অনলাইন ডেস্ক-
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের একটি অংশের উদ্যোগে গত ফেব্রুয়ারিতে গঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস)। কিন্তু আট মাসের মাথায় বৃহস্পতিবার এই সংগঠন নাম পাল্টে হয়ে গেল ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’। জাতীয় ছাত্রশক্তি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সহযোগী সংগঠন হিসেবে কাজ করবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের পুনর্গঠন ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণবিষয়ক জাতীয় সম্মেলন হয়। সেখানে ছাত্রসংগঠনটির নতুন এই নাম ঘোষণা করেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ মাহমুদুর রহমান সৈকতের বোন সাবরিনা আক্তার সেবন্তি। তবে সংগঠনটির নতুন কোনো কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।
জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখসারির সমন্বয়কদের অনেকেই গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতা ছিলেন। অভ্যুত্থানের পর তাঁরাই এই সংগঠনের কার্যক্রম স্থগিত করে দেন। পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সমন্বয়কদের (ছাত্রশক্তির সাবেক) একটি অংশের উদ্যোগে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের যাত্রা শুরু হয়। এটি কার্যত এনসিপির ছাত্রসংগঠন হলেও এই পরিচয় দিতে তারা অস্বস্তি বোধ করত।
তবে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ছাত্রসংগঠন হিসেবে সেভাবে সাড়া ফেলতে পারেনি। সর্বশেষ গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে এই সংগঠনের ভরাডুবির পর সংগঠনটিকে পুনর্গঠনের আলোচনা শুরু হয়। এনসিপির পক্ষ থেকে সম্মেলন করে তাদের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। পাশাপাশি সংগঠনটিকে সরাসরি এনসিপির ছাত্রসংগঠন হিসেবে পরিচিত করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এনসিপির সেই পরামর্শেরই বাস্তবায়ন দেখা গেল বৃহস্পতিবার।
‘এনসিপি ভুল পথে গেলে ছাত্ররাই পথ দেখাবে’
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের পুনর্গঠন ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণবিষয়ক জাতীয় সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন এনসিপির অনেক নেতা। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলামকেও।
অনুষ্ঠানে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘এনসিপি যদি ভুল পথে যায়, ছাত্ররাই সঠিক পথ দেখাবে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন রাজনৈতিক দলের তাঁবেদারি না করে, তা নিশ্চিত করতে হবে।’
মানুষের আশা–আকাঙ্ক্ষা পূরণে ছাত্রদেরই এগিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, নতুন প্রজন্মই রাজনীতিতে পরিবর্তনের সূচনা করবে। দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, যারা লোভ সামলাতে পারে না, তাদের এনসিপির কোনো সংগঠনে প্রয়োজন নেই। গণতন্ত্রের যাত্রা দীর্ঘ। এই পথচলায় ছাত্ররাই দেশের মানুষের আশা–আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের শক্তি।



