নবাবী বাংলা ফেরতের দাবী
প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪– গত ১৬ ডিসেম্বর সোমবার মহানবিজয় দিবস উদযাপন ও যুক্তরাজ্যে ‘অখন্ড বাংলাদেশ আন্দোলন’এর ২১তম বর্ষপূর্তি এবং বাংলাদেশে ‘অখন্ড বাংলাদেশ আন্দোলন’এর ২৬তম বর্ষপূর্তি পালন করেছে আন্দোলনের সাথে জড়িতরা।
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ‘অখন্ড বাংলাদেশআন্দোলন‘ এর ২৭ শহীদসহ সকল শহীদ ও আহতদের সম্মানেএবছর জাঁকজমকপূর্ণ কোনো আয়োজন করা হয়নি। তবে সোমবারদিনটি তাৎপর্যপূর্ণভাবে স্বরণীয় করে রাখতে সংগঠনের পক্ষ থেকেঅসুস্থ গরীব মানুষকে মেডিক্যাল সহায়তা এবং গরীব, অসহায় ওদুস্থ্যদের মাঝে খাবার ও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। এছাড়া সংগঠনেরছাত্র সমন্বয়করা কেক কেটে ও শহীদ মিনারে সংগঠনের পক্ষেপুস্পস্তবক অর্পণ করে পালন করেন যুক্তরাজ্যে ২১তম ও বাংলাদেশে২৬তম বর্ষপূর্তি।
দুর্ধর্ষ, অসীম সাহসী, আত্মবিশ্বাসী এবং স্বপ্নদর্শী বাঙালি ওবাংলাদেশিদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের নাম ‘অখন্ড বাংলাদেশআন্দোলন‘। গত ১৬ বছর দেশের কুচক্রি মহল দিল্লির শাসকদেরসঙ্গে হাত মিলিয়ে এই আন্দোলনকে বন্ধ করে দেওয়ার চক্রান্তকরেছিল৷ কিন্তু আন্দোলন বন্ধ হয়নি, বরং আন্দোলন আরো বেগবানহয়েছে। হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত এই আন্দোলন ছড়িয়েগেছে। প্রতিদিন বাঙালি ও বাংলাদেশিরা এই আন্দোলনের সাথে যুক্তহচ্ছেন।
এ উপলক্ষ্যে ‘অখন্ড বাংলাদেশ আন্দোলন’ এর আহবায়ক হাসনাতআরিয়ান খান বলেন, ‘অখন্ড বাংলাদেশ‘ হওয়া উচিত প্রত্যেকবাঙালির স্বপ্ন। বাঙালির নিশ্চিত প্রতিরক্ষার জন্যই এই বিপ্লবটাআজ বড় বেশি প্রয়োজন। হিমালয়ের দক্ষিণ পাদদেশ থেকেবঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত নদীময় ভূমি ‘গ্রেট বেঙ্গল‘ নামে সারা বিশ্বেপরিচিত। আসুন সমগ্র বাংলা অঞ্চলকে বাংলাদেশের সাথে অন্তর্ভূক্তকরে ‘অখন্ড বাংলাদেশ‘ বাস্তবায়নে আন্দোলনে নামি। নিজে দেশেরপাশাপাশি বিদেশেও জনমত গড়ে তুলি। আসুন আমরা সমস্বরেআওয়াজ তুলি। মানবাধীকারের প্রথম শর্ত আমাদের রাষ্ট্র উদ্ধারকরা। রাষ্ট্র উদ্ধার করতে না পারলে আমাদের মানবাধীকার থাকবেনা। কেন্দ্রীয় বাংলা বলতে আজ বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গবোঝালেও প্রান্তিক বাংলা—ত্রিপুরা, আসাম, আন্দামান, আরাকান, বিহার, থেকে উড়িষ্যা পর্যন্ত বিস্তৃত। পরবর্তীতে বিহার ভেঙ্গে ঝাড়খন্ডপ্রদেশ ও উড়িষ্যা ভেঙ্গে ছত্তিসগড় প্রদেশ এবং আসাম ভেঙ্গেমেঘালয়, মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড আর অরুণাচল প্রদেশতৈরি করা হলেও এই পুরো অঞ্চলেই বাঙালি এবং বাঙালিদেরকাছাকাছি নৃ–গোষ্ঠীর লোকেরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাস করেন। এআমাদের নবাবি বাংলা, শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ’র