ব্রিকলেন নিউজ
মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সার্বভৌম, প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান
মহান বিজয় উপলক্ষে শনিবার সন্ধ্যায় সেন্ট্রাল লন্ডনের এক হোটেলে বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন আয়োজিত বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা ও জাতীয় চার নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, “জাতির পিতা একটি প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, সমৃদ্ধ, শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন, যা আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করছেন।”
হাইকমিশনার মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সার্বভৌম, প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত ও যুক্তরাজ্যের সরকার, জনগণ এবং ব্রিটেনে প্রবাসি বাংলাদেশিদের ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি যুক্তরাজ্যের কমিউনিটিস, ডিপার্টমেন্ট অব লেবেলিং আপ ও হাউজিং মন্ত্রী ফেলিসিটি বোকান এমপি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের এবং যুক্তরাজ্যের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বহুমাত্রিক ও সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে বিগত দেড় দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসাধারণ নেতৃত্বে প্রশংসা করেন। তিনি ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত এবং বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্ক আরো গভীর হবে বলে দৃঢ় আশা প্রকাশ করেন।
যুক্তরাজ্যে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃতে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে সিঙ্গাপুরের মতো একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার জন্য বাংলাদেশের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।”
আলোচনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিসহ দেশে-বিদেশে সবাইকে সচেতন থাকার ও ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে প্রবাসি মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান বঙ্গবন্ধু ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে হাইকমিশনার অতিথি ও মিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রতীকী জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এরপর ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানের পর বঙ্গবন্ধু ও ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসর্গ করে ব্রিটিশ-বাংলাদেশ কমিউনিটির শিল্পীদের একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা সবাইকে মুগ্ধ করে। ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের ঐতিহাসিক ভুমিকা ও অবদানের ওপর এক বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনীরও আগত অতিথিদের অভিভূত করে।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে বসবাসকারি বীর মুক্তিযোদ্ধা, কূটনীতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ ব্রিটিশ-বাংলাদেশি ও ব্রিটিশ-ভারতীয় কমিউনিটির ছয় শতাধিক অতিথি অংশগ্রহন করেন।
সকালে হাইকমিশনার মিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে হাই কমিশনে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচির সূচনা করেন। এরপর দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার, শহিদ বুদ্ধিজীবী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী সকল শহিদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশের শান্তি ও অব্যাহত অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।