পাট ভাঙা লুঙ্গি পরিয়ে সালমান ও আনিস কে গ্রেফতার করা হয় সদরঘাট থেকে। সালমানকে আদালতে জুনিয়র এক আইনজীবীকে দিয়ে চড়ও মারানো হয়।তারপর আল্লাহর মাল সেই আইনজীবীকে আল্লাহ বিকাল বেলা মোটর সাইকেল এক্সিডেন্টে নিজের কাছে ডেকে নেন।

সাবেক বিচারপতি মানিক ছিলেন নিজের বাসায়।তার পরিবার সাক্ষী তাকে বাসা থেকে গ্রেফতার করে বর্বর বিজেবির হাতে তুলে দিয়ে কানাইঘাট পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয় নাটক সাজানোর জন্য।বিচারপতি মানিক যেহেতু শিবির ও হিজবুতের এবং অন্যান্য জারজ ইসলামী দলগুলোর গায়েবি বাপ দেইল্যা রাজাকারের যুদ্ধাপরাধের মামলার প্রেক্ষিতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন রায় হিসেবে,তাই তার উপর তাদের জন্মের রাগ।বিচারপতি মানিককে সিলেটে আদালতে নিয়ে যাবে তা আগে থেকেই জানিয়ে দিয়ে পুলিশ মব রেডি রাখে,আদালত থেকে এক দফা পিটিয়ে এরপর কারাগারে কয়েদীদের হাতে আরেক দফা পিটিয়ে আইসিইউতে পাঠায়।সেখানে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে যখন তিনি তখন তার পরিবারকে নিয়ে যাওয়া হয় সিলেট,এখন তাকে ঢাকা আনার ব্যবস্থা করছে কারণ তিনি বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ।বিচারপতি মানিককে নিয়ে পিশাচ জেনজি অসংখ্য ভিডিও রিল টিকটক বানানোর সুযোগ পেয়েছে বিজিবি’র কল্যাণে।

আমাদের একটা ঐতিহ্য ছিল নারীদের গায়ে হাত না তোলা।বৈষম্যবিরোধী চ্ছাত্র আন্দোলনের ছমন্বয়করা এ ব্যাপারে কোন বৈষম্য নারী পুরুষে রাখেনি।দীপু মণি ছিলেন হাউজ এরেস্ট।তাকে না কি তার বোনের বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।যাই হোক নেটফ্লিক্সে দেখা সিরিজের গুগল ট্রান্সলেটর দিয়ে স্ক্রিপ্ট বাংলা করলে যা দাঁড়ায় আর কি! মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী গং সেভাবেই স্ক্রিপ্ট লেখে;দীপু মণিকে প্রথমে ব্যাডা পুলিশ দুই বগলের নীচে হাত ঢুকায়ে আদালতে নিয়ে যায়।সেখানে মবের হাতে তুলে দেয়।যথেষ্ট মাইরধোর খাওয়ার পর এবং রক্তপিপাসু নারীবিদ্বেষী নারীদেহলিপ্সু জেনজির জন্য ভিডিওর কন্টেন্ট তৈরী হলে তাকে আদালত থেকে রিমান্ডে পাঠায়।

কোন আসামী(!)র ই ঐতিহাসিক হত্যা মামলা লড়তে কোন আইনজীবী আদালতে আসতে পারেননি ক্রমাগত দেয়া হুমকির কারণে।হিজবুতের তৈরী মজলিশে শূরা এভাবে আইন আদালত সব ধ্বংস করে দেয়।

সাংবাদিক ফারজানা রূপা’র রিমান্ড চলবে কেয়ামত পর্যন্ত।তাকে শারীরিক নির্যাতন এমন করা হয়েছে যে সোজা হয়ে হাঁটতেই পারেন না।জ্বী,ভিডিও কন্টেন্ট জেনজিদের জন্য যথেষ্ট উৎপাদন করা হয়েছে রূপাকে নিয়ে।

