যে কারণে খুন হলেন প্রবাসীর স্ত্রী জোসনা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

ব্রিকলেন নিউজঃ সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরশহরের মির্জা আব্দুল মতিন মার্কেটের ‘অভি মেডিকেল হলে’ প্রবাসীর স্ত্রীকে ৬ খন্ড করে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এ বিষয়ে শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশের এ বিশেষ বাহিনীটি। দুপুরে সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ দেন সিআইডির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।

কেন এবং কিভাবে হত্যা করা হয়েছিল সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের প্রবাসীর স্ত্রী শাহনাজ পারভীন জোসনাকে- সেই তথ্য বের করার পাশাপাশি তিন জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয় ‘অভি মেডিকেল হল’ নামের ফার্মেসির মালিক জিতেশ চন্দ্র গোপ, তার বন্ধু অনজিৎ চন্দ্র গোপ ও অসিত চন্দ্র গোপকে।

সিআইডি জানায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থানার পৌর এলাকার ব্যারিস্টার আবদুল মতিন মার্কেটের অভি মেডিকেল হল নামের একটি ওষুধের দোকান থেকে শাহনাজ পারভীন জোসনার ছয় টুকরো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জোসনা জগন্নাথপুর থানার নারকেলতলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী ছরকু মিয়ার স্ত্রী।

এ ঘটনায় ওইদিনই নিহতের ভাই হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলানম্বর-০৮/১৫ শাহনাজ জোসনা ২০১৩ সাল থেকে জগন্নাথপুর পৌর শহরে নিজের বাসায় দুই ছেলে, এক মেয়ে, বৃদ্ধা মা ও ভাই-বোনদেরকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে মুক্তা ধর জানান, ওষুধপত্র কেনার সুবাদে অভি মেডিকেল হলের মালিক জিতেশের সাথে জোসনার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। জোসনা কিছুদিন ধরে গোপন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি জিতেশ জোসনার মায়ের প্রেশার মাপার জন্য তাদের বাড়িতে যান। তখন জোসনা তার গোপন সমস্যার কথা জিতেশকে জানালে তিনি তাকে দোকানে যেতে বলেন। ওইদিন বিকালে জোসনা জিতেশের দোকানে গেলে তাকে দোকানে কাস্টমার রয়েছে বলে অপেক্ষা করতে বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন।

মুক্তা ধর আরও জানান, অনেক রাত হলে বাসায় যাওয়ার জন্য জোসনার অস্থিরতা বেড়ে যায়। তখন ওই ফার্মেসির মধ্যে তাকে একটি ঘুমের ওষুধ খেতে দেন জিতেশ। এতে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন জোসনা। তখন জিতেশ, তার দুই বন্ধু অনজিৎ এবং অসীত গোপ তাকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করেন। জিতেশ তার ফার্মেসিতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার কক্ষে জোসনাকে বসিয়ে রাখেন। সেখানে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লে তাকে ঘরে রেখে ফার্মেসির তালা বন্ধ করে বাইরে চলে যান জিতেশ।

এরপর রাত গভীর হলে আশেপাশের দোকান যখন বন্ধ হয়ে যায় তখন জিতেশ ও তার দুই বন্ধু ফার্মের্সি খুলে এনার্জি ড্রিংকস পান করে ধর্ষণ করেন।

বিষয়টি শাহনাজ তার পরিবারকে জানিয়ে দেবেন বললে জিতেশ ও তার বন্ধুরা তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং মুখে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে ওই ফার্মেসিতে থাকা ফল কাটার ছুরি দিয়ে লাশটি দুই হাত, দুই পা এবং বুক পেটসহ ছয়টি টুকরা করেন। এরপর দোকানে থাকা ওষুধের কার্টুন দিয়ে খণ্ডিত অংশগুলো ঢেকে রেখে ফার্মসিতে তালা লাগিয়ে চলে যান। পরে খণ্ডিত লাশ পাশের একটি মাছের খামারে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু ভোর হয়ে যাওয়ায় এবং লোকজন চলে আসায় তারা সেই কাজটি করতে পারেননি।

সংবাদ সম্মেলনে মুক্তাধর বলেন, ‘এই ঘটনার পর সিআইডির এলআইসি শাখার একাধিক দল আসামি গ্রেপ্তারের জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায়। শুক্রবার রাজধানীর ভাটারা থানার নুরেরচালা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জিতেশকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর জগন্নাথপুর থানার পৌর এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় অনজিৎ এবং অসীত গোপকে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin

আরো পড়ুন

সর্বশেষ খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০