লন্ডনে সেন্টার ফর স্পোর্টস এন্ড কালচার এর অভিবাসন বিরোধ ও আমাদের করনীয় শীর্ষক গোলটেবিল

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
জুয়েল রাজ-
যুক্তরাজ্যে দিনে দিনে জোরালো হচ্ছে অভিবাসন বিরোধীতা। ডান পন্থার বিস্তারে বাড়ছে বর্ণবাদ।  অভিবাসন বিরোধী চলমান সময়ে ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের করণীয় শীর্ষক এক গোলটেবিল গত ২ নভেম্বর লন্ডনে মাইক্রো বিজনেস সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের পক্ষে,সঞ্চালক  হাসান রহমান আলোচনার শুরুতেই লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন,  যুক্তরাজ্যের অভিবাসী সম্প্রদায় আবারও এক অনিরাপদ ও উত্তপ্ত সময় অতিক্রম করছে। আমরা যেন এক বড় ধরনের অপঘাতের অপেক্ষায় আছি। এই দেশে আগামীর দিনগুলো আমাদের জন্য এবং আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য কঠিন হয়ে উঠতে পারে। তাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সক্রিয়ভাবে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন — যেমনটি একসময় করেছিলেন আমাদের অগ্রজরা। তবে সেটি সহিংসভাবে নয়, বরং কীভাবে অহিংসভাবে করা যায়, সে বিষয়ে আপনাদের পরামর্শ চাই।
চলতি বছর ১৩ সেপ্টেম্বর ‘Unite the Kingdom Rally’ নামে যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় র‍্যালি করেছে অতি ডানপন্থিরা। র‍্যালির জনসমুদ্র দেখে বোঝা যায় এই দেশের মূলধারার জনগোষ্ঠীর মানসিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। এটি অভিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য এক অশনি সংকেত। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইসলামোফোবিয়াও।
আমাদের অতি উৎসাহী জনগোষ্ঠী যেভাবে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের ধারণা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, তা আমাদের আরও অনিরাপদ করে তুলতে পারে। আমাদের আজকের অনুষ্ঠানে এবং আমাদের এই সমাজে অনেক জীবন্ত কিংবদন্তি আছেন, যাদের দীর্ঘদিনের চেষ্টায় একটি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান গড়ে উঠেছিল। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে বর্ণবাদ। যদিও একতরফাভাবে এই উত্থানকে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস বলে চালিয়ে দেওয়া যুক্তিসংগত নয়, তেমনি এর পেছনে মূলধারার সঙ্গে আমাদের সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং কিছু ক্ষেত্রে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতাকেও উপেক্ষা করা যায় না।
এন্টি-মুসলিম হামলা পর্যবেক্ষণ ও রিপোর্ট প্রকল্প ‘টেল মামা’-র জরিপ অনুযায়ী, ২০২৩–২০২৪ সালে মুসলিমবিরোধী হামলা ৭৩% বেড়েছে। এখন যে কোনো মুহূর্তে আমরা কেউই আক্রান্ত হতে পারি।
এমন পরিস্থিতিতে বড় কোনো দুর্ঘটনার জন্য অপেক্ষা না করে আমাদের সচেতন মহলের সামান্য উদ্যোগও বড় পরিবর্তন আনতে পারে। আমাদের মানুষদের আমরা কীভাবে এই সমাজের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে বলব, কীভাবে এই দেশের সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে চ্যালেঞ্জ না করে আমাদের মূল্যবোধ ধারণ করে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে পারব— সেই বিষয়ে ভাবা জরুরি।
আমাদের হাতে থাকা বিভিন্ন মাধ্যম (মিডিয়া) আমরা কীভাবে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ব্যবহার করতে পারি, তাও ভাবতে হবে।
আলোচনায় অংশ নেন,  সৈয়দ নাহাস পাশা, চ্যানেল এস ফাউন্ডার  মাহি ফেরদৌস জলিল, ব্রিটেনে  বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের  সংগঠক  মর্তুজা আলী, সিরাজ হক। সাংবাদিক
আহমেদ ময়েজ, মোয়াজ্জেম হোসেন, আ স ম মাসুম, জুয়েল রাজ, আনসার আহমেদ উল্লাহ, শহীদ রায়হান, সৈয়দ আনাস পাশা, আকরাম হোসেন, অরণী হক মল্লিক, আনোয়ারুল ইসলাম অভি, মাজহারুল ইসলাম সোহান, জয়দেব  রায়, জয়নাল চৌধুরী, একে আজাদ, আনিকা হক মল্লিক, কাউসার কৃষান প্রমূখ।
আলোচনায় উঠে আসে  ৮০ ‘র দশকের বর্ণবাদ আর বর্তমান বর্ণবাদ পুরোটাই ভীন্ন প্রেক্ষাপট । আন্তর্জাতিক ভাবেই বিশ্ব রাজনীতিতে  জাতীয়তাবাদ ও ডান পন্থার  বিস্তার ঘটেছে। ব্রিটেনে বাঙালি কমিউনিটির সমস্যা হচ্ছে নিজেদের কে মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন করে ধর্মীয় পরিচয়ে প্রতিষ্ঠা  করার প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তরুণ সমাজ মাল্টিকালচার সোসাইটি থেকে নিজেদের আলাদা করে নিচ্ছে। এর ফলে দুই পক্ষেই  অনিরাপদ বোধ করার প্রবণতা বাড়ছে। স্থানীয় রাজনীতি  ও বাংলাদেশী রাজনীতি ও ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত  করছে  বলে আলোচনায় উঠে আসে।
বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশী অভিবাসী  সংখ্যায় কম ছিল কিন্ত  ঐক্য ছিল বিশাল , বর্তমানে শত শত সংগঠন ,রাজনীতি সব মিলিয়ে ঐক্য নেই , কোন নেতৃত্ব ও নেই ,তরুণ সমাজ পরিচালিত হচ্ছে  ধর্মীয় আত্মপরিচয়ে।
আলোচনায়   উঠে আসে ,বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনে মূল ধারার ব্রিটিশরা পাশে দাঁড়িয়েছিল ,সহায়তা করেছিল বলেই অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছিল। পৃথিবীতে  উগ্রবাদের চেয়ে শান্তিপ্রিয় মানুষের সংখ্যা এখনো বেশী, তাই তাদের সাথে মেলবেন্ধন করতে হবে । তবেই বর্ণবাদ ও উগ্রপন্থা  মোকাবেলা করা সম্ভব।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০