টিপু মুনশি,সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তিনি ছিলেন তার উত্তরার বাসায় নজরবন্দী।তাকে গ্রেফতার করেছে গুলশানের কার বাসা থেকে যেন।এ মানুষকে নিয়ে তেমন ভিডিও এখনো বানানো যায় নাই।তবে প্রথম আলম পত্রিকার সিমু নাসের তার eআরকি পেইজ থেকে যথারীতি মিম বানিয়েছেন।

সিমু প্রথম আলমে,বউ দিয়া(তার বউয়ের নাম) ফেইসবুকে বাংলাদেশ অংশ দেখে সিঙ্গাপুর বসে-সিমুর বন্ধু আসিফ এন্তাজ রবি আমেরিকাতে ফেসবুকে চাকুরীরত আছে,সাথে আছে তার ব্যানারনিউজ ও প্রিয় আইয়ামে জাহেলিয়া অধ্যাপক আলী রিয়াজ মানে কম্বিনেশন একেবারে নাপাম বোমা।

টিপু মুনশিকে তার এলাকার মানুষজন দেবতা জ্ঞান করে এটা যদি রক্তপিপাসু কিশোর গ্যাং জেনজি ও তাদের হিজবুত আব্বোরা জানতো!

পলক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী,যে রাজশাহীর কোন কলেজ থেকে পাশ দেয়া,যার দাদা না বাবা কেডা যেন জামায়াত সে ৫ আগস্ট থেকেই সেনা হেফাজতে।বিমানবন্দর থেকে আটক করেছে এ মর্মে মিডিয়াতে খবরও আসে।আবার দেখলাম পলক,ছাত্রলীগের সৈকত ও ডেপুটি স্পিকার টুকুকে না কি খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।একই সাথে গ্রেফতার হওয়া লীগের মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মাহমুদের আর কোন খবর নেই।

সবচেয়ে করুণ কাজ করা হয়েছে ইসহাক আলী খান পান্নার সাথে-উনি ছিলেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তার বাড়ি পিরোজপুর। পিরোজপুর থেকে সাতক্ষীরার এদিকে সীমান্ত রেখে কেন শিলং মেঘালয়ের দিকে যাবেন উনি,কেউ এ যৌক্তিক প্রশ্ন একবারও করেনি।এখন মেঘালয় পুলিশ বলছে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।দুইদিন পর্যন্ত তার লাশ ফেলে রাখা হয়েছে খোলা আকাশের নীচে।তার মৃত্যুর নীচে আমাদের ম্যাধাবী দয়ামায়াহীন ফেসবুকযোদ্ধারা লিখেছে ‘আলহামদুলিল্লাহ’।

এ টিকটক রিলের তালিকার আছেন লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন,মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবি তাজুল ইসলাম,সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু,পর্যটন ও বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী রাশেদ খান,মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান,রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।

মামলার বন্যায় সব তথ্য অনুসরণ করা এক দুরূহ ব্যাপার-ইতিমধ্যে শুধু শেখ হাসিনার নামে হত্যা মামলা হয়েছে ১০১টি,আছে গণহত্যা ও অপহরণের মামলাও।

আদালতে বিচারাধীন ৪২ লাখ মামলার সাথে এ বছরের ৫ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত যুক্ত হয়েছে নতুন করে ২৬৮ টি মামলা।যার সবই আওয়ামী নেতা কর্মীদের নামে।এসব মামলায় নাম উল্লেখ করা হয়েছে ২৬ হাজার ২৬৪ জনের।অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে অন্তত ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫৫৫ জনকে।

আমাদের কাজ এ মুহূর্তে দর্শকের আর নিজেকে বলার ‘অস্থির হয়ো না/শুধু প্রস্তুত হও।এখন কান আর চোখ/খোলা রেখে/অনেক কিছু দেখে যাওয়ার সময়।/এ সময়ে/স্থির থাকতে না পারার/মানেই হল,আগুনে ঝাঁপ দেওয়া।তোমার কাজ/আগুনকে ভালোবেসে উন্মাদ হয়ে যাওয়া নয়,/আগুনকে ব্যবহার করতে শেখা।/অস্থির হয়ো না,/শুধু প্রস্তুত হও।-সাগ্নিক,বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়’

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০