বাংলা, সিরাজ–উদ–দৌলা’র বাংলা। এ আমাদের বাংলা সালতানাতের ভূমি। নৃ–বিজ্ঞান এবং জেনেটিক সায়েন্সের তথ্য–প্রমাণ মতে বাঙালি সনাতন, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ এবং ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা আমরা একই জনগোষ্ঠীরলোক, একই রক্তের একই পূর্বপুরুষের বংশধর। অনিবার্যভাবেই এঅঞ্চল আমাদের ঠিকানা। নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায়, দেশেরজনগণের অধিকার রক্ষায় আমরা কোনো ছাড় দেব না। আমারআত্মবিশ্বাস আছে, ‘অখন্ড বাংলাদেশ‘ বাস্তবায়িত হলে পৃথিবীর বুকেএকটি মৌলিক ও উন্নত সংস্কৃতিবান জাতির উদ্ভব হবে, যারাএশিয়াসহ সমগ্র পৃথিবীর নেতৃত্ব দিবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনিবলেন, বাংলাদেশের খন্ডিত অংশের নাগরিকেরা বাংলাদেশকেভালোবেসে বাংলাদেশের সাথে মিশে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশকরলে আপত্তি করবে কে? আমাদের পূর্ব পুরুষেরা দিল্লি সালতানাতথেকে বেরিয়ে এসেছে; ব্রিটিশ কলোনি ধংস করেছে; পাকিস্তানীকলোনি ভেঙ্গে দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশকে ক্রমশ:ই কলোনিতেপরিণত করা ইন্ডিয়াকে আজকের আমাদের প্রজন্ম বরদাস্ত করেকিভাবে! বাংলাদেশের স্রষ্টা হচ্ছে বাঙ্গালি তারুণ্য। এটি ইতিহাস।তাই বাংলাদেশকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করতে তারুণ্যকে এগিয়ে আসতেহবে। কে আছ জোয়ান, হও আগুয়ান।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘অখন্ড বাংলাদেশ আন্দোলন’ এর সাথেজড়িতদের পোস্টে এদিন একটি কাঙ্ক্ষিত মানচিত্র এবং বৈষম্যহীনসমাজ না পাওয়ার বেদনা প্রকাশিত হয়েছে। আন্দোলনকারীরাকাঙ্ক্ষিত সেই মানচিত্র অর্জনে সহিংস হওয়ার কোনো আহবানজানাননি। ভাষাগত বন্ধন এবং মানুষে–মানুষে সাংস্কৃতিক বন্ধন সৃষ্টিকরে আপন করে নেয়ার তাড়না ছিল তাদের পোস্টে।
উল্লেখ্য, নব্বইয়ের দশক থেকে ‘অখন্ড বাংলাদেশ আন্দোলন’নবাবীবাংলা, শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ’র বাংলা ফেরত পেতে আন্দোলনকরছে। বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, আন্দামান, আরাকান, মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল, বিহার, ঝাড়খন্ড, সিকিম, উড়িষ্যা ও ছত্তিসগড়সহ বাংলা বলয়ের সকলবাংলাভাষীর জন্য একটি অখন্ড বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় কাজকরছে। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, আন্দামান, মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল, সিকিম, বিহার, ঝাড়খন্ড, উড়িষ্যা ওছত্তিসগড়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ গণভোটের আয়োজন করেদিল্লীর শাসকদের কাছে একটা শান্তিপূর্ণ সমাধান কামনা করছে। এলক্ষ্যে তারা দেশ–বিদেশে জনমত সংগঠিত করছে।