পরিকল্পনায় জড়িত আওয়ামী লীগ ও সাবেক শিবির নেতা
বিশেষ প্রতিবেদক:

নবীগঞ্জ উপজেলার জনপ্রিয় ও শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান নির্মলেন্দু দাশ রানা সম্প্রতি বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ১২ মে সোমবার,২০২৫ সিলেট শহরের লামাবাজার এলাকায় পরিকল্পিতভাবে চেয়ারম্যানের কাছে একটি সমস্যায় সহযোগিতা কামনা করে চেয়ারম্যানের বন্ধু বলে পরিচিত দুই ব্যক্তি মোস্তাক আহমেদ মিলু ও আবুল হোসেন জীবন। তারা সিলেট শহরের লামাবাজার এলাকায় ফাতেমা রেস্টুরেন্টে আসার জন্য চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানায়। সরল বিশ্বাসে সহযোগিতা পরায়ণ ও বন্ধুবৎসল চেয়ারম্যান রানা সেখানে উপস্থিত হওয়া মাত্রই ২০/২৫ জনের একদল সন্ত্রাসী তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে নির্মম হামলা চালায়।
যাতে করে মব হামলায় মৃত্যু হয়েছে বা গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রমাণ করা যায়।
কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, নবীগঞ্জ পৌর এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমেদ মিলু, গণঅধিকার পরিষদের নেতা ও হোটেল ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জীবন, এবং নবীগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি আহমেদ সাকিন (ইটালী প্রবাসী)—এই তিনজনের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনেরএকটি সন্ত্রাসী চক্র চেয়ারম্যান রানার ওপর পূর্বপরিকল্পিত হামলা চালায়। আহমেদ সাকিন ইতালিতে ইসলামী সংগঠনের সদস্য।
পূর্ব শত্রুতার রেশ ধরে দেশের এই মব জাস্টিজ এর সুযোগ গ্রহণ করে। একই ইউনিয়নের ছোট সাখোয়া (সর্দারপুর) গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান মো: ছাইম উদ্দিনের ছেলে মো: আদিল আহমেদকে টাকা দিয়ে দলে ভিড়ায়, কারণ এই আদিলের পিতা মো: ছাইম উদ্দিন বিগত নির্বাচনে চেয়ারম্যান রানার নিকট বিপুল ভোটে পরাজিত হয়। উল্লেখ্য যে, এই মো: আদিল সেই নির্বাচনে চেয়ারম্যান রানার শতভাগ জয়ের সম্ভাবনা দেখে ছোট সাখোয়া সেন্টারে অবৈধভাবে টেবিল কাস্ট করে তার পিতা মো: ছাইম উদ্দিনকে ভোট চুরির মাধ্যমে জেতানোর চেষ্টা করেছিল।
এ বিষয়টি চেয়ারম্যান রানার গোচরে আসার সাথে সাথে তিনি দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট এর নজরে বিষয়টি আনলে এই কর্মকর্তার তড়িৎ নির্দেশে বিজিপির স্পেশাল বাহিনী ঘটনাস্হলে পৌঁছে সাবেক চেয়ারম্যান মো: ছাইম উদ্দিনের ভোট চোর পুত্রকে তার দলবলসহ উত্তম মধ্যম দিয়ে সেন্টার থেকে বিতাড়িত করে এবং তাদেরকে আর এই সেন্টারে ঢুকতে দেয়নি বিজেপি সদস্যরা। ফলে চেয়ারম্যান রানা বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। তাই আদিল সেই প্রতিশোধ নিতেই আদিল ইটালি ফেরত জঙ্গি আহমেদ সাকিনের দলের সাথে এই জঙ্গি আক্রমণে অংশ নেয়। সেইসাথে আহমেদ সাকিন প্রচুর টাকা দিয়ে কিনে নেয় রানার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা বন্ধু মোস্তাক আহমদ মিলু ও গণপরিষদের নেতা আবুল হোসেন জীবনকে।
ইটালি থেকে দেশে ফিরেই এই সাবেক শিবির নেতা, মোস্তাক আহমেদ মিলু, আবুল হোসেন জীবন ও মো: আদিল আহমেদ এর সহযোগিতায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি নবীগঞ্জ এলাকার ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের প্রচুর টাকা দিয়ে দলে ভিড়ায়।মোস্তাক আহমেদ মিলু ও আবুল হোসেন জীবন , চেয়ারম্যান রানাকে ডেকে আনার পর এই হামলায় যেসব জঙ্গিরা সক্রিয় অংশ নেয় তারা হল ১. আহমেদ সাকিন (ইটালি প্রবাসী), পিতা: মো: গোলাপ মিয়া, গ্রাম: পূর্ব তিমিরপুর, নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ ২. আদিল আহমেদ, পিতা: ছাইম উদ্দিন, গ্রাম: সর্দারপুর, নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ ৩. মো: আলামিন ও ৪. মো: আফজাল, পিতা: আবুল কালাম আজাদ, ওসমানী রোড, নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ ৫. আব্দুল মুকিত, পিতা: আব্দুল মতিন, গ্রাম: জন্তরী, নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ ৬. মো: মোজাহিদুল ইসলাম জায়েদ, পিতা: মো: একলাস মিয়া, গ্রাম: কায়স্তগ্রাম, নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ ৭. আশায়িদ আলী আশা, ইনাতগঞ্জ, নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ সহ আরও ১২/১৪ জন সন্ত্রাসী যুবক।
দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকায় চেয়ারম্যান নির্মলেন্দু দাশ রানার উপর জঙ্গি আক্রমণ বিষয়ে গত মে ১৬, ২০২৫ সংখ্যায় খবর প্রকাশিত হবার পর চিহ্নিত জঙ্গি আহমেদ সাকিন তড়িগড়ি করে মে ১৭, ২০২৫ রাত ১০টার ঢাকা থেকে একটি ফ্লাইটে ইটালি চলে যায়। উল্লেখ্য ২০১৪ সালে এই সাকিন তৎকালীন সরকার বিরোধী মিছিলে , নবীগঞ্জে আওয়ামী লীগের হামলার শিকার হয়েছিল। সেই প্রতিশোধ নিতেই সে পরিকল্পনা করে হত্যার উদ্দেশ্য এই হামলা চালায়।
সেই সময় চেয়ারম্যান রানার আর্তচিৎকার শুনে টহলরত পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে সিলেট কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায়। মঙ্গলবার, মে ১৩, ২০২৫ বিকেলে পুলিশ চেয়ারম্যান রানাকে মিথ্যা সাজানো মামলায় সন্দেহভাজন আসামী দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠায়।
এই ঘটনায় নবীগঞ্জের জনসাধারণ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশে বিদেশে মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ৭নং করাগাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দাসহ পুরো উপজেলার জনগণ দ্রুত প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার এবং চেয়ারম্যান রানার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে।