রাধারমণ লোকসংগীত উৎসব

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

‘দেশে কৃতী শিল্পী তৈরির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান থাকে নিভৃতচারী গুণী শিল্পীদের। গ্রামগঞ্জে কিংবা মফস্‌সলে থাকা এই শিল্পীরাই আমাদের লোকসংস্কৃতির ধারক ও বাহক। তাই বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে এসব শিল্পীর কথা মনে রাখতে হবে। স্বীকার করতে হবে তাঁদের অবদান।’
রাধারমণ লোকসংগীত উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আলোচকদের বক্তব্যে উঠে আসে এসব কথা। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত মঞ্চে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ‘ত্রয়োদশতম রাধারমণ লোকসংগীত উৎসব’ উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এবারের উৎসবের মূল প্রতিপাদ্য ‘রাধারমণ কমপ্লেক্স নির্মাণ সময়ের দাবি’। প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রবীণ কীর্তনসংগীত শিল্পী সুবল চন্দ্র বসাক। রাজবাড়ী জেলার অশীতিপর এই গুণী শিল্পী কীর্তন পরিবেশন করেন। ধামাইল গানের জন্য বিশেষ খ্যাতি আছে তাঁর।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাট্যজন আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘আমরা ঢাকায় বসে বড় শিল্পীদের দেখি। সেই শিল্পী তৈরির পেছনে ভূমিকা থাকে নিভৃতে বসে থাকা গ্রাম-মফস্‌সলের গুণী শিল্পীদের।’ তিনি বলেন, রাধারমণ, লালন অথবা শাহ আবদুল করিমের গানের মূলভাব মানুষের প্রতি ভালোবাসা। সেই ভালোবাসা থেকে জন্ম হয় বহু কিছুর।

কতজন মানুষ আমাদের লোকসংস্কৃতিকে ধারণ করছে, সেই প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘সমাজ থেকে সুকুমারবৃত্তি এখন লোপ পাচ্ছে। শিশুরা আটকে যাচ্ছে বইয়ের ভারে। লোকসংস্কৃতি চর্চার জন্য এসব প্রসঙ্গ আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতিসচিব খলিল আহমদ জানান, রাধারমণ কমপ্লেক্স তৈরির প্রথম পরিকল্পনা এরই মধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। কাজের জন্য প্রকৌশলী ও স্থপতিদের সঙ্গে কথা হয়েছে। অবিলম্বে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

লোকসংগীত গবেষক ও রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, লোকগানের শিল্পীরা আভিজাত্যের মধ্যে থাকেন না। দেশের লোকগানের প্রবীণ শিল্পীদের তুলে আনা এ উৎসবের একটি উদ্দেশ্য। নাট্যজন এবং রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্রের সহসভাপতি ঝুনা চৌধুরী বলেন, প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করেও এমন আয়োজনের কারণ ঝড়কে জয়ের ইচ্ছা।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্রের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ সেলিম। তিনি বলেন, সম্প্রীতি সংস্কৃতির কথা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শিক্ষক, আবৃত্তিশিল্পী রূপা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ নয়, পুরো পৃথিবী রাধারমণকে চেনে তাঁর ধামাইল গানের জন্য।
প্রথম পর্বের আলোচনা শেষ হয় শিল্পী সুবল চন্দ্র বসাক ও তাঁর দলের কীর্তন দিয়ে। এরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক আয়োজন। প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে ছিল ভাটি অঞ্চলের ধামাইল গান আর সঙ্গে নৃত্য।

দুই দিনের এ উৎসবে রাধারমণ, সৈয়দ শাহানুর, দুর্বিন শাহ, শাহ আবদুল করিমসহ বাংলার লোকসংগীত ও বাউলগানের বরেণ্য শিল্পীদের গান পরিবেশন করছেন বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীরা। আজ শনিবার লোকগানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে রাধারমণ লোকসংগীত উৎসবের এ আয়োজন।

ভাটিবাংলার ধামাইল গানের জনক রাধারমণ দত্ত। সাধক, কবি ও বৈচিত্র্যময় সুরস্রষ্টা রাধারমণ রচনা করেছিলেন দুই হাজারের বেশি গান। তাঁর সেসব গান বাংলার লোকসংগীতের অমূল্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। ১৮৩৩ সালে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় জন্ম রাধারমণ দত্তের।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১