কেউ ফিরে না খালি হাতে… 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

বাংলাদেশ হাইকমিশন লণ্ডনের বদলে যাওয়া 

জুয়েল রাজঃ
প্রবাসে যারা থাকেন,  কম বেশী সবার কাছেই বাংলাদের দূতাবাস গুলো হয়ে উঠে এক আতংকের নাম। কর্মকর্তা  কর্মাচারীদের প্রতি প্রবাসীদের অভিযোগের সীমা থাকেনা। এইটাই স্বাভবিক চিত্র। নানা জরুরী কাজে গিয়ে, ফিরে আসতে হয় খালি হাতে।
লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশন নিয়ে ও অন্ত  ছিল না অভিযোগের৷  তার কিছু সত্য কিছু মিথ্যা। কিন্ত অভিযোগ ছিল সবসময় ।
 লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনের সামনে খুব পরিচিত চিত্র  এটি ত্রাণের লাইনের মত দীর্ঘ লাইন থাকত প্রবাসীদের।
কিন্ত কোবিডের পর  ম্যাজিকের মতো বদলে গেছে হাই কমিশনের চিত্র।
 দূতাবাসের সামনে নেই কোন জটলা, যিনিই দূতাবাসে যাচ্ছেন হাসি মুখে সেবা  নিয়ে ফিরছেন। হাই কমিশনে  সব চেয়ে বেশী ভীড় হয় পাসপোর্ট শাখায়। সরকারী হিসাব মতেই ৭ লাখ বাংলাদেশী আছেন ব্রিটেনে এবং বাংলাদেশে যেতে নো ভিসা রিকোয়ার্মেন্ট বা এনভিআর এর চাহিদা সবচেয়ে বেশী।  এবং অভিযোগের পাল্লা ও এই শাখায় ভারী। কিন্ত সেখানে ও লেগেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া।  হাই কমিশনের পক্ষ থেকে যুক্তরাজ্যের বাংলা সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানিয়ে,  হাই কমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম সাংবাদিকদের দেখালেন,  লন্ডনে হাই কমিশনের বদলে যাওয়ার সেই গল্প।
কোবিডের দীর্ঘ দুই বছরের জট খোলার পর হাই কমিশনের দম ফেলার ফুরসত  নেই। অনলাইনে বুকিং করার  কোন ফাঁকা শিডিউল নেই। বুকিং ক্ষমতার তিন থেকে চারগুণ মানুষ ভীড় করছেন হাই কমিশনে,   যারা এপয়েনমেন্ট করে যান নি তারাও  তাৎক্ষনিকভাবে সেবা পাচ্ছেন।  প্রবাসীদের সংকট আর বিড়ম্বনার ব্যখ্যা চাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই সব সমস্যার সমাধান করে দিচ্ছেন হাই কমিশনার নিজে। তবে যারা এতো দিন বলেছিলেন অনলাইনে এপয়ন্টমেন্ট পাচ্ছেন না, তারা টিকেটের কপি সহ হাই কমিশনে গেলে তাৎক্ষনিকভাবে সেবা পাবেন বলেও জানিয়েছেন হাই কমিশনার। হাই কমিশনার বলেছেন একজন ব্যক্তিও হাই কমিশনে গেলে সেবা ছাড়া ফিরবেন না, দূতাবাসের কর্মকর্তারা এই পাসপোর্ট জট কমাতে রাত ১১ টা পর্যন্ত কাজ করছেন। হাই কমিশনের ফেইসবুক পেইজে ও দূতাবাসের অভিযোগ বক্সে অভিযোগ দিলে সেই অভিযোগ আমলে নেবেন তারা। কন্সুলার সার্ভিস জানিয়েছে গত এক মাসে ৫ হাজার নো ভিসার আবেদন জমা পড়েছে হাই কমিশন লন্ডনে যেটি গত বছর এই সময়ে ছিলো মাত্র ১২ শ। বিশাল এই পাসপোর্ট জট কমাতে পাসপোর্ট শাখায় লোকবল বাড়ানোর কথাও জানালেন তিনি।
হাই কমিশনের ইতিহাসে  একমাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক  নো ভিসা প্রদান করেছে গত অক্টোবর মাসে,  প্রায় ৪ হাজার,  নভেম্বর মাসে তার  পরিমাণ  ইতমধ্যে আরাও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে  জানিয়েছেন দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা   ফার্স্ট  সেক্রেটারি  এ যেড এম শরীফ  হোসাইন।
প্রচন্ড শীতের দেশে, বৃষ্টি, স্নো, ঠান্ডা বাতাস সঙ্গী  করে প্রবাসীরা দাঁড়িয়ে থাকতেন, সেই দুর্দশা ও কাটিয়ে উঠেছে হাই কমিশন। হাই কমিশনার বলেন,  লোকজন যখন লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকত, আমি মাথা নীচু করে আমার অফিসে ঢুকতাম। সামান্য বসার জায়গা দেয়ার সুযোগ ছিল না আমার।সেবার মান বাড়াতে হাই কমিশনের লাগোয়া বিল্ডিং এর নীচতলার লিজ ক্রয় করেছে বাংলাদেশ হাই কমিশন,  নতুন এবং পুরাতন উভয় ভবনেই করা হয়েছে  সেবা নিতে আসা প্রবাসীদের বসার ব্যবস্থা।
পাশাপাশি দীর্ঘদিন পর, গতকাল শনিবার থেকে বাঙালি অধ্যুষিত  পূর্ব লন্ডনে শুরুব হয়েছে কনস্যুলার  সেবা।   পূর্ব লন্ডনে বাংলাদেশ  ওয়েলফেয়ার অফিস থেকে এই সেবা শুরু হয়েছে।  হাই কমিশনের ওয়েলফেয়ার  শাখা প্রায় চারশত সেবা দিয়েছে যেখানে প্রবাসীদের উপর মামলা হামলা, জমি দখল সহ, দেশে নিয়ে গিয়ে জোর পূর্বক বাল্যবিবাহ  রোধের ঘটনা ও আছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা  দেওয়ান মাহামুদুল হক। হাই কমিশনে উদ্ভোধন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু  লাইব্রেরী। মুক্তিযুদ্ধের অনন্য দলিল সমূহ সেখানে রাখা হয়েছে, আছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত বই সমূহ,  সবার জন্য উন্মুক্ত  রাখা হয়েছে সেই লাইব্রেরী।  কেউ যদি মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু  নিয়ে গবেষণা করতে চান,  এই লাইব্রেরীতে সেটি করতে পারবেন।
সেবা না পেয়ে কেউ খালি হাতে ফিরবে না এই নীতি নিয়েই নতুন ভাবে জেগে উঠেছে লন্ডন হাই কমিশন।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭৩০