প্রতিবাদে অভিবাসী বিশিষ্টজনদের বিবৃতি

নিউইয়র্ক : – বর্তমান দখলদার ইউনুস সরকারের নগ্ন সমর্থক
নিউইয়র্কের একটি বইমেলার আয়োজক মুক্তধারা ফাউণ্ডেশের
তিন কর্মকর্তা চরম মিথ্যাচারমূলক একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
ফাউণ্ডেশনের তিনজন কর্মকর্তা রোকেয়া হায়দার, ডা: জিয়াউদ্দিন
আহমদ ও বিশ্বজিত সাহা , ড: নুরুন নবীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হেয় করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। ড: নবী মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের প্রশ্ন দ্বিমত পোষণ করে ফাউণ্ডেশনের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করে কিছু ষ্পষ্ট কথা মিডিয়ায় বলার পরে তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে।
ড: নুরুন নবীর বিরুদ্ধে এহেন মিথ্যা অপপ্রচারের প্রেক্ষিতে, প্রতিবাদ করে বিবৃতি দিয়েছেন দেশ ও প্রবাসের বিশিষ্টজনেরা।
তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ডঃ নবী গত ৩৩ বছরের বইমেলার
প্রথমদিন থেকে মেলার সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি তিনটি বইমেলার আহ্বায়ক ছিলেন। একই সাথে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসনের দায়িত্ব কৃতিত্বের সাথে পালন করেছেন। ২০২৫ এর বইমেলাও তাঁরই
নেতৃত্বে হওয়ার কথা ছিল। এই বিষয়ে মেলা কমিটির সকল সদস্য একমত ছিলেন। তাঁকে সেই দায়িত্বও দেয়া হয়েছিল, সর্বসম্মতভাবে।
সিদ্ধান্ত ছিল, চলমান দখলদার সরকারের এই চরম
মবোক্রেসিকে সমর্থন করেন- এমন কেউ বইমেলার সাথে যুক্ত
হতে পারবেন না। কিন্তু এই সিদ্ধান্তকে চরম উপেক্ষা করে সাদাত
হোসাইন নামের একজন লেখককে এবারের বইমেলায় উদ্বোধকের দায়িত্ব দেয়া হয়, যিনি সরাসরি ইউনুস সরকারের ম্যাটিকিউলিয়াস
ডিজাইন প্ল্যানের দোসর ও বেনিফিশিয়ারি।
তারা বলেন, একটি জংলিবাদী রাজনৈতিক দলের ছাত্রসদস্য হিসেবে তার হাতেখড়ি।
মৌলবাদীরা মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ধারাবাহিকতা পাল্টে দেয়ার যে প্রজেক্ট নিয়েছিল- এই লেখক তার ফসল। এই কথিত লেখকের আসল রূপ বের হতে থাকে ২০১৮ থেকেই।
জুলাই সন্ত্রাসে এসে তিনি পুরো নেকাব খুলে রাজপথে নামেন।
কেমন ছিল তার জুলাই আগস্টের চেহারা?
এর প্রমাণ-স্বরূপ স্ক্রিনশট হিসেবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
দেশে ও বিদেশে অনেকেই এই লেখকের ঘৃণ্য প্রজেক্ট সম্পর্কে জ্ঞাত।
বিবৃতিদাতারা বলেন, ড: নুরুন নবী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি
রণাঙ্গণে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর ‘ব্রেন’ বলে খ্যাতিমান ছিলেন। এর
দলিলপত্র জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে সংরক্ষিত আছে। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অকুতোভয় সেনানী। ১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গঠিত ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটির’ উত্তর আমেরিকা চ্যাপ্টারের যৌথ আহ্বায়কের দায়িত্ব কৃতিত্বের সাথে পালন
করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখালেখির জন্য তিনি একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর লেখা গ্রন্থের সংখ্যা পঁচিশের অধিক। তিনি
বঙ্গবন্ধু পরিষদ- উত্তর আমেরিকার দীর্ঘকালীন সভাপতি।
না, তিনি সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য নন। তবে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা,অসাম্প্রদায়িক আদর্শ,জাতির পিতার নীতিমালা ও
ন্যায় ও সাম্যের বাংলাদেশের উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা তিনি।
বিবৃতিদাতারা বেদনার সাথে বলেন, ড: নবীকে একটি ‘রাজনৈতিক দল
পুনর্বাসনে সক্রিয়’- বলে যে বানোয়াট অপবাদ দেয়া হয়েছে, তা খুবই
নিম্ন রুচি ও হীন মানসিকতার পরিচায়ক। কারণ তাঁর সাথে যারা দীর্ঘদিন কাজ করেছেন- তাদের তাঁকে ভালো করে না চেনা- না জানার কথা নয়।
বিবৃতিতে সাক্ষরকারীরা বলেন, ০৫ আগস্ট ২০২৪ গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে গত নয় মাসে কী কী জঘন্য কর্মকাণ্ড করেছে, তা সকলেরই জানা। এরপরেও
এই সরকারকে সমর্থন করছেন বর্তমান মুক্তধারা বইমেলার কর্মকর্তারা। মনে রাখা দরকার, ১৯৯২ সালে এই বইমেলা যখন
‘বাঙালীর চেতনা মঞ্চ’ নামে একটি সংগঠনের মূল উদ্যোগে শুরু হয়,
তখন মুক্তধারা বইয়ের দোকানটিকে মূলত বইবিক্রির জন্য যুক্ত করা হয়েছিল। ওই সময়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল বিএনপি। ওই
প্রতিকূল সময়ে মূলত বাঙালী জাতীয়তাবাদ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধকে ধারণ করেই
বইমেলা যাত্রা শুরু করেছিল। সেখানে একক কোনো কৃ্তিত্ব মুক্তধারা
গ্রন্থবিতানের ছিল না।
সেই বইমেলা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়েই এগিয়েছে গত ৩৩ বছর। কিন্তু
দখলদার ইউনুস ক্ষমতায় আসার পরে যখন ৩২ নম্বর গুঁড়িয়ে দেয়া হলো, তখনও বইমেলার প্রায় সকলেই ছিলেন নীরব।
বিবৃতিদাতারা বলেন, যারা সরাসরি ‘ইউনুসের হাতকে শক্ত করুন’ বলে
উত্তর আমেরিকায় প্রকাশ্যে বক্তব্য দিচ্ছেন, মোর্চা গড়ছেন- তারা সরাসরি ইউনুসের রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়ে স্থানীয় কমিটির নেতা
হতে পারেন। তারা বইমেলাকে ইউনুসীয় মব সমর্থকদের হাতে তুলে দিয়েছেন কেন ? যদি ওই কথিত ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্রের কথাই
বলা হয়, তবে ওই গঠনতন্ত্রে তো কোনো জঘন্য মবোক্রেসি, খুন ধর্ষণ,
রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড কিংবা বাংলাদেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, শিল্পীদের কর্ম, মাজার, শহীদ বেদী- ভেঙে ফেলাকে সমর্থনের কথা
লেখা নেই।
বিবৃতিদাতারা ড: নুরুন নবীর বিরুদ্ধে সকল অশুভ অপপ্রচার বন্ধের আহ্বান জানান। তারা বলেন, যারা বিবৃতি দিয়ে ড: নবীকে হেয় করার
চেষ্টা করছেন- তাদের উচিত, তাঁর কাছে নিশর্ত ক্ষমা চেয়ে ইউনুসীয় সকল পরিকল্পনা বন্ধ করা। কারণ হীন এসব কর্ম তিরিশ লাখ শহীদের
আত্মাকে অবমাননার শামিল।
বিবৃতিদাতারা, আসন্ন ‘বঙ্গবন্ধু বইমেলা’ সফল করার জন্য অভিবাসী সবাইকে উদাত্ত আহ্বান জানান। তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের প্রশ্নে সকলের ঐক্যই আমাদের এগিয়ে নেবে সোনালী প্রজন্মের ভবিষ্যতের দিকে, দেশে ও প্রবাসে।
রাজনীতি,সাহিত্য,শিল্প,সঙ্গীত,সংস্কৃতি,শিক্ষা,চিকিৎসা,সমাজ ও বুদ্ধিবৃত্তিক স্ব স্ব ক্ষেত্রে সুপরিচিত বিশিষ্টজন-বিবৃতি দাতাদের মাঝে রয়েছেন-
ডঃ জিনাত নবী, তাজুল ইমাম, তাজুল মোহাম্মদ,
ডঃ এবিএম নাসির, রাফায়েত চৌধুরী, ডাঃ সেজান মাহমুদ,ডঃ দেলওয়ার আরিফ, মিথুন আহমেদ, লুৎফুন নাহার লতা, রানা হাসান মাহমুদ, ডঃ হাসান মামুন, ডঃ আতাউল করিম, সাফেদা বসু, ডঃ নাহিদ হাসান, স্বপ্না ইমাম,ফকির ইলিয়াস, দস্তগীর জাহাঙ্গীর,ডঃ দিলীপ নাথ, জি এইচ আরজু, স্বীকৃতি বড়ুয়া, দেলওয়ার এলাহী, মহসীন বখত,
মিনহাজ আহমেদ,ফারহানা ইলিয়াস তুলি, বাশিরুল হক, আল আমিন বাবু, আরিফা রহমান রুমা, গোপাল সান্যাল, ফারজানা রহমান শাওন, গোপন সাহা, সুতপা মণ্ডল,জাকারিয়া চৌধুরী,আব্দুল কাদের মিয়া, রওশন আরা নীপা, সাবিনা নীরু, এ্যানি ফেরদৌস, জাফর ফেরদৌস, তাহরীনা পারভীন প্রীতি, স্বপ্নীল ফিরোজ,মনজুর কাদের,মিলটোন আহমেদ,পংকজ তালুকদার, জুয়ানা চৌধুরী,পিনাকি তালুকদার,সৈয়দ আতিক, খালেদ সরফুদ্দীন, সিসিলিয়া মোরাল,আবু সাঈদ রতন, স্বাধীন মজুমদার, আনোয়ার সেলিম, কামাল হোসেন মিঠু, আসলাম আহমদ খান, স্মৃতি ভদ্র, বিলকিস রহমান দোলা, পারভীন সুলতানা, সেলিমা আশরাফ প্রমুখ ।